শুক্রবার, ২৮ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের পদত্যাগ
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের পদত্যাগ
বিবিসি২৪নিউজ,নাটাসা গোল্ড,জাপান থেকেঃ জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে অসুস্থতার কারণে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেয়ার সময় মি. আবে এক বছর আগেই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো এবং বেশকিছু রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পরার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল।
৬৫ বছর বয়সী শিনজো আবে জানান তার আলসারেটিভ কোলাইটিস রয়েছে এবং নতুন ওষুধ ব্যবহার করে তার চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বহু বছর থেকে আলসারেটিভ কোলাইটিস রোগে ভুগছেন, তবে সম্প্রতি তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দেয়ার বিষয়ে শিনজো আবের বর্তমান সরকার সম্প্রতি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। জাপানের অনেকেই মনে করেন করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দেয়ার ক্ষেত্রে এই সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সমন্বয় ছিল না।
এই মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য মি. আবে’র কোনো উত্তরাধিকারী নেই। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, মি. আবে বলেছেন তিনি তার সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করবেন না।
জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা এনএইচকে এর আগে জানিয়েছিল যে মি. আবে তার সরকারের জন্য সমস্যার কারণ হতে চান না।
২০১২ সালে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়া ৬৫ বছর বয়সী শিনজো আবে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে দায়িত্ব পালন করা জাপানি প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে ২০০৭ সালেও প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি আলসারেটিভ কোলাইটিসে ভুগতে থাকায় হঠাৎ পদত্যাগ করেছিলেন। কৈশোর থেকেই এই রোগে ভুগছেন মি আবে।
তার আগ্রাসী মুদ্রানীতির - যা ‘আবেনমিকস’ হিসেবে পরিচিত - মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চাঙ্গা করার পাশাপাশি কট্টর রক্ষণশীল এবং জাতীয়তাবাদী মতবাদের অনুসারী হিসেবেও শিনজো আবের খ্যাতি রয়েছে।
তিনি জাপানের প্রতিরক্ষা খাতকে শক্তিশালী করেছেন, প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ও বাড়িয়েছেন।
কেন তার পদত্যাগকে ঘিরে উদ্বেগ?
এক সপ্তাহের মধ্যে দু’বার হাসপাতালে যাওয়ার পর থেকেই মি. আবের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল।
তার দল ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কর্মকর্তারা এর আগে তার পদত্যাগের গুজব উড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেসময় তারা বলেছিলেন যে প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।
মি. আবে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে কী হত?
জাপানের আইন অনুযায়ী, মি. আবে যদি তার দায়িত্ব পালনে অপারগ হতেন তাহলে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব নিতেন। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী ঐ দায়িত্বে অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকতে পারতেন।
শিনজো আবে দায়িত্ব পালন করতে না পারলে জাপানের অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হবেন উপ প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী তারো আসো। এরপরে তালিকায় রয়েছেন প্রধান মন্ত্রীপরিষদ সচিব ইয়োশিহি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী চাইলেই নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান করতে না পারলেও দলের নতুন নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন চুক্তি এবং বাজেট প্রণয়নের মত বিষয়ে নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার রাখেন।
পদত্যাগের পর কী হবে?
এই পদত্যাগের ঘোষণা আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে তাদের দলের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য দলের ভেতরে ভোট হবে।
এরপর নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য সংসদীয় নির্বাচন হবে। তখন ঐ নির্বাচনের বিজয়ী ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকবেন।