শনিবার, ৭ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড | স্বাস্থ্যকথা » করোনা গণ টিকাদান ক্যাম্পেইনে উপচে পড়া ভিড়
করোনা গণ টিকাদান ক্যাম্পেইনে উপচে পড়া ভিড়
বিবিসি২৪নিউজ, বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকাঃ বাংলাদেশে আজ থেকে গণ টিকাদান বা ‘ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন’ শুরু হয়েছে।
করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনার জন্য প্রথমে ছয়দিন ধরে এক কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হবে ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।তবে পরবর্তীতে টিকার স্বল্পতার সেই সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়।
শনিবার করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ছয় দিনে ৩২ লাখ মানুষকে টিকাদানের আওতায় আনার পরীক্ষামূলক এ কার্যক্রমে অংশ নিতে দেশজুড়ে টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সরকার প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা দেয়ার নিয়ম চালু করলেও এবার জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়েই টিকা নিতে পারছে মানুষ।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, টিকা গ্রহীতাদের কাছ থেকে পরিচয়পত্রের ফটোকপি রাখা হচ্ছে যেগুলো তারা নিজেরাই পরে মূল ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করে দেবেন। ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে টিকা গ্রহীতারা স্বাস্থ্য বিভাগের টিকা সম্পর্কিত এসএমএস পেয়ে যাবেন।
কিন্তু ভিড়ের কারণে ঢাকাসহ নানা জায়গায় অনেক কেন্দ্রেই চরম অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হতে দেখা গেছে।টিকা গ্রহীতা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যা বলছেন: ঢাকার মহাখালীতে টিকা দিতে বয়স্ক মাকে নিয়ে আসা ৪৪ বছর বয়সী বেসরকারি চাকুরীজীবী নাসিরুল হক বলেছেন, “চরম হযবরল অবস্থা। স্বাস্থ্যবিধির কোন বালাই নাই। ভিড় আর হুড়োহুড়ির কারণে এক ঘণ্টা মাকে বাইরে গাড়িতে বসিয়ে রাখার পর টিকা দিতে পেরেছি”।
প্রায় একই অবস্থা ঢাকার বাইরের অনেক জায়গাতেই। রাজশাহীর তানোরে তালন্দ ইউনিয়নের নারায়ণপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বলছেন, ”কর্তৃপক্ষের দিক থেকে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে অনেক কিন্তু অনেকেই এক সাথে কেন্দ্রে আসায় ভিড় বেশি হয়েছে”।
আবার স্বরূপকাঠির সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আসাদ বলছেন, তিনি সেখানকার কয়েকটি ইউনিয়নের টিকাদান কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখেছেন।
“মানুষের মধ্যে উৎসাহ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষও তৎপর কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। কেউ। আবার বৃষ্টির কারণেও অনেক জায়গায় সমস্যা হয়েছে”।
স্বরূপকাঠির বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের আঞ্জুমান আরা বলছেন, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা নির্বিঘ্নে টিকা দিয়েছেন।
“মেম্বারের কাছ থেকে শুনে ইউনিয়ন কেন্দ্রে এসে অল্প সময়ের মধ্যেই টিকা নিলাম। লাইন বড় ছিলোনা তাই সময় কম লাগছে। এখন বাড়ি যাচ্ছি,” বেলা একটার দিকে ফোনে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
সারা দেশে থেকে আজ শুরু হওয়া টিকাদান ক্যাম্পেইনে ২৫ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পঞ্চাশের বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে টিকা দেয়ার কার্যক্রম নিয়েছে সরকার।সরকার বলছে, এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সারাদেশে ৪ হাজার ৬০০টি ইউনিয়নে, এক হাজার ৫৪টি পৌরসভায় ও সিটি কর্পোরেশনের ৪৩৩টি ওয়ার্ডে টিকাদান কর্মসূচি চালানো হবে।
সরকার প্রাথমিকভাবে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে চিন্তা করলেও পরে সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে।
বাংলাদেশে সরকারি হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে সাতই ফেব্রুয়ারিতে টিকা কার্যক্রম শুরুর পর এখন পর্যন্ত এক কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে আর দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন হয়েছে ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের।
তবে গত কিছুদিন ধরে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে চুক্তি অনুযায়ী টিকা না আসায় টিকাদান কার্যক্রমে শুরুর গতি ধরে রাখা যায়নি।
পরে চীন থেকে টিকা কেনার পাশাপাশি কোভ্যাক্স থেকেও টিকা আসতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না, ফাইজার ও সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে।