শিরোনাম:
ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১

BBC24 News
শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বাংলাদেশে বন্ধ হচ্ছে, কুইক রেন্টাল-পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বাংলাদেশে বন্ধ হচ্ছে, কুইক রেন্টাল-পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র
৯৬২ বার পঠিত
শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাংলাদেশে বন্ধ হচ্ছে, কুইক রেন্টাল-পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র

---বিবিসি২৪নিউজ,মেহেদী হাসান, ঢাকা: আগামী ১৮ মাসের মধ্যে তিন হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেবে সরকার, যার বেশির ভাগই রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল কেন্দ্র।মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় নতুন করে কোনো রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়বে না, সেই সঙ্গে সরকারি পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের দুই কর্মকর্তা বলেছেন, গত ছয় বছরে প্রায় ৬২ হাজার কোটি টাকা বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কেন্দ্র ভাড়া দিয়েছে সরকার। এসব কেন্দ্র পূর্ণ সক্ষমতা তো দূরে থাক, ৩০ শতাংশও চালানো সম্ভব হয়নি। অলস বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে বসিয়ে বসিয়ে অর্থ দিয়েছে সরকার। এ রকম পরিস্থিতিতে প্রয়োজন নেই এমন তিন হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেবে সরকার। এর ৯০ ভাগই রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল কেন্দ্র।

জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ৮ জুন মুঠোফোনে বলেন, ‘বিদ্যুতের মাস্টারপ্ল্যান আমরা রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাংলাদেশে বিদ্যুতের প্রকৃত চাহিদা কত, সেটা এখন আবার নিরূপণ করা দরকার। কারণ অনেক অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে থাকে। এতে সরকারের ক্ষতি হয়। এর মধ্যে আবার কোভিড–১৯ কারণে চাহিদার যে প্রাক্কলন করা হয়েছিল, সেটি হবে না। মাস্টারপ্ল্যান রিভিউ করার পর যদি দেখা যায় প্রাক্কলনের চেয়ে চাহিদা কম, তাহলে পরিকল্পনাধীন কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করা হবে।

এ ছাড়া তিন হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এর বেশির ভাগই রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল। রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের অল্প কয়েকটা গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র রাখা হবে, জরুরি প্রয়োজনে এসব কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ নেওয়া হবে। তবে কোনো ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া দেওয়া হবে না, বিদ্যুৎ দিলেই কেবল বিল পাবে। এতে খরচ খুবই সামান্য হবে।’

গত ১৮ মে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ না করার সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ)। সংস্থাটির দাবি, বাংলাদেশে চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশি স্থাপন করা হয়েছে। সে কারণে মোট বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাত্র ৪৩ শতাংশ ব্যবহার করা হয়।

মাস্টারপ্ল্যানে গলদ কোথায়
জাইকার অর্থায়নে ২০১০ সালে ৩০ বছর মেয়াদি বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনায় বলা হয়, বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গড়ে ৭ শতাংশ বাড়বে। এ হিসাবে ২০৪০ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশে জিডিপি গড়ে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হারে বেড়েছে। এর ফলে জাইকা ২০১৬ সালে ফের মহাপরিকল্পনায় কিছু রদবদল আনে। তবে সেটি কয়লার বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রে। আগে ছিল মোট ৬০ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৫ ভাগ কয়লা থেকে আনার পরিকল্পনা, তা কমে ২০১৬ সালে ২৫ ভাগে দাঁড়ায়। কিন্তু মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ কমেনি।

