শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » শান্তিপূর্ন সংকট নিরসণের আন্তর্জাতিক প্রাণকেন্দ্র ,জাতিসংঘের ৭৫তম বার্ষিকী
শান্তিপূর্ন সংকট নিরসণের আন্তর্জাতিক প্রাণকেন্দ্র ,জাতিসংঘের ৭৫তম বার্ষিকী
বিবিসি২৪নিউজ,ফরিদা ইয়াসমিন,নিউইর্য়ক,জাতিসংঘ থেকে: ১৯৪৫ সালের জুন মিস ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকোয় স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক জাতিসংঘ সনদ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বর্বরতা নৃশংসতা নিরসণের স্বপ্ন ও পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নিয়ে জন্ম শুরু যে জাতিসংঘের, এখন তা সমস্ত আন্তর্জাতিক সমস্যা সংকট শান্তিপূর্নভাবে নিরসণের একটি দরবার।আন্তর্জাতিক সংকট নিরসণের প্রাণকেন্দ্র জাতিসংঘের ৭৫তম বার্ষিকী। জাতিসংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বির্ষিকী আজ। ১৯৪৫ সালের ২৬শে জুন শুক্রবার প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের প্রতিনিধিত্বকারী এই সংস্থাটি জন্মের পর থেকে এবার ভিন্ন একটি প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে।
জাতিসংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বির্ষিকী আজ। ১৯৪৫ সালের ২৬শে জুন শুক্রবার প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের প্রতিনিধিত্বকারী এই সংস্থাটি জন্মের পর থেকে এবার ভিন্ন একটি প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে।
আমাদের জাতিসংঘ সংবাদদাতা এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছেন কিভাবে চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এই সংস্থাটি আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে এবং সামনের দিনগুলোতে আরো কোথায় যাবার আশা আছে।
৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সময় আজকের বিশ্ব একটি পরিবর্তিত বিশ্ব। একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপট। গোটা বিশ্ব এক অদৃশ্য মহামারীর কবলে আক্রান্ত।
জাতিসংঘ মহাসচিব এ্যান্টনিও গুটিরেজ বলেন, “কোভিড-১৯ থেকে জলবায়ু সংকট, বর্ণবাদী অপরাধ থেকে সকল ধরণের বৈষম্য, আমরা এসবের মধ্যেই একটি জটিল বিশ্বের বাসিন্দা। একই সময়ে আমরা একটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, যাদের লক্ষ্য সুদুরপ্রসারী এবং যা সনদেই আছে, তার জন্যে আমরা সুন্দর সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হতে চাই। এই সময়ে আমাদেরকে একত্রে সংকট সমাধানে কাজ করা দরকার”।
তবে জাতিসংঘের প্রধান অর্থ সহায়তাকারী কয়েকটি দেশ যেমন বৃটেন চীন রাশিয়া্ ও যুক্তরাস্ট্র- জাতিঙঘের একটি অন্যতম প্রধান নীতি থকে দূরে সরে যাচ্চে, তা হলো- জোটবদ্ধতা। অথচ ক্ষুদ্র দেশগুলো এটা আঁকড়ে ধরছে।
ফোর্ডহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক রাজনীতির অধ্যাপক অণ্জলী দয়ালের মতে, “আমরা দেখছি জাতিসংঘে অর্থ সহায়তা করা আরো বেশী গুরুত্বপূর্ন এখন; কারন এই দেশগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে এটা বিশ্বাস করে যে বিশ্বের বহু সমস্যা্ জোটবদ্ধতা এবং কুটনীতি ছাড়া সমাধান করা সম্ভব নয়। জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট, এসবের মতো সংকটগুলো আন্তর্জাতিক সহযোগীতা ছাড়া সমাধান করা সম্ভব নয়”।
জাতিসংঘ প্রধান স্বিকার করেন আন্তর্জাতিক ঐক্য ও জোটবদ্ধতা এখন আরো বেশী করে প্রয়োজন।, “সমস্যা এ নয় যে জোটবদ্ধতা বর্তমান সংকটের কারনে। এ সমস্যা খানিকটা বোঝাপড়ার অভাবের কারনে”।
গত কয়েক বছরে জাতিসংঘ অনেক বিস্তৃত হয়েছে, শান্তিরক্ষা ও মানবিক কর্মকান্ড অনেক বেড়েছে। এখন সংস্থাটি ৮৭ মিলিয়ন মানুষকে সহায়তা করছে ৮৩টি দেশে। বিশ্বের অর্ধেক শিশুদের টিকা দেয়া হচ্ছে। ১৩টি দেশে ১ লাখ শান্তিরক্ষা কর্মী কাজ করছেন।
আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্য নিয়ে করা জাতিসংঘ অনবরত বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত নিরসণে কাজ করে চলেছে ।জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জন বোল্টন বলেন, “১৯৪৫ সালে যে জাতিসংঘ গঠিত হয়েছিল, এখন সেটি আর সেই অবস্থায় নেই। মানবিক কর্মকান্ড অনেক বিস্তৃত হয়েছে। তবে রাজনীতির ক্ষত্রে যতোটা কার্যকর হবার কথা ছিল, তা হয়নি”।
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে এবার জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হতে চলেছে। কোভিড-১৯ এর আগে জাতিসংঘের কাছে কর্মকান্ডের এক বিশাল তালিকা ছিল। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সংকট বিভাগের পরিচালক রিচার্ড গোওয়ান বলেন, “আমার মতে আগামীতে জাতিসংঘের সামনে প্রধান সমস্যা হিসাবে জলবায়ূ সংকট আসবে এবং তার আন্তর্জাতিক সমন্বয় একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে”।
এছাড়া এর সদস্যদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা একটি বড় প্রশ্ন হতে পারে। “চীনের উত্থান একটি বড় প্রশ্ন। কারন দেশটির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সাথে সাথে জাতিসংঘে চীনের প্রভাব বাড়ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। এতে করে অন্যান্য দেশের অবস্থান দুর্বল হচ্ছে এই ধারনা পোষণ করছে”।
মাল্টি বিলিয়ন ডলার বাজেটের এই সংস্থাটি বর্তমানে আর্থিক সংকটে পড়েছে। বললেন অণ্জলি দয়াল, “বর্তমান জাতিসংঘ আর্থিক সংকটে। আর এর প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় এর প্রভাব পড়বে”।
যতো সমস্যা বা সংকটই হোক, জাতিসংঘ সামনের দিকে আরো ভালো কাজ করবে; তবে সংস্থাটির ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ঐক্য ও বোঝাপড়া আরো বৃদ্ধি পেলে উযে কোনো সংকট কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব হবে না, এমনই মনে করেন বিশ্লেষকরা।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতেমা বলেন ছোট দেশ হলেও বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অবদান রাখছে জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মকান্ডে। শান্তিরক্ষা কর্মকান্ডে বাংলাদেশ বিপুল প্রশংসা কুড়িয়েছে। এছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জলবয়ু সংকট নিরসসহ বর্তমানে কোভিড০-১৯ সংকটে সকল পর্যায়ে বাংলাদেশ অবদান রেখে চলেছে।