মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | শিরোনাম | সাবলিড » সুদানে অভ্যুত্থানবিরোধী মিছিলে সেনাদের গুলিতে, নিহত ৭
সুদানে অভ্যুত্থানবিরোধী মিছিলে সেনাদের গুলিতে, নিহত ৭
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সুদানে অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার করে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভরত জনতার ওপর সৈন্যরা গুলি চালিয়েছে।
সোমবার এই বিক্ষোভ-সংঘাতের সময় অন্তত সাত বিক্ষোভকারী নিহত এবং ১৪০ জন আহত হয়েছেন বলে সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার প্রথম প্রহরে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী সরকারের মন্ত্রী ও সরকার সমর্থক রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তার শুরু করে। পরে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হলে প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নেমে আসে।
রাজধানী খার্তুমে সৈন্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্থানীয় বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করছে বলে খবর এসেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ অভ্যুত্থানের নিন্দা করেছে, যুক্তরাষ্ট্র ৭০ কোটি ডলারের একটি ত্রাণ সহায়তা স্থগিত করেছে।
অভ্যুত্থানের নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এ পরিস্থিতির জন্য রাজনৈতিক কোন্দলকে দায়ী করেছেন।
দুই বছর আগে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর বেসামরিক নেতা ও সামরিক বাহিনীর নেতাদের নড়বড়ে এক ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তির মধ্য দিয়ে গত দুই বছর ধরে পরিচালিত হয়ে আসছিল সুদান। ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তি সত্ত্বেও দুই পক্ষের মধ্যে মতভেদ বেড়েই চলছিল।
রাজধানী খার্তুম থেকে বিবিসির প্রতিনিধি মোহামেদ ওসমান জানান, সোমবার রাতে খার্তুমে ও অন্যান্য শহরে বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে বেসামরিক শাসন পুনর্বহালের দাবি জানায়।
আহত এক বিক্ষোভকারী সাংবাদিকদের জানান, সামরিক সদরদপ্তরের সামনে সেনাবাহিনী তার পায়ে গুলি করেছে। অপর এক বিক্ষোভকারী জানান, সৈন্যরা প্রথমে স্টান গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায় তারপর গুলি ছোড়ে।
“দুই জন মারা গেছেন। আমি স্বচক্ষে তাদের দেখেছি,” বলেন আল-তায়েব মোহাম্মদ আহমেদ।
সুদানের চিকিৎসক ইউনিয়ন ও তথ্য মন্ত্রণালয়ও সামরিক কম্পাউন্ডের সামনে গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে ফেইসবুকে লিখেছে।
খার্তুমের একটি হাসপাতাল থেকে আসা ছবিতে রক্তাক্ত কাপড়ে থাকা লোকজন ও বহু আহতকে দেখা গেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
বিবিসির প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সহিংসতা সত্ত্বেও প্রতিবাদ হ্রাস পাওয়ার লক্ষণ কমই দেখা গেছে।
বিক্ষোভকারীরা ইট স্তূপ করে ও টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। বিক্ষোভে অনেক নারীও অংশ নিচ্ছেন, ‘সামরিক শাসন চাই না’ বলে শ্লোগান দিচ্ছেন তারা।
খার্তুমের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। ইন্টারনেট এবং অধিকাংশ ফোন লাইনও বন্ধ আছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মীরা দেশজুড়ে ধর্মঘট শুরু করেছেন। চিকিৎসকরা সামরিক হাসপাতালগুলোতে কাজ করতে অস্বীকার করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে, শুধু জরুরি বিভাগ খোলা আছে।
সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের খবরে বিশ্ব নেতারা উদ্বোগ প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপী ইউনিয়ন (ইইউ), জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য বন্দি রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দাবি করেছে। যাদের বন্দি করে রাখা হয়েছে তাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামদক ও তার স্ত্রী, মন্ত্রীসভার সদস্যরা ও অন্যান্য বেসামরিক নেতারা রয়েছেন।