বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » রাশিয়ার বিরোধী নেতা নাভালনির সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড
রাশিয়ার বিরোধী নেতা নাভালনির সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রাশিয়ার বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনিকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন মস্কোর একটি আদালত। আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
২০১৪ সালের জালিয়াতির একটি মামলায় স্থগিত সাজার শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে নাভালনিকে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
জালিয়াতির মামলায় নাভালনির স্থগিত সাজা কারাদণ্ডে রূপান্তর করা হয়। এ মামলায় তিনি ইতিমধ্যে এক বছর গৃহবন্দী ছিলেন। সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ডের মেয়াদ থেকে এই এক বছর বাদ যাবে।
মামলাটিকে বানোয়াট হিসেবে বর্ণনা করেছেন নাভালনি। আদালতে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিষ প্রয়োগকারী হিসেবে অভিহিত করেছেন।
গত ১৭ জানুয়ারি জার্মানির বার্লিন থেকে রাশিয়ার মস্কোয় ফেরেন নাভালনি। তাঁকে বিমানবন্দরেই গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।
গত বছরের আগস্টে রাশিয়ায় বিষ প্রয়োগের শিকার হয়ে নাভালনি জার্মানির বার্লিনে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফেরেন।
নাভালনির সাজার রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক বিক্ষোভের ডাক দেন তাঁর সমর্থকেরা। তাঁর সমর্থনে রাশিয়াজুড়ে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেন।
ব্যাপক পুলিশি উপস্থিতির মধ্যেই নাভালনির হাজারো সমর্থক মস্কোর কেন্দ্রস্থল ও সেন্ট পিটার্সবার্গে জড়ো হন।
নাভালনিকে কারাদণ্ড দেওয়ার প্রতিবাদে মস্কোয় চলা বিক্ষোভে সহিংসতা হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, নাভালনির সমর্থনে যাঁরা মস্কোর রাজপথে নেমেছেন, তাঁদের বেদম মারধর করছে পুলিশ। অনেক বিক্ষোভকারীকে তারা গ্রেপ্তার করেছে।
একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, শুধু মস্কোতেই সাড়ে ৮০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নাভালনির সাজার রায়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা কাউন্সিল অব ইউরোপ বলেছে, এই রায় সব বিশ্বাসযোগ্যতার বাইরে।
কাউন্সিল অব ইউরোপ আরও বলেছে, এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘনকে আরও তীব্রতর করেনি, তারা রাশিয়ার সব নাগরিকের অধিকার রক্ষার বিষয়কে অবজ্ঞা করার একটি বার্তা দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব এ রায়কে ন্যায়ভ্রষ্ট হিসেবে অভিহিত করেছেন।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস বলেছেন, এ রায় নাগরিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের জন্য একটা গুরুতর আঘাত।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন রাশিয়ার বিরোধী নেতা নাভালনির অবিলম্বে ও শর্তহীন মুক্তি দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়া তার নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির ব্যাপারে করণীয় নিয়ে তিনি মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা পশ্চিমা দেশগুলোর এ প্রতিক্রিয়ার জবাব দিয়েছেন। তিনি পশ্চিমাদের নিজেদের সমস্যা নিয়ে কাজ করতে বলেছেন। তিনি বলেন, একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমাদের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।
গত বছরের আগস্টে সাইবেরিয়ার টমসক শহর থেকে উড়োজাহাজে করে মস্কোয় ফেরার সময় নাভালনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজ সাইবেরিয়ার ওমস্কে জরুরি অবতরণ করে। সেখানকার একটি হাসপাতালে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সেখানকার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। পরে তাঁকে চিকিৎসার জন্য জার্মানির বার্লিনে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে তিনি ধীরে ধীরে সেরে ওঠেন।
পরে জার্মানির বিশেষজ্ঞরা জানান, নাভালনিকে রাশিয়ান নার্ভ এজেন্ট ‘নোভিচক’ প্রয়োগ করা হয়েছিল। বিষ প্রয়োগের জন্য পুতিনকে দায়ী করেন নাভালনি। তবে পুতিন এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।