রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | শিরোনাম | সাবলিড » পূর্ব ইউক্রেনে সংঘাত তীব্রতর হচ্ছে, বেলারুস ও রাশিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ার মেয়াদ বাড়লো
পূর্ব ইউক্রেনে সংঘাত তীব্রতর হচ্ছে, বেলারুস ও রাশিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ার মেয়াদ বাড়লো
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া এক লক্ষাধিক সৈন্য মোতায়েন করার পশ্চিমা নেতাদের ভাষায় “যে কোন সময়” সামরিক অভিযানের আশংকার মধ্যেই আজ বেলারুস বলেছে - রুশ সৈন্যদের সাথে তাদের যে যৌথ সামরিক মহড়া চলছিল, ইউক্রেনে উত্তেজনার কারণে তার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।
ওই মহড়া শেষ করে প্রায় ৩০,০০০ রুশ সৈন্যের আজই দেশে ফিরে যাবার কথা ছিল।কিন্তু বেলারুসের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি এবং তাদের ভাষায় পূর্ব ইউক্রেনের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে এ মহড়ার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। বেলারুসের এ ঘোষণা অবশ্য মস্কোর দিক থেকে নিশ্চিত করা হয়নি।
পশ্চিমা নেতারা আশংকা করেন যে এই সৈন্যদের ইউক্রেনে অভিযানের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে, তবে রাশিয়া তা অস্বীকার করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালাবে। পশ্চিমা নেতারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন যে তারা ইউক্রেনে অভিযান চালানোর অজুহাত হিসেবে একটি ভুয়া কারণ খাড়া করার চেষ্টা করছে। তবে রাশিয়া বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এ পরিস্থিতির মধ্যে আজ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ফরাসী প্রেসিডেন্ট এম্মানুয়েল ম্যাক্রঁর মধ্যে আরেকদফা ফোনে কথাবার্তা হচ্ছে।
পূর্ব ইউক্রেনে সংঘাত তীব্রতর হচ্ছে
ইউক্রেনের রুশ-সমর্থিত বিদ্রোহী পূর্বাঞ্চলে গত কয়েকদিনে উত্তেজনা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তারা কোন উস্কানিতে সাড়া দেবেন না। তবে মি. জেলেনস্কি বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, রাশিয়া কোন অভিযান চালালে তারা আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ নেয়া হবে।
পূর্ব ইউক্রেনে সরকারি বাহিনী ও রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষের তৃতীয় দিনে দুজন ইউক্রেনীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। দু পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে গত রাতে একাধিকবার গোলাবর্ষণের অভিযোগ এনেছে।ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলছে - তারা ডনবাস এলাকায় যাবার একটি চেকপয়েন্ট ব্যবহার স্থগিত করেছে কারণ বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বলছে, তা্রা ইউক্রেনীয়দের গোলাবর্ষণের জবাব দিচ্ছে।
ইউরোপে ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় যুদ্ধ?’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া ইউরোপে ১৯৪৫ সালের পর সবচেয়ে বড় যুদ্ধের পরিকল্পনা করছে, এবং বিভিন্ন আলামত দেখে মনে হচ্ছে যে এক অর্থে ইতোমধ্যেই তা শুরু হয়ে গেছে ।
বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সূত্রে আভাস মিলছে যে রাশিয়া এমন এক অভিযান চালাতে চায় যাতে কিয়েভ শহরকে ঘিরে ফেলা হবে। মি. জনসন হুঁশিয়ার করে দেন যে এ ধরনের কোন যুদ্ধ হলে তা হবে “রক্তাক্ত এবং দীর্ঘ।”
তিনি আরো বলেন, ইউক্রেনে রুশ অভিযান হলে - রুশ কোম্পানিগুলোকে ডলার ও পাউন্ডে কোন লেনদেন করতে দেবে না যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ।
রাশিয়া কী চাইছে?
পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে রাশিয়া এই নিশ্চয়তা চাইছে যে ইউক্রেনকে যে কখনো নেটো সদস্য করা হবে না এবং পূর্ব ইউরোপে নেটোর সামরিক উপস্থিতি কমাতে হবে - যদিও মার্কিন নেতৃত্বাধীন নেটো এমন কোন নিশ্চয়তা দিতে রাজি নয়।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যদি নেটোতে যোগ দেয় এবং আট বছর আগে রাশিয়ার দখল করে নেয়া ক্রাইমিয়া পুনর্দখল করার চেষ্টা করে - তাহলে পুরো ইউরোপ একটা বড় আকারের সংঘাতে জড়িয়ে যাবে।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেছেন প্রয়োজন হলে ইইউ তাদের নিজ অর্থনীতির ক্ষতি করে হলেও রুশ সামরিক আগ্রাসনের পাল্টা ব্যবস্খা নেবে। মিউনিখে এক নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি বলেন, ইইউ রাশিয়ার ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য প্রস্তুত আছে।