বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » আমেরিকা | আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » রাশিয়া- ইউক্রেইন যুদ্ধে বিশ্ব অর্থনীতিতে ‘উদ্বেগজনক প্রভাব পড়েছে : জাতিসংঘ
রাশিয়া- ইউক্রেইন যুদ্ধে বিশ্ব অর্থনীতিতে ‘উদ্বেগজনক প্রভাব পড়েছে : জাতিসংঘ
বিবিসি২৪নিউজ, ফরিদা ইয়াসমিন, যুক্তরাষ্ট্র থেকেঃ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন,ইউক্রেইন যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে কতটা বিধ্বংসী প্রভাব ফেলেছে তার বিশদ বিবরণ দিয়েছে জাতিসংঘ। যুদ্ধের কারণে ‘ত্রিমাত্রিক সংকট’ তৈরি হয়েছে, যা সারা বিশ্বে খাদ্য, জ্বালানি ও অর্থ প্রবাহ বিঘ্নিত করেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘‘আমরা এখন এমন একটি ঝড় মোকাবেলা করছি যেটি অনেক উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে।”
এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব অর্থনীতিতে ইউক্রেইন যুদ্ধের ‘উদ্বেগজনক রকম দ্রুত প্রভাব’ পড়েছে। আর কোভিড-১৯ মহামারী ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগে থেকেই বিশ্ব অর্থনীতি ‘ক্ষতবিক্ষত’ ছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যু্দ্ধের কারণে বিশ্বে ১৭০ কোটির বেশি মানুষকে এখন খাদ্য, জ্বালানি এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করতে হচ্ছে, যাদের এক-তৃতীয়াংশ আগে থেকেই দ্রারিদ্র সীমায় বসবাস করছিল।
গত কয়েক মাসে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম প্রায় ৫০ শাতংশ বেড়ে গেছে। মূল্যস্ফীতি দিন দিন বাড়ছে, উন্নয়ন থমকে গেছে। অনেক দেশ তাদের ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে।
“ওই সব দেশ যেখানে লোকজনকে স্বাস্থ্যকর খাবার পেতে লড়াই করতে হচ্ছে, যেখানে জনগণের খাবার ও জ্বালানির চাহিদা পূরণ করতে আমদানি অপরিহার্য। যেখানে ঋণের বোঝা এবং সম্পদের স্বল্পতা সরকারগুলোকে বৈশ্বিক আর্থিক অবস্থার অস্পষ্টতা মোকাবেলা করার ক্ষমতা সীমিত করে দিয়েছে।”
প্রতিবেদনে যে ত্রিমাত্রিক সংকটের (খাদ্য, জ্বালানি ও অর্থ) কথা বলা হয়েছে, তার অন্তত একটিকে বিশ্বের ১০৭টি দেশকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে। আর ৬৯টি দেশ তিনটি সংকটেই পড়েছে।
ইউক্রেইন ও রাশিয়া বিশ্বের ৩০ শতাংশ গম ও বার্লির যোগান দাতা। ইউক্রেইন যুদ্ধের ফলে পণ্যমূল্য রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
গত বছর এই সময়ে তুলনায় খাদ্যপণ্যের দাম ৩৪ শতাংশ বেড়েছে বলে জানায় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘আকাশ ছোঁয়া এই পণ্য মূল্যে সব থেকে বেশি ভুগতে হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে। খাদ্যপণ্যের এই উর্ধ্বগতির কারণে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঝুঁকিও বাড়ছে।
রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং যে সম্পদ আছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অর্থনীতির উপর এই ধাক্কা কিছুটা হলেও সামাল দেয়া সম্ভব বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্বের দেশগুলোকে খাদ্য পণ্য মজুদ না করা, প্রান্তিক কৃষকদের নানা সহায়তা দেওয়া, পণ্য পরিবহনের খরচ স্থিতিশীল রাখা এবং রাপ্তানির উপর নানা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা সহ আরও বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।
তাছাড়া, বিভিন্ন দেশের সরকারকে বিশ্ব বাজারে কৌশলগত জ্বলানির মজুদ সহজ করা এবং জ্বালানির জন্য গমের ব্যবহার কমানোর আহ্বানও জানানো হয় এতে।