বুধবার, ২৪ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | পরিবেশ ও জলবায়ু | প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » বাংলাদেশে রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
বাংলাদেশে রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
বিবিসি২৪নিউজ,অর্থনৈতিক প্রতিবেদক,ঢাকা: বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন প্রথমবারের মত ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। করোনাভাইরাস সঙ্কটে রপ্তানি আয়ে ভাটার মধ্যেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ঋণ সহায়তার অর্থ যোগ হয়েছে প্রচুর ।
বুধবার দিনের শুরুতেই বাংলাদেশের রিজার্ভ তিন হাজার ৫০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। প্রতি মাসের আমদানি ব্যয় বাবদ ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ ধরলে এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় নয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, মহামারীর মধ্যেও প্রবাসীরা দেশে পরিবারের জন্য টাকা পাঠানো অব্যাহত রেখেছেন। তার সঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় আইএমএফের ৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের জরুরি সহায়তার অর্থ যোগ হওয়ায় গত ৩ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে সেই রিজার্ভ আরও বেড়ে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করল।
অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বুধবার বলেন, “করোনাভাইরাসের এই মহাসঙ্কটের সময় আমাদের রিজার্ভ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে, এটা খুবই ভালো খবর। রিজার্ভের এই উল্লম্ফন আমাদের সাহস জোগাচ্ছে; আমরা সাহসিকতার সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করতে পারব বলে আশা করছি।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার, এটা তখনকার রেকর্ড।
এরপর গত আড়াই বছরে রিজার্ভ ৩১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছিল।
চলতি জুন মাসের ২২ দিনে ১৩৬ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। তাতে বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের এ পর্যন্ত (২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ২২ জুন) প্রবাসী আয় দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। এই অংক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি।
গত অর্থবছরের পুরো সময়ে (জুলাই-জুন) এক হাজার ৬৪২ কোটি (১৬.৪২ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। করোনাভাইরাস সঙ্কটে রপ্তানি আয় তলানিতে নেমে এলেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এখনো অর্থনীতিতে আশার আলো জাগিয়ে রেখেছে।
অর্থমন্ত্রী মনে করেন, সরকার রেমিটেন্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ায় ‘ধাক্কা’সেভাবে লাগতে পারেনি। তার হিসাবে, প্রণোদনা দেওয়া না হলে গতবছরের চেয়ে ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স ‘কম হত’।
সে কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরের নতুন বাজেটেও ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বিভিন্ন দেশে থাকা প্রায় সোয়া এক কোটি বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেশের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মত। মহামারীর অনিশ্চয়তা না কাটায় রেমিটেন্সের গতি যেন ধরে রাখা যায়, সেই চেষ্টা করছে সরকার।