রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম | স্বাস্থ্যকথা » বাংলাদেশে টিকা দিতে প্রস্তুত হাজারো কেন্দ্র
বাংলাদেশে টিকা দিতে প্রস্তুত হাজারো কেন্দ্র
বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদক ঢাকাঃ দেশে রোববার থেকে বাংলাদেশের সব জেলায় শুরু হচ্ছে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম৷ সারাদেশের এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে রোববার টিকা দেওয়া হবে৷ একটি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ১৫০ জনকে টিকা দেওয়া যাবে৷
সক্ষমতা অনুযায়ী প্রথম দিন দেড় লাখ মানুষ টিকা নিতে পারবেন৷ শনিবার পর্যন্ত সারাদেশে টিকা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন তিন লাখ ২৮ হাজার জন৷ এদিন প্রধান বিচারপতি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সচিবদের টিকা নেওয়ার কথা রয়ছে৷স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম জানান, ঢাকায় ৫০টি স্থানে টিকাদান কার্যক্রম চলবে৷ সেখানে কাজ করবে স্বাস্থ্যকর্মীদের ৩০০ জন৷ ঢাকার বাইরে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলিয়ে ৯৫৫টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে৷ এসব জায়গায় এক হাজার ৯১০টি দল টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করবে৷ দুইজন স্বাস্থ্যকর্মী ও দুইজন স্বেচ্ছাসেবক মিলিয়ে প্রতিটি দলে চারজন সদস্য থাকবেন৷ প্রত্যেকটি দলের স্বাস্থ্যকর্মীরা সর্বোচ্চ ১৫০ জনকে টিকা প্রয়োগ করতে পারবেন৷ সে হিসেবে সব মিলিয়ে প্রথম দিনে দেড় লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷ সকাল আটটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম চলবে৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও অধিদপ্তরের কথা মিলছে না
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, কেন্দ্রে এসেও যাতে নিবন্ধন ও টিকা নেওয়া যায় সেই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে টিকা নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে আনতে হবে৷ টিকাদানের আগে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারলে টিকাগ্রহীতার সব তথ্য রেখে দেওয়া হবে, স্বাস্থ্যকর্মীরা পরে তা ডেটাবেইজে তুলে দেবেন৷ নিবন্ধন করতে পারেননি, কিন্তু কেন্দ্রে যারা আসবেন তাদের ফেরত দেওয়া যাবে না বলে জানান তিনি৷ অনেকের কাছে স্মার্টফোন নেই, অনেকে নিবন্ধন করতে পারবেন না৷ এ কারণে চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে মেয়র-এমপিরা মানুষকে কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন, টিকা দেবেন ও নিবন্ধন করাবেন৷ আগে থেকে নিবন্ধন ছাড়া কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়ার সুযোগের কথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী বললেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় এমন কিছু নেই৷ ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, যাদের কাছে স্মার্টফোন নেই তারা কেন্দ্রে গেলে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেবেন৷ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে থাকা মোবাইল ফোনে পরবর্তীতে নির্দেশনা যাবে, তিনি কবে টিকা নেবেন৷ তাৎক্ষনিকভাবে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই বলেই জানালেন ডা. নাজমুল৷
সারাদেশের সিভিল সার্জনদের কাছেও এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে৷ মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব সম্প্রতি তাদের সঙ্গে বৈঠক করে বলেছেন, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ কেন্দ্রে এলে তাকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেওয়া হবে৷ কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে টিকা নিতে পারবেন না৷ কবে টিকা পাবেন সেটা তার মোবাইল ফোনে পরে বার্তা পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে৷
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, রোববার সকাল ১০টায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে ৬৪ জেলার টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন৷ যারা টিকা নিবেন তাদের এক ঘণ্টা কেন্দ্রে থাকতে হবে৷ স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ নেওয়ার পর তারা বাসায় ফিরবেন৷রোববার ঢাকার শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টিকা নেবেন৷ প্রধান বিচারপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সকালে টিকা নেবেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷ দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে টিকা নিবেন৷ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিন্স) ও হাসপাতালে, কেবিনেট সচিব টিকা নেবেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি কেন্দ্রে৷
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, সরকারের অন্য মন্ত্রী, এমপিরা মহাখালীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে টিকা নেবেন৷ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সচিবালয় ক্লিনিক এবং সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, আইনজীবীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা নিতে পারবেন৷ এর বাইরেও সবাই নিজের পছন্দমতো জায়গা থেকে টিকা নিতে পারবেন৷
ভারত সরকারের উপহার হিসেবে ২০ লাখ ও ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী ৫০ লাখ ডোজ টিকা আগেই দেশে পৌঁছেছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকার দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে৷ প্রতিজনকে দেওয়া হবে দুই ডোজ টিকা৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, প্রথম মাসে ৩৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে৷