বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » যে ভাবে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা
যে ভাবে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা
বিবিসি২৪নিউজ, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ রাত সাড়ে ৮টায় কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ইস্ট-ওয়েষ্ট ১ নম্বর ব্লকে তার অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
আর্মড পুলিশের ১৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাঈম উল হক জানান, ক্যাম্প থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পরই চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। উল্লেখ যে, মুহিবুল্লাহ কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করে আলোচনায় আসেন। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন।
মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করার খবর ছড়িয়ে পড়লে আতংক ছড়িয়ে পড়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। কিন্তুু কারা তাকে হত্যা করেছে তা এখনো কেউ বলতে পারছে না। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীরা মুখোশ পরিহিত ছিল। তাদের মুখে গামছা থাকার কারণে কেউ তাদের চিনতে পারেনি।
ঘটনার সময় মুহিবুল্লাহ লোকজনের সঙ্গে বসে আলাপরত অবস্থায় ছিলেন। সন্ত্রাসীরা এসে তাকে টার্গেট করে পরপর পাচঁ রাউন্ড গুলি চালায়। তার শরীরে তিনটি গুলি লাগে। গুলির শব্দে সবাই এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায় হাসপাতালে। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। ঘটনার কারণ কি এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার নাঈম উল হক কিছুই জানাতে পারেননি মিডিয়াকে।
এদিকে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, “মহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর ছিল, যে সম্প্রদায় বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আগমনের সময় ইতোমধ্যেই অকল্পনীয় ক্ষতি ও যন্ত্রণা ভোগ করেছেন। তিনি সবসময় রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণভাবে (মিয়ানমারে) প্রত্যাবর্তনের অধিকার এবং তাদের জীবন ও ভবিষ্যত সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মত প্রকাশের অধিকার রক্ষার পক্ষে কথা বলেছেন। তার হত্যাকাণ্ডের ফলে রোহিঙ্গা শিবিরে যারা স্বাধীনতার পক্ষে এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতো, তাদের জীবন এখন স্পষ্ট ঝুঁকির সম্মুখীন। মহিবুল্লাহ’র মৃত্যু শুধু শরণার্থী শিবিরে অধিকতর অধিকার ও সুরক্ষার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংগ্রামকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে না, বরং মিয়ানমারে নিরাপদে বাড়ি ফেরার প্রচেষ্টাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের উচিত মহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি ক্যাম্পে রোহিঙ্গা কর্মীদের ওপর অন্যান্য হামলারও তদন্ত করা”।