শুক্রবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | শিরোনাম | সাবলিড » সৌদি-ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের
সৌদি-ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের
বিবিসি২৪নিউজ, ফরিদা ইয়াসমিন ওয়াশিংটন থেকেঃ ইয়েমেনে চলমান যু্দ্ধে মিত্রদের সমর্থন দেয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ছয় বছর ধরে চলতে থাকা এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত এক লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে ধারণা করা হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেয়ার পর পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রথম ভাষণে বলেন, “ইয়েমেনের যুদ্ধ বন্ধ হতে হবে।”
মি. বাইডেনের দুই জন পূর্বসূরির সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের দমনে সৌদি আরবের পরিচালিত অভিযানকে সমর্থন দিয়ে আসছে।
ওই সংঘাত ইয়েমেনের লাখ লাখ নাগরিককে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছে।দুর্বল ইয়েমেন সরকার এবং হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে এই সংঘাতের শুরু ২০১৪ সালে।
এক বছর পর সংঘাতের তীব্রতা বৃদ্ধি পায় যখন সৌদি আরব ও আটটি আরব দেশের জোট হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এতে সমর্থন দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে অন্যান্য বিষয়ে পরিবর্তনের ঘোষণাও দেন মি. বাইডেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি সংখ্যক শরণার্থী গ্রহণের সিদ্ধান্তও।ইয়েমেন সংক্রান্ত ঘোষণার অর্থ কী?
হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার মি. বাইডেনের দেয়া ঘোষণা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযানে সমর্থন দেয়া বন্ধ করবে।
পাশাপাশি সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে নির্ভুলভাবে আঘাত করতে সক্ষম, এমন যুদ্ধাস্ত্র বিক্রিও বন্ধ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে আরব উপদ্বীপ অঞ্চলে আল কায়েদার বিরুদ্ধে চলমান অভিযান এই সিদ্ধান্তে প্রভাবিত হবে না।
সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে অস্ত্র বিক্রির ওপর এরই মধ্যে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাইডেন প্রশাসন।
জাতিসংঘের ভাষ্য অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ইয়েমেন। সেখানকার জনসংখ্যার ৮০ ভাগেরই সহায়তা বা সুরক্ষা প্রয়োজন।
জাতিসংঘ বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব-সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয় চলছে ইয়েমেনে। প্রায় ছয় বছর আগে ইয়েমেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথমবারের মত যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছে।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন বন্ধ হলে ইয়েমেনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ হবে না, তবে এই সিদ্ধান্ত রিয়াদ এবং আবুধাবির নেতাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা দেবে।
ইয়েমেনীদের পাশাপাশি পশ্চিমা কূটনীতিকরাও যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযানে সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এর একটি কারণ ছিল, ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তির কারণে সৃষ্ট সৌদি আরবের ক্ষোভ সামাল দেয়া।
এখন ইয়েমেন এবং ইরানে নতুন মার্কিন দূতদের কাজ হবে ইয়েমেনের যুদ্ধ থামানো এবং যুদ্ধের একটি মূল কারণ আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব নিরসনের চেষ্টা করা।