বুধবার, ১৫ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম » বাংলাদেশে বাড়ছে পানি, ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা
বাংলাদেশে বাড়ছে পানি, ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা
বিবিসি২৪নিউজ,বিশেষ প্রতিবেদক,ঢাকা: ভারি বর্ষণ আর নদীর পানিতে বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ তলিয়ে গেছে৷ প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷ পানিতে ডুবে গেছে বিভিন্ন জেলার গ্রামাঞ্চল ও রাস্তা৷ গবাদি পশু ও ফসল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মানুষ৷বৃষ্টিপাত কিছুটা কমে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি বিস্তৃত হওয়ার গতি কিছুটা কমেছে। তবে আগামী সপ্তাহে বর্ষণ বেড়ে গিয়ে পরিস্থিতির অবনতি খুব দ্রুত হবে। এ ক্ষেত্রে ২৫ জুলাই নাগাদ বন্যা পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ রূপ নিতে পারে।
পানি উন্নয়র বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র মধ্যমেয়াদী এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ব্ৰহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল শুক্রবার (১৭ জুলাই) নাগাদ বাড়তে পারে এবং ২০ জুলাই নাগাদ স্থিতিশীল হতে পারে। যার ফলে আগামী সাত দিন কুড়িগ্রাম, বগুড়া, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর এবং টাঙ্গাইল জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এছাড়া মানিকগঞ্জ জেলার আরিচা স্টেশনে পানি সমতল বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল আগামী ২০ জুলাই এর পর পুনরায় বাড়তে পারে এবং ২৫ জুলাই নাগাদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। যার ফলে উপরোল্লিখিত জেলাসমূহে ২০ জুলাইয়ের পর বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে এবং চলমান বন্যা পরিস্থিতি জুলাই মাসের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশে বড় বন্যা পরিস্থির সৃষ্টি হয় মূলত উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানি বেড়ে গেলে। বিশেষ যমুনা, ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়লে দেশের এক তৃতীয়াংশ জেলার নিন্মাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। এছাড়া পদ্মার পানিতেও দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
পাউবো বলছে, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে আগামী পাঁচ দিনে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পয়েন্ট, মুন্সিগঞ্জ জেলার ভাগ্যকূল পয়েন্ট এবং শরীয়তপুর জেলার সুরেশ্বর পয়েন্টে পানি সমতল বাড়তে পারে। যার ফলে জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি আগামী ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মুন্সিগঞ্জের ভাগ্যকূল পয়েন্টে পানি সমতল বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। বাড়তে পারে ঢাকার চারপাশের নদীসমূহের পানি সমতলও। তবে ঢাকার চারপাশের নদীসমূহের অববাহিকায় বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, তাদের পর্যবেক্ষণাধীন বিভিন্ন নদ-নদীর ১০১টি স্টেশনের মধ্যে ২১টিতে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কয়েকটি স্থানে পানির উচ্চতা কমছে। তবে বর্ষণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার পানি বাড়বে।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বর্ষণ বাড়বে আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে। বুধবার (১৫ জুলাই) সারাদেশে খুব হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
বুধবার দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে শ্রীমঙ্গলে, ৪৮ মিলিমিটার। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে, ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।