রবিবার, ১ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | ইউরোপ | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ব্রিটেনে আবারো এক মাসের লকডাউন
ব্রিটেনে আবারো এক মাসের লকডাউন
বিবিসি২৪নিউজ,রুপা শামীমা, লন্ডন থেকেঃ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যুক্তরাজ্যের, নতুন করে এক মাসের লকডাউন ঘোষণার বার্তাই দিয়েছেন।এবারের ক্রিসমাস বেশ ভিন্ন ধরনের হতে পারে। আসছে দিনগুলোর জন্য বেশি ভীতিকর বার্তা দিয়েছেন তিনি।
ডাউনিং স্ট্রিটে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, সকল রেস্তোরাঁ, ব্যায়ামাগার, পানশালা এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনে জরুরি নয় এমন দোকানপাট চার সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে।
তবে গতবারের লকডাউনের সাথে খানিকটা তফাৎ থাকবে এবার। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকবে। ডিসেম্বরের ২ তারিখের পর লকডাউন শিথিল করা হবে।
মি. জনসন বলেছেন, “এই বছর ক্রিসমাস হয়ত খুবই ভিন্ন হবে। কিন্তু আমি আন্তরিকভাবে আশা করি যে এখন কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে অন্তত আমরা পরিবারগুলোকে মিলিত হওয়ার একটা সুযোগ করে দিতে পারবো।”
“মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিন গড়ে কয়েক হাজার হতে পারে, এমন পূর্বাভাস কোন দায়িত্ববান প্রধানমন্ত্রী উপেক্ষা করতে পারে না।”
এই মৃত্যুর হার গত এপ্রিলের তুলনায় আরও খারাপ হতে চলেছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বরিস জনসন।
এমনকি দক্ষিণ ও পশ্চিমের যেসব এলাকায় সংক্রমণ সবচেয়ে কম, সেখানেও হাসপাতালগুলোর সামর্থ্যের ঊর্ধ্বে চলে যেতে পারে পরিস্থিতি।
“কোন রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হবে, কে অক্সিজেন পাবে আর কে পাবে না, কে বাঁচবে আর কে মরবে, হয়ত এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে চিকিৎসকদের।”
ব্যবসা বাণিজ্যের উপর যে প্রভাব এতে পড়বে সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বরিস জনসন। তবে ৮০ শতাংশ কর্মীর বেতন পরিশোধের বিষয়টি নভেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
যেসব বিধিনিষেধ থাকছে
বাড়িতে বসে করা সম্ভব নয় এমন কাজ ব্যতীত মানুষজনকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে।
খাদ্যদ্রব্য, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয়ের জন্য, চিকিৎসাজনিত কারণে ব্যায়াম, স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করার জন্য মানুষজন ঘর থেকে বের হতে পারবেন।
শারীরিকভাবে নাজুক ও নিয়মিত যত্ন প্রয়োজন হয় এমন ব্যক্তিদের সেবা করার দরকার হলেও ঘর থেকে বের হওয়া যাবে।
ঘরের ভেতরে, এমনকি বাগানেও কোন ধরনের ব্যক্তিগত আয়োজন করা যাবে না।দৈনন্দিন প্রয়োজনে জরুরি নয় এমন সবকিছু বন্ধ থাকবে।
কোন ব্যক্তি বাড়ির বাইরে অন্য একটি পরিবারের একজন ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।
সকল রেস্তোরাঁ, ব্যায়ামাগার, পানশালা এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনে জরুরি নয় এমন দোকানপাট বন্ধ থাকবে তবে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার সংগ্রহ করে বাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে।
সকল ধরনের বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
কারখানায় উৎপাদন, ভবন নির্মাণের কাজ চালানো যাবে।
বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে এমন পরিবারের শিশুরা যাতায়াত করতে পারবে।
যে কারণে আবারো কঠোর ব্যবস্থা
ফ্রান্স ও জার্মানিসহ ইউরোপের বেশ কটি দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি উল্টো পথে যাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যেও দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সম্পর্কে শঙ্কা তৈরি হয়েছে বেশ কিছুদিন ধরেই।
বরিস জনসনকে এরকম পরিস্থিতি ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছিল।
ছয় সপ্তাহ আগে ব্রিটেনের বিরোধী দল, এমনকি মি. জনসনের মন্ত্রীসভার সদস্যরা পর্যন্ত সীমিত মাত্রায় লকডাউনের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।
যুক্তরাজ্যে শনাক্তের সংখ্যা দশ লাখ ছাড়িয়েছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২২ হাজার নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে। প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা গড়ে প্রায় সাড়ে তিনশ।