রবিবার, ৩১ মে ২০২০
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » ভারত সীমান্তের ৩ অংশ নেপালের, সংসদে মানচিত্র বিল পেশ
ভারত সীমান্তের ৩ অংশ নেপালের, সংসদে মানচিত্র বিল পেশ
বিবিসি২৪নিউজ,যতিচন্দ দাস,নেপাল থেকে: ভারত ও নেপালের মধ্যে সীমান্ত বিবাদের আবহে নেপালের সংসদে ‘ম্যাপ আপডেট বিল’ পেশ করা হয়েছে। আজ (রোববার) এ সংক্রান্ত নয়া ম্যাপ আপডেট বিল সংসদের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এ পেশ করেছেন নেপালের আইনমন্ত্রী শিব মায়া তুম্বাহাম্ফি।
নয়া ম্যাপে ভারত-নেপাল সীমান্তের লিমপিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখকে নেপালের অংশ বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু ভারতের দাবি, ওই তিনটি অংশই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্যের পিথোরাগড় জেলার অন্তর্ভূক্ত।
ভারতের পক্ষ থেকে সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের গাটিয়াবর্গ থেকে লিপুলেখ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার রাস্তার আনুষ্ঠানিক সূচনা করার পরে এ নিয়ে বিবাদ চরমে ওঠে। নেপালের দাবি, ওই রাস্তার অংশ নেপালের ভূখণ্ডের মধ্যে দিয়ে গেছে। এরপরেই নেপালের ভূমি মন্ত্রণালয় দেশের সংশোধিত নতুন ম্যাপ প্রকাশ করলে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়।
এ নিয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দেয়, ‘এই একপাক্ষিক কার্যক্রম ঐতিহাসিক ঘটনা ও প্রমাণসাপেক্ষ নয়। কৃত্রিমভাবে দেশের সীমান্ত এভাবে বাড়িয়ে দেওয়াকে ভারত কোনওভাবেই মেনে নেবে না।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, ‘বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’
অন্যদিকে, আজ (রোববার) ‘আজতক’ হিন্দি টিভি চ্যানেলের ওয়েবসাইট জানিয়েছে, নেপাল সরকার নেপালে প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত সীমান্ত বন্ধ করে নির্দিষ্ট সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রবেশ পথ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতদিন ভারতীয় নাগরিকরা বিনা বাধায় নিজেদের সুবিধাজনক স্থান দিয়ে নেপালে প্রবেশ করতেন। কিন্তু এবার সীমান্তের নির্দিষ্ট এলাকা দিয়েই প্রবেশের অনুমতি মিলবে। অন্যদিকে, ম্যাপ ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে নেপাল নিজ সীমান্ত এলাকায় সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটতে চলেছে বলেও গণমাধ্যমের ওই সূত্রটি জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘ভাষা ও চেতনা সমিতি’র সম্পাদক ও কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজের সাবেক অধ্যাপক ড. ইমানুল হক আজ (রোববার) বলেন, ‘নেপালের সংসদে যদি এই বিল পাস হয়ে যায় তাহলে তা ভারতের শাসকদের পক্ষে লজ্জা! ভারতকে যারা বলছেন যে বিশ্বের মানচিত্রে এক নম্বর করে দেবেন তাঁদের পক্ষে লজ্জা! দেশবাসীকে বুঝতে হবে কাদের তারা ক্ষমতায় আসতে দিয়েছেন বা ক্ষমতায় রাখতে সাহায্য করছেন। উচিত ছিল সুসম্পর্ক বজায় রাখা। আলোচনা বজায় রাখা।’
ড. ইমানুল হক আরও বলেন, ‘কাশ্মীরে যেভাবে ওরা মানুষকে দমন করা গেছে, ওঁরা মনে করছেন যে গোটা পৃথিবীটাই হচ্ছে কাশ্মীরের একটা অংশ। ওঁরা মনে করছেন গোটা পৃথিবীটাই গুজরাট। গুজরাটে যেভাবে দমন করেছেন প্যাটেলদের, দলিতদের, ওঁরা মনে করেছেন সেভাবেই গোটা পৃথিবীকে শাসন করবেন। তাঁদের যে ঔদ্ধত্য এবং অনমনীয় মনোভাব, তারফলে আজকে নেপালের মতো দেশ যারা কখনোই সৈন্য সমাবেশ করেনি তাঁরাও সীমান্তে সৈন্য মোতায়েনের কথা বলতে সাহস করছে।’
এদিকে, ভারত ও নেপালের মধ্যে বিতর্কিত এলাকাগুলো ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করতে নেপাল সরকার মরিয়া হওয়ার নেপথ্যে চীনের সমর্থন রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।