রবিবার, ২১ মার্চ ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » জাতিসংঘে বিশ্ব শান্তি রক্ষায় মিশনে ১ নম্বরে বাংলাদেশ
জাতিসংঘে বিশ্ব শান্তি রক্ষায় মিশনে ১ নম্বরে বাংলাদেশ
বিবিসি২৪নিউজ, নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনকারী দেশ হিসেবে ১১৮টি দেশের মধ্যে এখন এক নম্বরে আছে বাংলাদেশ। প্রতিবেশী ভারত পঞ্চম এবং পাকিস্তান ষষ্ঠ অবস্থানে। ৫০ বছরে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে এক কথায় এসেছে অভূতপূর্ব উন্নয়ন। আমাদের বাহিনীগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করে যাচ্ছে নিরলস।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৭টি মিশনে বাংলাদেশের সর্বমোট ৬ হাজার ৭৩১ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত আছেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্য ৫ হাজার ২৮৫ জন, বিমান ও নৌবাহিনীর ৮১৩ জন এবং পুলিশ বাহিনীর ৬৩৩ জন।
ইতোমধ্যে ৪০টি দেশের ৫৪টি শান্তিরক্ষা মিশনে এক লাখ ৭২ হাজার ৪৬৩ জন শান্তিরক্ষী পাঠিয়ে জাতিসংঘের ইতিহাসে শান্তিরক্ষায় রোল মডেল পরিচিতি লাভ করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্য ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৭১ জন, নৌবাহিনী থেকে ৫ হাজার ৯১২ জন, বিমানবাহিনী থেকে ৭ হাজার ১০৬ জন এবং পুলিশ বাহিনীর ২০ হাজার ১৭৪ জন বিভিন্ন মিশনে অংশ নেন।
তাছাড়া জাতিসংঘ মিশনের আওতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ সশস্ত্র ও পুলিশ বাহিনী থেকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন এক হাজার ৮২৬ জন নারী শান্তিরক্ষী।
সংঘাতপূর্ণ এলাকায় নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় বাংলাদেশের নারী শান্তিরক্ষীরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন। দক্ষিণ সুদানে কর্মরত বাংলাদেশের নারী শান্তিরক্ষীরা অভিযান ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি হিসেবে ফোর্স কমান্ডারের প্রশংসাপত্রও পেয়েছেন। গতবছরের ডিসেম্বরে তাদের এই প্রশংসাপত্র দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ১৯ সদস্যের একটি নারী কোম্পানি মোতায়েন করা হয়। যারা ইউএন মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনা কন্টিনজেন্ট ব্যানব্যাট-৩ এর অন্তর্ভুক্ত। এ দলে রয়েছেন তিনজন নারী অফিসারসহ ১৬ জন নারী সৈনিক। মোতায়েনের পর থেকে তারা কন্টিনজেন্টের সঙ্গে বিভিন্ন অভিযান ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিয়ে আসছেন। পুরুষ সহযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করে যাচ্ছেন নারী শান্তিরক্ষীরা।
১৯৮৮ সাল থেকে জাতসিংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিয়ে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা সর্বোচ্চ পেশাদার মনোভাব, আনুগত্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। সেইসঙ্গে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তারা।
বিশ্ব শান্তির তরে এ পর্যন্ত বাংলাদশের পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর ১৫৩ জন শান্তিরক্ষী প্রাণ দিয়েছেন। তাদের এই আত্মত্যাগ বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে করেছে আরও গৌরবান্বিত।
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের প্রতি জাতিসংঘের এত আগ্রহ কেন জানতে চাইলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন বিরোধপূর্ণ স্থানে শান্তি, সম্পৃতি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সব সময় অঙ্গীকারাবদ্ধ। আর এই দৃঢ় অঙ্গীকার সমুন্নত রাখতে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শীর্ষ শান্তিরক্ষী পাঠানো দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এর আগেও ২০০১, ২০০৫, ২০১১, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বাহিনী মোতায়নে প্রথম হয়ে বিরল কৃতিত্বের অংশীদার হয়েছিলাম আমরা।
একই বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি মো. সোহেল রানা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং যেকোনও পরিস্থিতিতে দ্রুত রেন্সপন্স করাসহ পেশাদারিত্বের সঙ্গে শান্তিরক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রতি জাতিসংঘের আগ্রহ রয়েছে। বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের ২২ জন সদস্য জীবন দিয়ে দেশকে গৌরাবান্বিত করেছেন।