এডিবির সহযোগিতা চাইলেন- প্রধানমন্ত্রী
বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদক ঢাকাঃ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (অপারেশনস-১) শিঝিন চেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এ অনুরোধ জানান। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ করে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও জ্বালানির ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য এডিবির সহায়তা কামনা করেন।
এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং এডিবি বাংলাদেশের পাশে থাকবে। এ দেশের গ্রামীণ ও নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন।’
তিনি আরও বলেন, এডিবি আশা করছে বাংলাদেশ জিডিপিতে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রশংসা করে শিঝিন চেন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে (উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে) যা সাধারণত একটু জটিল। কিন্তু বাংলাদেশ ভালো করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং দেশবাসী দুই বছর পর এবার অবাধে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী মহামারির সময়ে এডিবির সহযোগিতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নীত হওয়ার কারণে ক্রান্তিকাল সম্পর্কে তিনি বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার এখন দেশের গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে উন্নত ও সুন্দর জীবন দেওয়ার লক্ষ্যে জমিসহ বাড়ি দিচ্ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারে বলে এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্টের অনুমানের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার আরও বেশি খাদ্য উৎপাদনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের আইসিটি খাতের উন্নয়ন হচ্ছে।
আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে দরজা খুলে দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর যেসব রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেগুলো আবার চালু করা হচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নে আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য এডিবির শীর্ষ ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনে বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রত্যাশা করেন।
এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ অন্যতম সেরা উদাহরণ স্থাপন করেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কৃষি খাতেও ব্যাপক উন্নয়ন করেছে।
শিঝিন চেন আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশে যেসব বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপিত হচ্ছে, তা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা পূরণ করবে।
তিনি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বাংলাদেশকে সাহায্য করতে এডিবির আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্পাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।
এছাড়া এডিবি ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (সাউথ এশিয়ান ডিপার্টমেন্ট) মনমোহন পরকাশ এবং বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং উপস্থিত ছিলেন।