মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন তিন জন
এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন তিন জন
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে তিন বিজ্ঞানীকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী হিসেবে তিনজনের নাম ঘোষণা করে। তাঁরা হলেন, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রজার পেনরোজ, জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর এক্সট্রাটেরিস্ট্রিয়াল ফিজিকস ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেইনহার্ড গেনজেল এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দ্রে গেজ।
এ সম্পর্কিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নোবেল কমিটি জানায়, ‘কৃষ্ণগহ্বর আপেক্ষিকতা তত্ত্বের একটি শক্তিশালী অনুমান’ শীর্ষক আবিষ্কারের জন্য রজার পেনরোজকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। তিনি নোবেল পুরস্কারের অর্ধেক পাবেন। পুরস্কারে মোট মূল্যমান ১ কোটি সুইডিশ ক্রোনার ( প্রায় ১১ লাখ ২৩ হাজার ডলার)। পুরস্কারের বাকি অর্ধেক পাবেন রেইনহার্ড গেনজেল ও আন্দ্রে গেজ। আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রে বড় ধরনের একটি কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব আবিষ্কারের কারণে তাঁদের এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
মহাবিশ্বের সবচেয়ে চমকপ্রদ ধারণা কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের জন্য এক ব্রিটিশ ও দুই মার্কিন বিজ্ঞানীকে এ বছর নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলো। তিনজনই এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। রজার পেনরোজ তাঁর গবেষণার মধ্য দিয়ে দেখিয়েছেন, সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বই কৃষ্ণগহ্বরের জন্ম-প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দেয়। আর রেইনহার্ড গেনজেল ও আন্দ্রে গেজ আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রে এমন এক অদৃশ্য ও ভীষণ ভারী বস্তুর অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন, যা এর আওতাধীন তারকারাজির গতিপথকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই অদৃশ্য কিন্তু ভীষণ ভারী বস্তুটি আদতে শক্তিশালী কোনো কৃষ্ণগহ্বর বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন (বাম থেকে) রজার পেনরোজ, রেইনহার্ড গেনজেল ও আন্দ্রে গেজ
এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন (বাম থেকে) রজার পেনরোজ, রেইনহার্ড গেনজেল ও আন্দ্রে গেজছবি: নোবেলপ্রাইজ ডট ওআরজি
কিংবদন্তি বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বহু বছর আগে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব দিয়ে গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কৃষ্ণগহ্বর এই তত্ত্বের সরাসরি ধারাবাহিকতার একটি অংশ—এমন বিষয়টিই গাণিতিক যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছেন রজার পেনরোজ। আইনস্টাইন যখন এই আপেক্ষিকতার তত্ত্ব দেন, তারপরও তিনি কখনো কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতেন না। মজার বিষয় হলো, এখন তাঁর তত্ত্বের মধ্যেই এই কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্বের ইঙ্গিত রয়েছে বলে প্রমাণ হাজির করে নোবেল পেলেন রজার পেনরোজ।
ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্যার রজার পেনরোজ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের ইমেরিটাস রোজ বল অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন। ১৯৩১ সালে জন্ম নেওয়া এই বিজ্ঞানী একই সঙ্গে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াহেম কলেজের ইমেরিটাস ফেলো এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জনস কলেজের সম্মানিত ফেলো। ১৯৫৭ সালে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য তিনি এরই মধ্যে বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
কৃষ্ণগহ্বর হচ্ছে এমন এক অতিদানবীয় ভরবিশিষ্ট বস্তু, যার আকার ভরের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় ঘনত্ব থাকে অতি উচ্চ। ফলে এটি সবকিছুকেই নিজের কেন্দ্রের দিকে টেনে নেয়। এমনকি আলোও এর আকর্ষণকে অগ্রাহ্য করতে পারে না বলে এ ধরনের বস্তু থেকে কোনো আলো বের হয় না। ফলে এটি দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকে। তীব্র আকর্ষণই এর অস্তিত্বের প্রাথমিক প্রমাণ হিসেবে হাজির হয়।