শনিবার, ২ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | প্রিয়দেশ | মিডিয়া ওয়াশ | শিরোনাম | সাবলিড » বাংলাদেশে সমালোচনার মুখে গণমাধ্যম কর্মী আইন
বাংলাদেশে সমালোচনার মুখে গণমাধ্যম কর্মী আইন
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকাঃ বাংলাদেশে প্রস্তাবিত গণমাধ্যম কর্মী আইন সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ বিশেষ করে পেশাদার সাংবাদিকরা এর বিরোধিতা করছেন৷ এই আইন নিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) তাদের অবস্থান জানাতে (শুক্রবার) রাতে জরুরি বৈঠক ডেকেছে৷
২৮ মার্চ প্রস্তাবিত আইনটি সংসদে উত্থাপন করা হয়৷ টিআইবি এরই মধ্যে বিবৃতি দিয়ে আইনটির বেশ কিছু ধারার সমালোচনা করেছে৷ তবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী শুক্রবার ঢাকায় তার বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে টিআইবির সমালোচনা করে বলেছেন, ‘‘কর্মপরিধির বাইরে গিয়ে কথা বলা টিআইবির অভ্যাসে পরিণত হয়েছে৷ এই প্রস্তাবিত আইন আইন দুর্নীতির কোনো বিষয় নয়৷’’
তবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন, ‘‘আমরা আইনটি পর্যালোচনা করে দেখবো৷ অংশীজনের সঙ্গে কথা বলবো৷ তারপর আমরা আমাদের মতামত দেবো৷’’
আমরা আইনটি পর্যালোচনা করে দেখব: সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক …
বিএফইউজের সভাপতি মো. ওমর ফারুক দাবি করেন, প্রস্তাবিত আইনটির ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টি ধারাই সাংবাদিকবান্ধব নয়৷ এই আইনটি মালিকদের সুবিধার জন্য করা হয়েছে৷ সবচেয়ে বড় কথা হলো, আইনটি পাস হলে সাংবাদিকরা রুটি-রুজি এবং অধিকার আদায়ের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারবেনা৷ তারা শ্রম আইনের সুবিধা পাবেন না৷’’
তিনি বলেন, ‘‘এই আইনে সাংবাদিকদের চাকরিজীবন শেষে সার্ভিস বেনিফিট অর্ধেক করে দেয়া হয়েছে৷ আগে গ্র্যাচুইটির বিধান ছিল প্রতিবছর দুইটি, এখন একটি করা হয়েছে৷ আগে বিনোদন ছুটি তিন বছরে ৩০ দিন ছিল, সেটা কেটে ১৫ দিন করা হয়েছে৷ সাংবাদিক ইউনিয়ন করার অধিকার খর্ব করা হয়েছে৷ কল্যাণ সমিতির কথা বলা হয়েছে৷ কিন্তু কোনো সাংবাদিক যদি অন্য হাউজের সহকর্মীর বিপদে ছুটে যেতে চান, তাকে ছুটি নিয়ে যেতে হবে, অন্যথায় শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে৷’’
তিনি বলেন, এই আইনে ঢাকার বাইরের সাংবাদিকদের জন্য কিছু বলা হয়নি৷ ‘সম্পাদক’ শব্দটি নেই৷ এটা একটা অসম্পূর্ণ এবং ত্রুটিপূর্ণ আইন৷এই আইনে সাংবাদিকদের মাসের বেতন প্রথম সাত কর্মদিবসের মধ্যে দেয়ার কথা বলা হয়েছে৷ কিন্তু না দিলে কী হবে তা বলা হয়নি৷ তবে নিম্নতম হারের চেয়ে কম বেতন দিলে এক বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ডের কথা বলা হয়েছে৷ শ্রম আদালত নয়, সাংবাদিকদের জন্য নতুন ‘গণমাধ্যম আদালতের’ কথা বলা হয়েছে৷ সাংবাদিক ছাঁটাই, বরখাস্তের বিধানে সরকারকে অবহিত করার বিষয় রয়েছে৷ আর অসদাচরণের জন্য বরখাস্তের কথা বলা হলেও অসদাচরণের কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি৷ ওয়েজবোর্ড সরকার গঠন করবে বলা হলেও তা বাধ্যতামূলক করা হয়নি৷
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘এই আইনটি হলো সাংবাদিক এবং সংবাদকর্মীদের সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিত করার জন্য৷ কিন্তু এই আইনে কিছু ভালো দিক থাকলেও সেই অধিকার ও সুরক্ষা কতটা নিশ্চিত হবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে৷ বলা হয়েছে সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা কাজ করতে হবে৷ এটা কিসের ভিত্তিতে বলা হলো? খাবার ও বিশ্রামের সময় কোথায়? পৃথিবীর কোনো দেশেই সপ্তাহে ৩৫-৪০ ঘণ্টার বেশি কাজ করার বিধান নেই৷ সপ্তাহে একদিন ছুটির কথা বলা হয়েছে৷ কিন্তু দেশে দুইদিন ছুটি প্রচলিত৷ গণমাধ্যমকর্মীদের ৪৮ ঘণ্টার পরে ওভারটাইম করানো যাবে৷ কিন্তু সেটা সর্বোচ্চ কত ঘণ্টা আর ওভারটাইমের ভাতার হিসাব কী হবে তা-ও বলা নেই৷ এই বিষয়গুলোকে আমরা বৈষম্যমূলক।