শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | ইউরোপ | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ভয়াবহ বন্যার কবলে ইউরোপ-সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত জার্মানি, জলবায়ু পরিবর্তনই কি দায়ী?
ভয়াবহ বন্যার কবলে ইউরোপ-সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত জার্মানি, জলবায়ু পরিবর্তনই কি দায়ী?
বিবিসি২৪নিউজ, আবু আইয়ুব মুকুল,ইইউ প্রতিনিধিঃ জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতজনিত বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে, এবং এখনও শত শত লোক নিখোঁজ রয়েছেন।
রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে জার্মানির বহু নদী পানিতে সম্পূর্ণ ভরে গিয়ে দু’পারের গ্রাম ও ছোট শহরগুলো প্লাবিত হয়েছে, অনেক ছোট শহর ও গ্রামের বহু ঘরবাড়ি পানির তোড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জরুরি ত্রাণ দলগুলো পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছে এবং নিখোঁজ লোকদের সন্ধান করছে।উত্তর পশ্চিম ইউরোপ জুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে জার্মানি ছাড়াও বেলজিয়াম, লাক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস এবং সুইৎজারল্যান্ডের মত কয়েকটি দেশ জুড়ে এই বন্যা দেখা দেয়।
বেলজিয়াম থেকে অন্তত ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।বলা হচ্ছে, ইউরোপে গত কয়েক দশকের মধ্যে এটিই দেশটিতে সবচাইতে ভয়াবহ বন্যা।
জার্মানিতে সবচাইতে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট এবং নর্থ রাইন-ওয়েস্টফ্যালিয়া নামে দুটি রাজ্য।জার্মানিতে উদ্ধার ও সন্ধানকাজে সাহায্য করার জন্য ১৫ হাজার পুলিশ, সেনা বাহিনীর সদস্য এবং জরুরি সংস্থার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় আরভাইলার জেলার কর্মকর্তারা বলছেন প্রায় ১৩০০ লোকের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। শুল্ড নামে একটি গ্রাম প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট-এ জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।কোলোনের কাছে এরফস্টাট-ব্লেজেম শহরে একসাথে অনেকগুলো বাড়ি ধসে পড়েছে।
বেলজিয়ামের লিয়েজ এবং নেদারল্যান্ডসের ম্যাস্ট্রিখটের মতো বেশ কিছু শহর ও গ্রামে বন্যার ঝুঁকির কারণে হাজার হাজার লোককে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনই কি কারণ?
বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরেই সতর্ক করছিলেন যে মানুষের কর্মকাণ্ডের জন্য জলবায়ুতে যে পরিবর্তন হচ্ছে তার পরিণামে ঠিক এই রকম অতিমাত্রায় বৃষ্টিপাতের মতো অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটবে।
শিল্প যুগের শুরুর পর থেকে বিশ্বের তাপমাত্রা ১.২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়ে গেছে এবং বিজ্ঞানীরা বলে আসছেন বিশ্বের, বিশেষ করে, শিল্পোন্নত দেশগুলোর সরকার কার্বন নির্গমন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় না কমালে তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
এখন জার্মানির এই বন্যার পর দেশটির চ্যান্সেলার এঙ্গেলা মের্কেল জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধের লড়াইয়ে সবাইকে সংকল্পবদ্ধ হবার আহ্বান জানিয়েছেন।
একই রকম কথা বলেছেন জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ওয়াল্টার স্টাইনমেয়ার।ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লাইন সতর্ক করেছেন যে এই বন্যায় জলবায়ুর পরিবর্তনের স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, এবং তা প্রতিরোধে সবার সক্রিয় হওয়াটা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।