শুধু জিডিপির ভিত্তিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের হিসাবেই জাইকার মহাপরিকল্পনায় গলদ ছিল না, প্রতিষ্ঠানটি বিদ্যুতের চাহিদার যে প্রাক্কলন করেছিল, সেটিও কখনো ঠিক হয়নি। মহাপরিকল্পনায় চাহিদার বিষয়ে বলা হয়েছিল ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চাহিদা গিয়ে ঠেকবে ৬ হাজার ৪৫৪ মেগাওয়াট থেকে ১০ হাজার ২৮৩ মেগাওয়া। আর বাস্তবে এ সময় চাহিদা ছিল ৪ হাজার ৬০৬ থেকে ৭ হাজার ৮১৭ মেগাওয়াট। নতুন পরিকল্পনায় ২০২১ সালে ২৪ হাজার, ২০৩০ সালে ৪০ হাজার ও ২০৪০ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, কোনো পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান নিজে যখন ব্যবসা করে, সেই বিষয়ে তার উচিত না আগ বাড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দেওয়া। এতে নিজেদের ব্যবসা গছিয়ে দেওয়ার প্রবণতা থাকে। এটি স্বার্থ–সংঘাতমুক্ত নয়। এটি নিন্দনীয়।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন ব্যয় ছিল প্রতি ইউনিট ২ টাকা ৬১ পয়সা। বর্তমানে ব্যয় ৬ টাকা ২৫ পয়সা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দিলেও তা হওয়া উচিত ছিল প্রতিযোগিতার মাধ্যমে, দরপত্রে। এতে যে কম দামে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তাব দিত, তাকেই কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়া উচিত ছিল। এতে উৎপাদন ব্যয় অনেক কমে যেত। সরকার এসব ব্যবস্থা রাখেনি। ফলে শুধু কেন্দ্র ভাড়া বা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দিতে হয়েছে বহুগুণ বেশি।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) তথ্যমতে, ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে গত অর্থবছর পর্যন্ত বেসরকারি বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট (আইপিপি) ও রেন্টাল কেন্দ্রগুলোকে ৬১ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা কেন্দ্র ভাড়া বা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দিয়েছে। এই একই সময় ২ লাখ ৯৩ হাজার ২৯৪ কোটি টাকার বিদ্যুৎ কিনেছে বেসরকারি কেন্দ্রগুলোর কাছ থেকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।

জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত ১০ বছরে সরকার বিদ্যুৎ খাতে ৫২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। ফলে ভর্তুকির টাকা গেছে ব্যবসায়ীদের অলস বিদ্যুৎকেন্দ্রের পেছনে। আর বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে সরকার বাকি অর্থের সমন্বয় করেছে। গত ১০ বছরে সরকার সাতবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। সর্বশেষ গত মার্চে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে।

নতুন সংশোধিত মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ২০২১ সালে ২৪ হাজার, ২০৩০ সালে ৪০ হাজার ও ২০৪০ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। অথচ বর্তমানে ভরা গ্রীষ্মে বিদ্যুতের গড় চাহিদা দিন–রাত মিলিয়ে আট থেকে নয় হাজার মেগাওয়াট। বর্তমানে সরকারের হাতে প্রায় ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে সেটি ২৪ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছালে চাহিদা সে তুলনায় বাড়বে না।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ম. তামিম বলেন, ‘আমরা এ কথাটিই এত দিন বলে আসছিলাম যে জিডিপির প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনাতেই গলদ রয়েছে। গত তিন বছরে শিল্পকারখানা তেমন হয়নি। আমাদের হাতে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আছে অথচ সর্বোচ্চ ব্যবহার হয়েছে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। হাতে ১০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ অলস রাখা উচিত না, সেখানে প্রায় অর্ধেক অলস বসে থাকছে। ফলে সরকারের মাস্টারপ্ল্যানটি জরুরিভাবে পর্যালোচনা করা দরকার। এটি খুব ভালো উদ্যোগ। তিনি আরও বলেন, তেলভিত্তিক মেয়াদোত্তীর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিলে এর সুফল পাবে সরকার। এতে বছরে বহু অর্থ সাশ্রয় হবে।



আর্কাইভ

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক স্বাভাবিক দিকে অগ্রসর হচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
নতুন আইজিপি বাহারুল ও ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত
পারমাণবিক আশ্রয়কেন্দ্র বানাচ্ছে রাশিয়া!
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ
ইলন মাস্কের রকেট উৎক্ষেপণ দেখতে হাজির ট্রাম্প
লেবাননে নিহত দুই শতাধিক শিশু: ইউনিসেফ
মার্তিনেজের ধাঁধানো গোলে জিতল আর্জেন্টিনা
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পরিধি বাড়ালেন পুতিন
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ সফল হয়নি: হাসনাত
যুক্তরাষ্ট্র-ফিলিপাইন সামরিক গোয়েন্দা তথ্য চুক্তি স্বাক্ষর