বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » খেলাধুলা | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » বাংলাদেশ প্রথমেেই রানআউটের ধাক্কা
বাংলাদেশ প্রথমেেই রানআউটের ধাক্কা
বিবিসি২৪নিউজ, নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকাঃ মুশফিকুর রহিমকে পেরোতে মাত্র ৯ রান দরকার ছিল তাঁর। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলটা যখন স্কয়ার লেগে ঠেলে দিতেই সেই আনন্দও পেয়ে গেলেন তামিম ইকবাল। মুশফিকুর রহিমকে পেরিয়ে তামিম আবার হয়ে গেলেন টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করা ব্যাটসম্যান।
কিন্তু ওই আনন্দটুকু পেতে না পেতেই শেষ তামিমের ইনিংস। পরের ওভারে কেমার রোচের বলে বোল্ড হয়ে গেলেন বাঁহাতি ওপেনার। ৯ রানেই আউট হয়ে গেছেন। এরপর সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন মিলে দ্বিতীয় উইকেটে বড় জুটির স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু এর মধ্যে এল রানআউটের ধাক্কা। দুই ব্যাটসম্যানের ভুল বোঝাবুঝির মূল্য দিয়ে আউট হয়ে গেছেন নাজমুল (২৫)। এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৬৬। ক্রিজে আছেন সাদমান ইসলাম (৩২*) ও অধিনায়ক মুমিনুল হক (০*)।
তামিম আউট হওয়ার পর থেকে নাজমুল ও সাদমান মিলে দারুণভাবে সামলে নিয়েছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল শুরুর দিকে নাজমুলকে ভুগিয়েছেন কিছুটা, স্পিনার রাকিম কর্নওয়ালের বলে কয়েকবার পরাস্ত হয়েছেন ওপেনার সাদমান। কিন্তু সেসব সামলে দলের ইনিংসটাকে টেনে নিয়ে চলেন দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৩ রান এসেছে এই জুটিতে।
ধীরস্থিরভাবে এগোতে থাকা জুটিটা হঠাৎই মুহুর্তের ভুল বোঝাবুঝিতে শেষ হয়ে গেল। কাইল মেয়ার্সের বল ফাইন লেগে ঠেলে দিয়েছিলেন সাদমান। তাঁর দৌড় দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, দুই রান নিতে চান তিনি। কিন্তু নাজমুলের চিন্তাটা ভিন্ন ছিল। দুই রান হতে পারত, কিন্তু দুই ব্যাটসম্যানের যোগাযোগ-বিভ্রাটে আর হলো না। নন-স্ট্রাইক থেকে স্ট্রাইকার প্রান্তে গিয়ে নাজমুল বের হতে দেরি করেন, ওদিকে ফাইন লেগে থাকা ফিল্ডারের কাছ থেকে উইকেটকিপার হয়ে বল বোলারের হাতে। মেয়ার্স যখন নন-স্ট্রাইক প্রান্তের উইকেট ভেঙে দিচ্ছেন, নাজমুলের ততক্ষণে বোঝা হয়ে গেছে, এই লড়াইয়ে জয় আর আসবে না। আউট হয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এর আগে তামিম আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে কী আত্মবিশ্বাসীই না লাগছিল! ম্যাচের প্রথম বলেই কেমার রোচকে কাভারে দারুণ ড্রাইভে চার মেরে শুরু করেন সাদমান। এখন পর্যন্ত তরুণ এই ওপেনারের ব্যাটে দারুণ নিয়ন্ত্রণ চোখে পড়ছে।
পরের ওভারে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের ফুল টসে দারুণ ফ্লিকে আবার চার মারেন সাদমান। দেখেশুনে বাজে বলে মারার পরিকল্পনাটা এর পরের ওভারে কাজে লাগিয়েছেন তামিমও। কেমার রোচের অফ স্টাম্পের বাইরের ফুল লেংথ বলকে কাভারে দারুণ শটে বাউন্ডারিছাড়া করে তামিম খোলেন রানের খাতা।
এর পরের ওভারে আবার নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিং। গ্যাব্রিয়েলের লেগ স্টাম্পের বাইরের বলকে আলতোভাবে গ্ল্যান্স করে ফাইন লেগে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দেন তামিম।
তখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাটিং কী নিয়ন্ত্রিত লাগছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা ভিন্ন কিছুর চেষ্টা অবশ্য করে যাচ্ছিলেন। তিন স্লিপ তো ছিলই, সাদমানের পাঁজর বরাবর বলে তাঁর স্কয়ার লেগে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা দেখে গ্যাব্রিয়েল শর্ট লেগে একজন ফিল্ডারও নিয়ে আসেন। ওদিকে রোচ বারবার রাউন্ড দ্য উইকেটে এসে কোণ তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন, বলকে স্টাম্পের দিকে ঢোকানোর চেষ্টা করছিলেন।
সেই চেষ্টাতেই এল সাফল্য। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে রোচের ভেতরে ঢোকা বলে পরাস্ত তামিম। বলটা পিচে পড়ার পর তামিমের অনুমানের চেয়ে বেশিই ভেতরে ঢুকেছিল, বলের লাইনে পা নেওয়ায় তাতে একটু ভুল হয়ে যায় তামিমের। বল তাঁর ব্যাটের ভেতরের দিকে লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে।
নতুন ব্যাটসম্যান নাজমুলকে আসার পর থেকেই একের পর এক বাউন্সারে ‘স্বাগত’ জানাচ্ছেন গ্যাব্রিয়েল।