রবিবার, ৮ মে ২০২২
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বাংলাদেশে চিংড়ি, ঘন চিনিসহ ২৬ শ্রেণির পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ
বাংলাদেশে চিংড়ি, ঘন চিনিসহ ২৬ শ্রেণির পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকাঃ সরকার ২০২১-২৪ সালের তিন বছর মেয়াদি আমদানি নীতি আদেশ জারি করেছে। নতুন আমদানি নীতিতে চিংড়ি, ঘন চিনি, কৃত্রিম সরিষার তেল, ক্যাসিনো সামগ্রীসহ ২৬ শ্রেণির পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নতুন এই আমদানি নীতি আদেশের প্রজ্ঞাপন জারি করে। বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে আমদানি নীতি আদেশ অনুসরণ করতে হয়।
আমদানি নিষিদ্ধ পণ্যগুলো হলো: বাংলাদেশ সার্ভে ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক প্রকাশিত মানচিত্র অনুযায়ী বাংলাদেশের সীমারেখা দেখানো হয় নাই এমন মানচিত্র, চার্ট ও ভৌগোলিক গ্লোব; হরর কমিকস, অশ্লীল ও নাশকতামূলক সাহিত্য ও অনুরূপ ধরনের পুস্তিকা, সংবাদপত্র, সাময়িকী, পোস্টার, ফটো, ফিল্ম, গ্রামোফোন রেকর্ড, অডিও ও ভিডিও ক্যাসেট, টেপ ইত্যাদি, যার বিষয়সমূহ বাংলাদেশের যে কোনো শ্রেণির নাগরিকের ধর্মীয় বিশ্বাস অথবা অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে; এই আদেশে ভিন্নরূপ বিধান না থাকলে, সেকেন্ডারি বা সাব-স্ট্যান্ডার্ডস কোয়ালিটি বা নিম্নমানের পণ্য অথবা পুরাতন, ব্যবহৃত, পুন:সংস্কৃত (রিকন্ডিশন্ড) পণ্য অথবা কারখানায় বাতিলকৃত বা জবলট ও স্টক লটের পণ্য।
রিকন্ডিশন্ড অফিস ইকুইপমেন্ট, ফটোকপিয়ার, টাইপরাইটার মেশিন, টেলেক্স, ফোন, ফ্যাক্স,পুরাতন কম্পিউটার, পুরাতন কম্পিউটার সামগ্রী, পুরাতন ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী; এইরূপ পণ্যাদি ও তার পেটিকা যাতে কোনো ধর্মীয় গুঢ়ার্থ সম্পর্কীয় এমন কোনো শব্দ বা উৎকীর্ণ লিপি আছে যার ব্যবহার বা বিবরণ বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের ধর্মীয় বিশ্বাস বা অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে। এমন পণ্যসামগ্রী ও তার পেটিকা যাতে অশ্লীল ছবি, লিখন বা উৎকীর্ণ লিপি অথবা এই জাতীয় দৃশ্যমান নিদর্শন বিদ্যমান আছে; এই আদেশে ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে জীবিত শুকর এবং শুকরজাত সকল ধরনের পণ্য।
সকল প্রকার শিল্প স্লাজ ও স্লাজ দ্বারা প্রস্তুতকৃত সার এবং যে কোনো সামগ্রী; এই আদেশে ভিন্নরূপ বিধান না থাকলে, সকল প্রকার বর্জ্য পদার্থ; শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০০৬ এর আওতায় শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে ১০০ (একশত) ডেসিবল মাত্রার অধিকমাত্রার হর্ণ; Stockholm Convention on Persistent Organic Pollutants (POPs) এর আওতায় নিম্নবর্ণিত রাসায়নিক কীটনাশক এবং শিল্পজাত রাসায়নিক পণ্য—এলড্রিন, ক্লোরডেন, ডিডিটি, ডাইএলড্রিন, এনড্রিন, হেপ্টাক্লোর, মিরেক্স, টক্সাফেন, হেক্সাক্লোরোবেনজিন, পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল (পিসিবি)।
