সোমবার, ২৭ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ইইউর করোনা-চুক্তি কতটা কার্যকর হবে ?
ইইউর করোনা-চুক্তি কতটা কার্যকর হবে ?
বিবিসি২৪নিউজ,ইইউ প্রতিনিধি : করোনা সংকট নিরসনে অনেক রাজনীতিবিদ মনে করছেন,জন্য ইইউ-র চুক্তি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা৷ কিন্তু এটা কি ঐতিহাসিকভাবে ঠিক সিদ্ধান্ত? আন্দ্রেয়াস নোল তা মনে করেন না ৷
সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ইইউ-র পদক্ষেপ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আরো জোরদার করবে- এ আশা করা যেতেই পারে৷ আর কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট পরিস্থিতির মাঝে এটা সদস্য দেশগুলির মাঝে সংহতির বার্তা পাঠাবে, তা-ও ঠিক৷ দুর্বলকে সাহায্য করবে শক্তিমান৷ তবে সংহতির এমন উদ্যোগে সবার অংশগ্রহণ থাকা উচিত৷ এর মাধ্যমে ইউরোপে পপুলিস্টদের রাজনীতি কঠিন হবে, এ আশাও করা যেতে পারে৷ ব্রাসেলস থেকে যত টাকা যাবে, ইটালিতে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমবে মাত্তেও সালভিনির ভোট৷ আশা করা যেতে পারে, তার ইইউ-বিরোধী অবস্থানও দুর্বল হবে৷
করোনার দিনগুলোতে ভিন্ন দেশ ভিন্ন ব্যবস্থা বাসায় বসে উৎসবে অংশগ্রহণ
দক্ষিণ কোরিয়ায় বোরিয়ং মাড ফেস্টিভাল হচ্ছে অনলাইনে স্ট্রিমিং এর মাধ্যমে৷ শিশুরা এতে অংশ নিচ্ছে বাসায় বসেই৷ ঘরে তৈরি করা হয়েছে সুইমিং পুল, এর মধ্যে কাদার মধ্যে কাদা মেখে বসে আছে দুই শিশু৷ আর তাদের মা ল্যাপটপে তাদের দৃশ্য ধারণ করে দেখাচ্ছেন৷
অবশ্য দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, এমন সরল সমীকরণ অতীতে কখনো মেলেনি৷ বরং অতীত বিবেচনায় নিলে আমরা শুধু একটা মডেলই সফল হতে পারে বলে আশা করতে পারি, আর তা হলো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কিংবদন্তি মার্শাল প্ল্যানের আওতায় ইউরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গঠন করা সেই পুনরুদ্ধার তহবিল৷
যদিও এখন ইউরোপে পুনর্গঠন করতে হবে কিছু নেই বললেই চলে৷ খাদ্যঘাটতি নেই৷ তবে বেকারত্ব, কম কাজ করার সুবিধা, স্বাস্থ্যবিমা এবং অবসর ভাতার মতো কিছু খাতে অর্থসহায়তা দরকার৷
সংকট পরিস্থিতিতে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুব ব্যয়সাপেক্ষ বিষয়৷ এই খাতে ব্যয় করতে গিয়ে সব দেশেরই জাতীয় বাজেটে ইতিমধ্যে চাপ পড়তে শুরু করেছে৷
বেকারদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বা স্কিম নিয়ে কথা বললে মেয়াদ এবং প্রয়োজনীয় সহায়তার মাত্রার বিষয় উঠে আসবেই আলোচনায়৷ আবার অবসরের বয়স না জেনে অবসরভাতা নিয়ে আলোচনা করা যায় না৷
আরেকটা বিষয়, ইইউ সদস্য দেশগুলো, বিশেষ করে যেসব দেশ আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য অস্থির, তারা চায় না বাজেট সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে ইউরোপের বাইরে থেকে আসা মানুষেরা কোনো কথা বলুক৷
পুনরুদ্ধার চুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত রাজনীতিবিদরা আশা করছেন, অতীতের মতো এবারের তহবিলও ‘খারাপ ঋণ’ হয়ে যাবে না, এবার থাকবে ‘নতুন ভালো ঋণ’৷ এ কারণে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রকল্প নেয়া হয়েছে৷
অতীতের মতো এবারও স্পেনের সেই ভৌতিক বিমানবন্দর তৈরির মতো প্রকল্পে ইইউর অর্থ ঢালা হবে তা প্রত্যাশিত নয়৷ কিন্তু সেরকম যে হবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে? সেই আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে, কারণ, এবার আরো কম সময়ে আরো বেশি টাকা ব্যয় করতে হবে৷
ইইউর অনেক নাগরিক মনে করছেন, এবারও অনেক কিছু ভেস্তে যেতে পারে৷ দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভ চলছে বুলগেরিয়ায়৷ সে দেশের নাগরিকদের একাংশ মনে করে, ব্রাসেলসের টাকাও গলি-ঘুপচিতে ঢুকে যেতে পারে৷
ইউরোপের যেসব অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক ঐক্যের শক্তি বাড়ানো দরকার, সেখানে বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন৷ উদাহরণ হিসেবে সমস্ত ইউরোপের নিরাপত্তার বিষয়টির উল্লেখ করা যেতে পারে৷ ৭৫০০ কোটির মধ্যে মাত্র সাতশ’ কোটি ইউরো রাখা হয়েছে এই খাতে৷
এছাড়া করোনা সংকটের সময় জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি ইইউভুক্ত দেশ যে ইটালি এবং ফ্রান্সের মুমূর্ষ রোগীদের নিয়ে এসে চিকিৎসা দিয়েছে, ইউরোপের সংহতি প্রকাশ করা এমন সুন্দর উদ্যোগও জারি রাখা উচিত৷