সোমবার, ৮ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » আলোচিত সংবাদ | পরিবেশ ও জলবায়ু | প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » মানব ও মুদ্রা পাচারের অভিযোগে-সাংসদ পাপুল কুয়েতের সিআইডির রিমান্ডে
মানব ও মুদ্রা পাচারের অভিযোগে-সাংসদ পাপুল কুয়েতের সিআইডির রিমান্ডে
বিবিসি২৪নিউজ,কূটনৈতিক প্রতিবেদক,ঢাকা: মানব ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুলকে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটর। কাজী শহীদ ইসলামকাজী শহীদ ইসলামকুয়েতে ভিসা বাণিজ্যের নামে কুয়েতের সিআইডির (ক্রিমিনাল ইনভেষ্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট) আবেদনের প্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
আজ সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মানব পাচার ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের সঙ্গে যুক্ততার অভিযোগে বাংলাদেশের সাংসদকে আটকের বিষয়টি কুয়েতের সিআইডির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
গত শনিবার রাতে কুয়েত সিটির মুশরিফ এলাকার বাসা থেকে লক্ষীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সাংসদকে আটক করে তাদের দপ্তরে নিয়ে যায় সিআইডি।
অন্যদিকে, কুয়েত থেকে প্রকাশিত আরব টাইমসের এক প্রতিবেদনে সোমবার বলা হয়েছে, দেশটির সিআইডির কর্মকর্তারা পাঁচ বাংলাদেশিকে জেরা করে জানতে পেরেছে তাদের প্রত্যেকেই কুয়েত যেতে সাংসদকে তিন হাজার দিনার করে দিয়েছিলেন। এছাড়াও প্রতি বছর তারা ভিসা নবায়নের জন্য সাংসদকে বাড়তি টাকা দিয়েছেন। তাদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে সাংসদ কাজী শহিদের বিরুদ্ধে মানব পাচার ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগ এনেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
অবশ্য কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের গণমাধ্যম বাংলাদেশের সাংসদের গ্রেপ্তারের খবর প্রচার করলেও এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানতে পারেনি সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাস। এ নিয়ে জানতে চাইলে কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম আজ সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বলেন, সাংসদ কাজী শহিদকে আটকের খবর এখানকার গণমাধ্যমে জানার পর এ নিয়ে জানতে রোববার কুয়েতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখি। এখন পর্যন্ত আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানতে পারিনি।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাংসদ কাজী শহিদ গত মার্চে কুয়েত সফরে যান। তবে ব্যক্তিগত ভাবে যাওয়ায় তিনি সবুজ পাসপোর্টে নিয়ে কুয়েত গেছেন। সাধারণত মন্ত্রী, সাংসদ, কূটনীতিকেরা লাল পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশ সফর করেন। যা তাদের কূটনৈতিক প্রাধিকার দিয়ে থাকে বিদেশের মাটিতে।
সাংসদের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বিকেলে বলেন, ‘বিদেশে গিয়ে একজন সাংসদ এ ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়াবেন তা একেবারেই অনভিপ্রেত। এমন সময় এই ঘটনাটা ঘটেছে যখন পৃথিবীর সব দেশ মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত। এমন সময়ে সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এতে লজ্জিত।’
প্রসঙ্গত এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কুয়েতের আরবি দৈনিক আল কাবাস ও আরব টাইমস বাংলাদেশের এক সাংসদসহ তিন মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কুয়েতের সিআইডির বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছিল, স্বতন্ত্র এই সাংসদসহ তিনজনের ওই চক্র অন্তত ২০ হাজার বাংলাদেশিকে কুয়েতে পাঠিয়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আয় করেছে। কুয়েতের গণমাধ্যমগুলো অভিযুক্ত সাংসদের নাম প্রচার করেনি। তবে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অভিযুক্ত সাংসদের নাম কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুল। তিনি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ।
কুয়েত ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে সাংসদ কাজী শহিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।