মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » আমেরিকা | আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » রুশ পাইপলাইন বন্ধের হুঁশিয়ারি- যুক্তরাষ্ট্রের
রুশ পাইপলাইন বন্ধের হুঁশিয়ারি- যুক্তরাষ্ট্রের
বিবিসি২৪নিউজ, ফরিদা ইয়াসমিন, ওয়াশিংটন থেকেঃ মস্কোকে হুঁশিয়ার করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেনে আক্রমণ করলে জার্মানির সঙ্গে সংযুক্ত থাকা রুশ গ্যাস পাইপলাইনটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। স্থানীয় সময় সোমবার ওয়াশিংটনে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে বৈঠকের পর বাইডেন এ হুমকি দেন। খবর বিবিসির।
সোমবার বৈঠকের পর একটি সংবাদ সম্মেলন করেন বাইডেন ও শলৎজ। সে সময় রাশিয়া থেকে জার্মানির দিকে যাওয়া নবনির্মিত নর্ড স্ট্রিম টু গ্যাস পাইপলাইন নিয়ে জানতে চান সাংবাদিকেরা। জবাবে বাইডেন বলেন, ‘রাশিয়া যদি আবারও আক্রমণ করে, তাহলে নর্ড স্ট্রিম টু পাইপলাইনের অস্তিত্ব আর থাকবে না। আমরা এর সমাপ্তি টানব।’
কীভাবে তা করা হবে, সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি বাইডেন। তবে তিনি বলেন, ‘আমরা এটা করতে পারব বলে আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আমি।
জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো ওয়াশিংটন সফর করেছেন শলৎজ। ইউক্রেন সংকট প্রশ্নে দৃঢ় ভূমিকা না থাকার জন্য সমালোচনার মধ্যে রয়েছেন তিনি। বিশেষ করে রাশিয়ার সঙ্গে নবনির্মিত গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকে সংশয়ী।
তবে শলৎজ দাবি করে আসছেন, ইউক্রেনে আক্রমণ হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি সম্পূর্ণভাবে ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা একই পদক্ষেপ নেব, আর তা রাশিয়ার জন্য খুব কঠিন হবে।’
১ হাজার ২২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নর্ড স্ট্রিম টু পাইপলাইনটি নির্মাণে সময় লেগেছিল পাঁচ বছর। এতে খরচ হয় ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার। বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে এ জ্বালানি প্রকল্পটি পরিচালনা করার কথা রয়েছে। জার্মানিতে দ্বিগুণ পরিমাণে গ্যাস রপ্তানির কথা মাথায় রেখে এ পাইপলাইনের নকশা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ পাইপলাইনের কার্যক্রম শুরু হয়নি। নভেম্বরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, পাইপলাইনটি জার্মানি আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তখন থেকে প্রকল্পটি স্থগিত রাখা হয়েছে।
ইউরোপের বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নর্ড স্ট্রিম টুতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। তবে অনেকে পরিকল্পনাটির ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জার্মানির প্রচেষ্টার সঙ্গে এ প্রকল্পকীভাবে সংগতিপূর্ণ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশবিদেরা। রুশ জ্বালানি নিয়ে জার্মানির ও বহির্বিশ্বের রাজনীতিবিদেরা আশঙ্কা জানিয়েছেন, এ পাইপলাইনের কারণে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর ইউরোপের নির্ভরতা বেড়ে যাবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এর আগে পাইপলাইনটিকে ‘বিপজ্জনক ভূরাজনৈতিক অস্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে লাখো সেনা মোতায়েনের পর ইউক্রেনে সম্ভাব্য রুশ সামরিক অভিযান নিয়ে উদ্বিগ্ন পশ্চিমারা। তবে মস্কো অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। সংকট নিরসনে সামরিক জোট ন্যাটোতে ইউক্রেনকে সদস্য না করা, পূর্ব ইউরোপে জোটের সামরিক উপস্থিতি কমিয়ে আনাসহ একাধিক দাবি তুলেছে মস্কো। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা কমানোসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসার পরামর্শ দিয়েছে মস্কোকে।