রবিবার, ৩০ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » শিনজো আবের উত্তরসূরি কে?
শিনজো আবের উত্তরসূরি কে?
বিবিসি২৪নিউজ, নাটাসা গোল্ড, জাপান থেকেঃ জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের স্বাস্থ্যগত কারণে হঠাৎ করে পদ থেকে সরে দাঁড়ানোয় তার দল লিবারাল ডেমোক্রাটিক পার্টিকে (এলডিপি) এখন নতুন নেতা নির্বাচন করতে হবে। পরে পার্লামেন্টে ভোটের মাধ্যমে নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়া হবে।
জাপানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এলডিপি সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই দলীয় সভাপতিই পার্লামেন্টের ভোটে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
নতুন প্রধানমন্ত্রী না পাওয়া পর্যন্ত আবের মন্ত্রিসভাই সরকার পরিচালনা করতে পারবে। কিন্তু তারা কোনো নীতি নির্ধারণ করতে পারবেন না। নতুন প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ আবের মেয়াদ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। তারপর আবার নতুন করে জাতীয় নির্বাচন হবে।
জাপানে সাধারণত কোনো দলকে অন্তত একমাস আগে নতুন নেতা নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হয়। পার্লামেন্টে দলের সদস্যরা ছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা দলীয় সভাপতি নির্বাচনে ভোট দেন। কিন্তু হঠাৎ পদত্যাগের ক্ষেত্রে ‘যত দ্রুত সম্ভব’ ভোটের একটি তারিখ ঘোষণা করা যায়।
কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে এলডিপি এখনো তার ঘোষণা দেয়নি। শনিবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন সভাপতি নির্বাচনের ভোট হতে পারে।
এলডিপিতে দারুণ জনপ্রিয় শিনজো আবের খুব কম সমালোচকদের অন্যতম সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। দলে বা দলীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের কাছে তাই ইশবা ততটা পছন্দের নেতা নন। কিন্তু অন্যান্য দলের পার্লামেন্ট সদস্যরা ইশিবাকে পছন্দ করায় সম্ভাব্য নতুন প্রধানমন্ত্রীর জরিপে তিনি সব সময়ই এগিয়ে থাকেন।
মিষ্টভাষী প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ইশিবা এলডিপিতে তার সমর্থক নেতাদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করেছেন এবং নতুন সভাপতি হওয়ার দৌড়ে নামার ইঙ্গিত দিয়েছেন। আগামী সপ্তাহে এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসতে পারে।
তৃণমূলের নেতাদের জোর সমর্থন নিয়ে ইশিবা ২০১২ সালের সভাপতি নির্বাচনের প্রথম দফা ভোটে আবে কে হারিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় শুধু এমপিদের ভোটে তিনি আবের কাছে হেরে যান। অবশ্য ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি আবের কাছে পাত্তাই পাননি।
৬৩ বছরে কিশিদা ২০১২-২০১৭ মেয়াদে আবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। যদিও কূটনৈতিক নানা বিষয়ের নিয়ন্ত্রণ আবে নিজের হাতেই রাখতেন। হিরোশিমা থেকে আসা কিশিদাকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে পছন্দ করেন আবে। কিন্তু ভোটের জরিপে কিশিদার অবস্থান বেশ পেছনে।
আবের পদত্যাগের বিষয়েও কিশিদা আগে থেকে কোনো আভাস পাননি বলেই মনে হচ্ছে। কারণ, পদত্যাগের ঘোষণায় কিশিদা বেশ অবাক হন। তার আচরণই বলে দিয়েছে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না। আবের পদত্যাগের খবর যখন প্রকাশ পায় তখন কিশিদা পূর্ব জাপানে সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন। আবের পদত্যাগের খবর শোনার পরপরই তিনি ‘কি ঘটেছে আমাকে তা নিশ্চিত হতে হবে’ বলে দ্রুত টোকিওগামী ট্রেনে রওয়ানা হন। পরে টোকিওতে সাংবাদিকরা যখন তার প্রতিক্রিয়া জানতে চায় তখন তিনি বলেন, তিনি নতুন নেতা হওয়ার দৌড়ে নামবেন।
তৃণমূল রাজনীতি থেকে উঠে আসা ৭১ বছরের সুগা আবের প্রথম মেয়াদে (২০০৬-০৭) তার অনুগত লেফটেন্যান্ট ছিলেন। আবে কে যারা ২০১২ সালে পুনরায় সভাপতি হওয়ার দৌড়ে নামার অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন সুগা সেই দলের একজন।
পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সুগাকে আবে তার মন্ত্রিসভার ‘চিফ কেবিনেট সেক্রেটারি’ করেন। প্রভাবশালী এ পদের মাধ্যমে তিনি নানামুখী ক্ষমতা পেয়েছেন। যেমন, তিনি সরকারের শীর্ষ মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেন, নীতি নির্ধারণে সহায়তা করেন এবং আমলাদেরও নিয়ন্ত্রণ করেন।
যদিও এখনো সুগা নতুন দলীয় প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে নামবেন না বলছেন। কিন্তু নিজের প্রচার ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছেন। গত সপ্তাহে তিনি অন্তত চারটি বড় মিডিয়া হাউজে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
৫৬ বছরের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তারো কোনোর খামখেয়ালী হিসেবে বদনাম আছে। কিন্তু তিনি আবের গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলো সমর্থন করেছেন। জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করা তারো কোনো ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে পারদর্শী। তিনি এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রশাসনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুনিচিরো কিওইজুমির ছেলে ৩৯ বছরের শিনজিরো বর্তমান সরকারের পরিবেশমন্ত্রী। অনেকেই তার মধ্যে ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে পান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য শিনজিরোর বয়স এখনো অনেক কম বলেও মনে করেন অনেকে।
বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৬৪ বছরের মোতেগি এর আগে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০১২ সালে আবে যখন আবারও প্রধানমন্ত্রী হন তখন মোতেগি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সামলেছেন। ওই সময়ে তিনি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি দ্য ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ নিয়ে জাপানের হলে আলোচনা সামলেছেন।
জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা সেকো নোদা কখনোই গোপন করেননি। অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক বিষয়ক সাবেক এই মন্ত্রী আবের কড়া সমালোচকদের একজন। তিনি নারী ক্ষমতায়ন নিয়েও কাজ