ক্যাসিনোসহ জুয়া খেলার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, সরঞ্জাম ইত্যাদি; চিংড়ি মাছ (এইচএস হেডিং ০৩.০৬ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড); পপি সীড ও পোস্ত দানা (এইচএস হেডিং ১২.০৭ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড) (মসলা হিসাবে অথবা অন্য কোনোভাবেও ব্যবহার্য পোস্ত দানা); ঘাস (এনড্রোপোজেন এসপিপি) ও ভাং (ক্যানাবিস সাটিভা) (এইচএস হেডিং ১২.১১ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড); ওয়াইন লিজ, আরগোল (এইচএস হেডিং ২৩.০৭ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড); লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি), লিকুইফাইড প্রপ্রেন ও বিউটেনস (যা এলপিজি’র অংশ) ব্যতীত পেট্রোলিয়াম গ্যাস এবং অন্যান্য গ্যাসীয় হাইড্রোকার্বন (এইচএস হেডিং ২৭.১১ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড); পেট্রোলিয়াম কোক এবং পেট্রোলিয়াম বিটুমিন ব্যতীত পেট্রোলিয়াম তৈলের রেসিডিউ সমূহসহ সকল পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ (এইচএস হেডিং ২৭.১৩ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড)।
এছাড়া ঘন চিনি (এইচএস হেডিং ২৯.২৯ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড); কৃত্রিম সরিষার তৈল (অ্যালাইল আইসোথায়ো সায়োনেট) (এইচএস হেডিং ২৯.৩০ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড); পলিপ্রাপোইলিন ব্যাগ ও পলিইথিলিন ব্যাগ (এইচএস হেডিং ৩৯.২৩ ও ৬৩.০৫ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড); থ্রি হুইলার যানবাহনের (টেম্পু, অটোরিক্সা ইত্যাদি) দুই স্ট্রোক ইঞ্জিনসহ চেসিস (এইচএস হেডিং ৮৪.০৮ এর এইচএস কোড ৮৪০৮.৯০ তে শ্রেণিবিন্যাসযোগ্য); দুই স্ট্রোক ইঞ্জিনবিশিষ্ট থ্রি হুইলার যানবাহন (টেম্পু, অটোরিক্সা ইত্যাদি) (এইচএস হেডিং ৮৭.০৩ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড); গ্যাস সিরিঞ্জ (এইচএস হেডিং ৯০.১৮ এর সংশ্লিষ্ট সকল এইচএস কোড); এবং পুরাতন বা ব্যবহৃত মোটরসাইকেল।নীতিতে আরও বলা হয়েছ, নতুন আমদানি নীতি আদেশে শর্ত সাপেক্ষে কিছু পণ্য আমদানির কথা বলা হয়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে ফার্নেস অয়েল, সাড়ে ৪ সেন্টিমিটারের কম ব্যাস বা দৈর্ঘ্যের মাছ ধরার কারেন্ট জাল, পাঁচ বছরের পুরোনো অধিক গাড়ি আমদানি, তিন বছরের বেশি পুরনো ও ১৬৫ সিসির ঊর্ধ্বে সব ধরনের মোটরসাইকেলসহ এলএনজি ও লিকুইফাইড প্রপেন ও বিউটেনস ছাড়া পেট্রোলিয়াম গ্যাস ও অন্যান্য গ্যাসীয় হাইড্রো-কার্বন এবং পেট্রোলিয়াম কোক ও পেট্রোলিয়াম বিটুমিন ছাড়া পেট্রোলিয়াম তেলের রেসিডিউ।
আমদানি নীতিমালায় বলা হয়েছে, সিনেমার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ছাড়া উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত কোনো চলচ্চিত্র আমদানি করা যাবে না। তবে বাংলাদেশে নির্মিত চলচ্চিত্র সাফটাভুক্ত দেশগুলোতে রপ্তানির বিপরীতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি সাপেক্ষে সমসংখ্যক চলচ্চিত্র আমদানি করা যাবে। সব ধরনের খেলনা ও বিনোদনমূলক পণ্যের ক্ষেত্রে কোন বয়সের শিশুর জন্য প্রযোজ্য, তা উল্লেখ থাকতে হবে এবং প্লাস্টিকের তৈরি খেলনার ক্ষেত্রে তা ‘স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়’ মর্মে রপ্তানিকারক দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সনদের প্রয়োজন হবে।