বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড | স্বাস্থ্যকথা » দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ থাকতে পারে ‘বেশ কিছুদিন-আইসিডিডিআর
দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ থাকতে পারে ‘বেশ কিছুদিন-আইসিডিডিআর
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকাঃ দেশে আইসিডিডিআরবি,র তথ্য অনুযায়ী, ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব শুরুর দুই সপ্তাহ পরও প্রতিদিন হাজার খানেক রোগী ভর্তি হচ্ছেন ঢাকার আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে। এর প্রধান চিকিৎসক বলছেন, এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে ‘বেশ কিছুদিন’।
বৃহস্পতিবার উদরাময় গবেষণার আন্তর্জাতিক এই প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে দেখা যায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের ভিড়। এদিন বেলা পাঁচটা পর্যন্ত ৯১৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এর আগে টানা তিনদিন দৈনিক ১৩শর বেশি রোগী এসেছেন এই হাসপাতালে।গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১,২৫৩ জন এবং প্রতি ঘণ্টায় ৫২ জনের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন।
তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ১,১৭৬ জন, শুক্রবার ১,১৩৮ জন, শনিবার ১,২৪৫ জন, রোববার ১,২৩০ জন, সোমবার ১,৩৩৪, মঙ্গলবার ১,৩১৭ জন এবং বুধবার ১,৩৩১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
অর্থাৎ এক সপ্তাহে ৮ হাজার ৭৭১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে।
হাসপাতালের প্রধান ডা. বাহারুল আলম বলেন, “সাধারণত ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ছয় থেকে আট সপ্তাহ ধরে চলে। সে হিসেবে ঢাকা ও আশপাশে ডায়রিয়া পরিস্থিতি আরও কিছুদিন চলবে।”
ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকে মহাখালীর বিশেষায়িত এ হাসপাতাল ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি এবং শিশু হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নেওয়ার সংখ্যা বাড়ার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর আসছে গত কয়েকদিন ধরে। বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া থেকে আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে এসেছেন মনিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, বুধবার সকাল থেকে পেটে সমস্যা হয়েছে তার। অবস্থা বেশি খারাপ হলে বুধবার বিকেলে এ হাসপাতালে আসেন তিনি।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বুধবার ঢাকার মহাখালী আইসিডিডিআর,বিতে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীকে সেবা দিতে ব্যস্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বুধবার ঢাকার মহাখালী আইসিডিডিআর,বিতে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীকে সেবা দিতে ব্যস্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা।
“বাইরের খাবার তো খাই না। ওয়াসার পানি হলেও তা ফুটাইয়া খাই। ডায়রিয়া হই্য়া একেবারে কাহিল করে ফেলছে।”
উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আবদুল হান্নান এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বুধবার।
হান্নান জানান, সকালে বাসায় খাবার খান তবে দুপুরে অফিসের কাছে একটি মেসের খান তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে ওই মেসে খাবার খাওয়ার পর বিকেল থেকেই পেট ব্যথা শুরু হয়েছে।
“মঙ্গলবার রাতেই প্রচণ্ড পাতলা পায়খানা, বমি শুরু হয়। শরীর খুবই দুর্বল হয়ে গেছে। পরে এখানে ভর্তি হয়েছি বুধবার সকালে। আমি বাসায় পানি ফুটিয়েই খাই। মেসের খাবার অথবা পানি থেকেই আক্রান্ত হয়েছি মনে হয়।”এবছর গরমের শুরুতেই বাড়তে শুরু করে ডায়রিয়ার প্রকোপ। চিকিৎসকদের ধারণা, মহামারীর বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর মানুষের অসাবধানতা, বাইরের খাবার ও পানীয় গ্রহণে অসর্কতার কারণে এবার ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।
ডা. বাহারুল আলম বলেন, “আগের বছরগুলোয় আমরা দেখেছি মোটামুটি ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। এবার শুরু হয়েছে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। এটা আরও কিছুদিন চলবে মনে হচ্ছে।”
তবে ঈদের আগেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে বলে আশা করেন এই চিকিৎসক।