বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিল্লি সফর : দুই দেশের সহযোগিতার সম্প্রসারণ
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিল্লি সফর : দুই দেশের সহযোগিতার সম্প্রসারণ
বিবিসি২৪নিউজ, অমিত ঘোষ, দিল্লি থেকেঃ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের নতুন দিল্লি সফরের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত তাদের মধ্যকার নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও ঘনিষ্ঠ করার ব্যাপারে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কারণে, পারস্পরিক উদ্বেগের মধ্যেই দু দেশের সম্পর্ক ক্রমশই উন্নত হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রাহমানিয়াম জয়শংকের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ব্লিংকেন বলেন, “বিশ্বে খুব কম এমন সম্পর্ক আছে যা যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্কের মতো এতটা গুরুত্বপূর্ণ”। উভয় দেশের এই দু জন শীর্ষ কুটনীতিক আফগানিস্তানে রাজনৈতিক নিস্পত্তির উপর জোর দেন।
ব্লিংকেন বলেন তালিবান যে গত সপ্তাহে নির্যাতন চালিয়েছে সে বিষয়ে খবর অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং দেশটির প্রতি তালিবানের সদিচ্ছার উদাহরণ নয়। তিনি সতর্ক করে দেন যে আফগানিস্তান যদি জনগণের অধিকারের প্রতি সম্মান না জানায় তা হলে দেশটি একটি দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে এবং এই সংঘাতের নিস্পত্তির জন্য সকল পক্ষকে একত্রিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি জোর দিয়েই বলেন সকল পক্ষের উচিত্ হবে আলোচনাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া।
ভারতীয় কর্মকর্তাদের জন্য আফগানিস্তানের পরিস্থিতি বড় রকমের উদ্বেগের কারণ। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আফগানিস্তানের ফলাফল যুদ্ধ ক্ষেত্রে নির্ধারিত হওয়া উচিত্ নয়।
দু পক্ষ কোয়াড জোট নিয়েও কথা বলেন । এই নিরাপত্তা জোটে রয়েছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া । বেইজিং সরকার এটি চীনকে কাবু করার জন্য একটি সামরিক জোট হিসেবে দেখছে এবং এর নিন্দে করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জয়শংকর অবশ্য বলেন যে কেয়কটি দেশের একত্রে কাজ করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তিনি বলেন, ‘লোকজনকে এমন ধারণা পরিত্যাগ করতে হবে যে অন্যদেশগুলো যা করছে তা তাদের বিরুদ্ধে যাবে”।
ব্লিংকেন নতুন দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও দেখা করেন । তাঁদের মধ্যকার বৈঠকের পর মোদি বলেন, “ভারত-যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত সহযোগিতা জোরালো করার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জোরালো প্রতিশ্রুতিকে আমি স্বাগ জানাই যা কীনা আমাদের অভিন্ন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে গ্রথিত রয়েছে এবং তা বিশ্বের কল্যাণের জন্য শক্তিস্বরূপ”।
নতুন দিল্লিতে অন্যতম একটি তাত্পর্যপূর্ণ বৈঠক ছিল নির্বাসিত তিব্বত সরকারের প্রতিনিধি নগোদুপ দংচুং’এর সঙ্গে । এই বৈঠক তিব্বতের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের সমর্থন হিসেবে দেখা যেতে পারে এবং তা চীনের বিরক্তুর কারণ হতে পারে। সমালোচকরা যেমন মোদি সরকারকে অধিকার লংঘনের জন্য সমালোচনা করে , ব্লিংকেনর সফরের সময়েও মানবাধিকার প্রসঙ্গটি উঠে আসে।
নতুন দিল্লির একটি হোটেলে সুশীল সমাজের সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে ব্লিংকেন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, “আমরা মনে করি তাদের সরকারের মধ্যে সকল মানুষের কথা শোনা হবে, তাদের প্রতি সম্মানের সঙ্গে আচরণ করতে হবে, সে তারা যেই হোক না কেন। সেগুলোই হলো আমাদের মত গণতন্ত্রের মূল বিষয়”। সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের গুরুত্বের প্রতি জোর দিয়ে তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্রের মতই ভারতের গণতন্ত্রের শক্তি হচ্ছে, “মুক্ত চিন্তার নাগরিকরা”।