মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনঃ মিয়ানমার-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক অনিশ্চিত
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনঃ মিয়ানমার-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক অনিশ্চিত
বিবিসি২৪নিউজ, বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকাঃ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করায় দেশটির সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের যে আলোচনা চলছিল তা বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চলতি মাসের শুরুতে দুই দেশের মধ্যে ওয়ার্কিং কমিটির যে বৈঠকের কথা ছিল তা অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে ৪ ফেব্রুয়ারি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তবে পররাষ্ট্র সচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকারে যারাই থাকুক, প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা আগের মতোই এগোবে। আগের পরিকল্পনা ধরেই সংকটের সমাধান চায় ঢাকা।’
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জরুরি বৈঠকে বসছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বৈঠকটি আগেই নির্ধারণ ছিল। তবে বর্তমান পরিপেক্ষিতে বৈঠকটি এগিয়ে আনা হয়েছে। আমরা আমাদের জাতিসংঘে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে বলেছি, বৈঠকে সম্প্রতি ইস্যুটির প্রাধন্যে যেন রোহিঙ্গা ইস্যু চাপা পড়ে না যায়।’
মিয়ানমারে থাকা বাংলাদেশি কূটনীতিক ও অন্যান্যদের চলাচল এখনো নিয়ন্ত্রিত বলেও জানান মাসুদ বিন মোমেন।
অভ্যুত্থানের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পূর্ব নির্ধারিত আলোচনার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর ব্যাপারে মিয়ানমার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি চীনের উদ্যোগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করে বাংলাদেশ। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হওয়ার সিদ্ধান্তও হয়।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে পরের কয়েক মাসে গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে আসে। সবমিলিয়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নিয়ে সংকটে রয়েছে বাংলাদেশ।
বিভিন্ন সময় মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও গত সাড়ে তিন বছরে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি। সবশেষ চীনের মধ্যস্থতায় মিয়ানমার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর আশ্বাস দিয়েছিল। যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক শেষে প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে বলে আশা করছিল বাংলাদেশ। তবে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংকটে পড়ল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।