সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » শিরোনাম | সাবলিড | স্বাস্থ্যকথা » ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট করোনা ভ্যাকসিন রপ্তানি করতে পারবে না
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট করোনা ভ্যাকসিন রপ্তানি করতে পারবে না
বিবিসি২৪নিউজ,অমিত ঘোষ, দিল্লি থেকেঃ ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট তাদের তৈরি টিকা এখন বাইরে রপ্তানি করতে পারবে না - এমন একটি খবর প্রকাশ হবার পর বাংলাদেশে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ আগামী মাসের শুরুতে যে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে সেটি এই সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকেই পাওয়ার কথা। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ হিসেবে পুরো তিন কোটি টিকার জন্য অগ্রিম হিসেবে ৬শ কোটি টাকা সেরামের অ্যাকাউন্টে রবিবার জমাও দেয়ার কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশের সরকার।
কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদার পুনেওয়ালার বরাত দিয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এবং ভারত ও বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তারা এই মুহূর্তে টিকা রপ্তানি করতে পারছে না।
ভারতীয় একটি বানিজ্য বিষয়ক টিভি চ্যানেল সিএনবিসি টিভি এইটিন-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে মি. পুনাওয়ালা বলেন, এখনো এ বিষয়ে তারা কোন লিখিত নির্দেশনা না পেলেও কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনায় তারা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।
সেখানে তিনি বলেন, “আমাদের যে লাইসেন্স রয়েছে সেটি অনুযায়ী, এই মুহূর্তে আমরা রপ্তানি করতে পারবো না এবং খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারবো না।”
সাক্ষাৎকারে মি. পুনাওয়ালা এও বলেন যে, তাদের কাছে ভারত সরকারসহ সবাইকে দেয়ার মতো পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের মজুদ রয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এই খবরটি তিনি বাংলাদেশের গণমাধ্যম মারফৎ পেয়েছেন।
“সাংবাদিকদের কাছ থেকেই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে জানতে পারি। এরপর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে তারা এ ব্যাপারে কিছু জানে না। কী হয়েছে তারা জানার চেষ্টা করছে। আমরা এ নিয়ে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি”, বিবিসিকে বলেন মি. মোমেন।
তবে মি. মোমেন আশা প্রকাশ করেন, “ভারত যদি নিষেধাজ্ঞা দেয়ও তাহলেও তাদের সাথে বাংলাদেশের যে উষ্ণ সম্পর্ক, তাতে আমাদের টিকা পেতে কোন সমস্যা হবে না বলে আশা করি”।গত দোসরা জানুয়ারি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দেয় ভারতের সরকার।
ভ্যাকসিন রপ্তানি নিয়ে এরইমধ্যে সেরাম ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ, সৌদি আরব ও মরক্কোর সাথে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করেছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ৩রা জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকার ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার জন্য ছয়’শ কোটি টাকার বেশি জমা দেয়ার কথা এরইমধ্যে জানিয়েছে দেশটি। বিনিময়ে সেরাম ইন্সটিটিউট একটা ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে।
এর আগে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছিল যে, চুক্তির ধারা অনুযায়ী তারা যদি আগামী জুনের মধ্যে টিকা দিতে না পারে তাহলে বাংলাদেশে অগ্রিম এই টাকা ফেরত নেবে।
সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ টিকা আনার কথা ছিল।
চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইন্সটিটিউট ছয়মাসের মধ্যে তিন কোটি টিকা দেবে বাংলাদেশকে। প্রতিমাসে ৫০ লাখ টিকা আসবে।
আর উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সেরাম ইন্সটিটিউট এক বিলিয়ন ডোজ তৈরি করার কথা রয়েছে।