মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | ইউরোপ | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ফ্রান্সে করোনার চতুর্থ ঢেউ মোকাবেলা চালু হচ্ছে স্বাস্থ্য পাস
ফ্রান্সে করোনার চতুর্থ ঢেউ মোকাবেলা চালু হচ্ছে স্বাস্থ্য পাস
বিবিসি২৪নিউজ, ইইউ প্রতিনিধিঃ ফ্রান্সে চলাফেরা স্বাস্থ্য পাস না থাকলে করাই মুশকিল হবে। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ।করোনার চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়েছে ফ্রান্সে। গত জুলাইতে ফ্রান্সে করোনার দৈনিক সংক্রমণ সর্বোচ্চ তিন হাজারে পৌঁছেছিল। অগাস্টের গোড়ায় তা ২০ হাজারে পৌঁছে গেছে। প্রতিদিনই সংক্রমণের হার লাফিয়ে বাড়ছে। চিন্তা বাড়িয়েছে ডেল্টা সংস্করণ। তারই মধ্যে নতুন স্বাস্থ্য পাস চালু করার কথা ভাবছে ফরাসি সরকার। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় এই ধরনের পাস চালু হয়ে গেছে। সরকারজানিয়েছে, এবার থেকে বাসে-ট্রেনে উঠলেও ওই পাস দেখাতে হবে।
কী আছে পাসে
স্বাস্থ্য পাসে একটি কিউআর কোড থাকবে। সেই কোড স্ক্যান করলেই জানা যাবে দুইটি টিকা নেওয়া আছে কি না। টিকা নেওয়া থাকলে অবাধে সর্বত্র যাতায়াত করা যাবে। তবে করোনাবিধি মানতে হবে। ভ্যাকসিন নেওয়া না থাকলে বহু জায়গাতেই যাওয়া যাবে না। এমনকী, বাসে-ট্রেনেও ওঠা যাবে না। ৪৮ ঘণ্টা আগের আরটিপিসিআর নেগেটিভ টেস্ট রিপোর্ট থাকলেই যাতায়াত করা যাবে। সরকারের দাবি, নতুন নিয়ম চালু করলে টিকা নেওয়ার প্রবণতা আরো বাড়বে।
ভ্যাকসিন নিলে ইউরোপের কোথায় বেড়াতে যেতে পারবেন
কোন ভ্যাকসিন নিলে যাওয়া যাবে
ইইউ স্বীকৃত ভ্যাকসিন নিলেই ফ্রান্সে যাওয়া যাবে। এর মধ্যে আছে, ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন।
গত ৭ জুন থেকে স্পেনের দরজা পর্যটকদের জন্য খুলে গেছে। এখানে ভ্যাকসিনের দুই ডোজ ছাড়াও করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট সঙ্গে থাকতে হবে। আর ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজের ১৪ দিন পরেই স্পেনে ঢোকা যাবে।
ইইউ-র বাইরের দেশের মানুষ জরুরি দরকার ছাড়া জার্মানিতে ঢুকতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট জরুরি। যে সব দেশকে করোনার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে জার্মানি, সেখানকার মানুষদের এরপরেও কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে।
পাসের প্রতিবাদে এবং টিকা নেওয়ার বিরুদ্ধে ফ্রান্সেরবহু মানুষ গত সপ্তাহান্তেও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, কোনোভাবেই তারা টিকা নেবেন না। টিকা নেওয়া বা না নেওয়া ব্যক্তি অধিকারের বিষয়। সরকার তা চাপিয়ে দিতে পারে না। বস্তুত, সরকার টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে পারেনি। কিন্তু এমন ব্যবস্থা করছে, যাতে টিকা না নিলে স্বাভাবিক জীবনযাপন মুশকিল হয়ে যায়।
ফরাসি অর্থনীতি
গত দেড় বছরে করোনার কারণে আরো অনেক দেশের মতোই ফরাসি অর্থনীতিও ধাক্কা খেয়েছে। মাসের পর মাস লকডাউন থাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ছোট এবং মাঝারি ব্যবসায়ীরা। ফরাসি দোকান মালিকদের বক্তব্য, আগে রেস্তোরাঁয় যে পরিমাণ মানুষ আসতেন, করোনার পর তা প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। নতুন পাস-বিধি চালু হলে মানুষের সংখ্যা আরো কমতে পারে বলেও তাদের আশঙ্কা। তবে একই সঙ্গে দোকানদার এবং রেস্তোরাঁ মালিকদের বক্তব্য, করোনার কথা মাথায় রেখে নতুন নিয়ম সকলের মেনে নেওয়া উচিত। নইলে করোনা আটকানো যাবে না।
সরকারের বক্তব্য
ফরাসি সরকারের বক্তব্য, চতুর্থ ঢেউয়ে দেশ জুড়ে ডেল্টা সংস্করণ ছড়িয়ে পড়ছে। নতুন এই সংস্করণ কিছুদিন আগে ভারতে ছড়িয়েছিল। সাধারণ করোনা ভাইরাসের চেয়ে অনেক দ্রুত ছড়াতে পারে নতুন এই ভেরিয়েন্ট। গত এক সপ্তাহে ফ্রান্স তা বুঝতেও পারছে। লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা। ফলে গোড়াতেই সতর্ক হতে চাইছে ফরাসি সরকার। সংক্রমণ রুখতে কড়া পদক্ষেপের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।