বুধবার, ১৩ মে ২০২০
প্রথম পাতা » আমেরিকা | আর্ন্তজাতিক | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসের চাপে কমছে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসের চাপে কমছে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা
বিবিসি২৪নিউজ,ফরিদা ইয়াসমিন,যুক্তরাষ্ট্র থেকে: মার্কিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের করোনা পরিস্থিতি এবং তা নিয়ে লাগাতার ট্রাম্পের বিবিধ মন্তব্য ভালো চোখে দেখছেন না অ্যামেরিকানরা। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, করোনা-কালে দ্রুত জনপ্রিয়তা কমছে ডনাল্ড ট্রাম্পের। যার প্রভাব পড়তে পারে আসন্ন নির্বাচনেও।
সম্প্রতি রয়টার্স এবং ইপসসের যৌথ উদ্যোগে অ্যামেরিকায় একটি সমীক্ষা চালানো হয়। সাধারণ মার্কিনবাসীদের সেখানে প্রশ্ন করা হয়, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে কতটা বিশ্বসযোগ্য বলে মনে করছেন তাঁরা? রিপোর্ট বলছে, ৫৬ শতাংশ অ্যামেরিকান ট্রাম্পকে আর পছন্দ করছেন না। অথচ ঠিক এক মাস আগে একই ধরনের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, আগের চেয়ে কমলেও ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ৫০ শতাংশের নীচে নেমে যায়নি। ফলে আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন খানিকটা হলেও সুবিধাজনক জায়গায়। সমীক্ষা অনুযায়ী তিনি আপাতত ট্রাম্পের চেয়ে আট পয়েন্ট এগিয়ে।
গত এপ্রিলে একই ধরনের একটি সমীক্ষা হয়েছিল অ্যামেরিকায়। সাধারণ মানুষ সেখানে বলেছিলেন, করোনা নিয়ে ট্রাম্প যা বলছেন, তাঁরা তা মোটেই খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কিন্তু ভোট দেওয়ার প্রশ্নে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ ট্রাম্পের কথাই বলেছিলেন। অর্থাৎ, করোনার জন্য বিশ্বাসযোগ্যতা হারালেও জনপ্রিয়তা হারাননি ট্রাম্প। মাত্র এক মাসে সেই বিষয়টি বদলাতে শুরু করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কারণ, করোনা পরিস্থিতি সামলাতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছেন ট্রাম্প। একাধিকবার বার তিনি বলেছেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যামেরিকার পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক। এই সময় যে কোনও সিদ্ধান্তই ভাবনা চিন্তা করে নেওয়া উচিত।
ট্রাম্পের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা এবং ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফওসি মঙ্গলবারেও বলেছেন দেশের করোনা পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দ্রুত লকডাউন তুলে নিলে যথেষ্ট সমস্যা হতে পারে। যদিও সোমবারেও ট্রাম্প বলেছিলেন অর্থনীতির কথা ভেবে কিছু দিনের মধ্যেই লকডাউন তুলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু করা হবে।
ট্রাম্পের মতোই প্রাথমিক ভাবে করোনা ভাইরাসকে সে ভাবে গুরুত্ব দেননি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনেরো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার ফল ভুগছেন সে দেশের মানুষ। প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের রেকর্ড বৃদ্ধি ঘটছে ব্রাজিলে। মঙ্গলবার জার্মানিকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে ব্রাজিল। এখন সেখানে মোট আক্রান্ত এক লাখ ৭৮ হাজার। মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৪৬১ জনের। এরই মধ্যে জিম এবং সেলুনকে জরুরি পরিষেবার আওতায় নিয়ে এসেছেন প্রেসিডেন্ট। যা নিয়ে দেশের ভিতরেই সমালোচিত হতে হচ্ছে বোলসোনেরাকে। বেশ কয়েকটি প্রদেশের গভর্নর প্রেসিডেন্টের ডিক্রি মানতে চাননি। ফলে শুরু হয়েছে আইনি দ্বন্দ্ব। অন্য দিকে, অ্যামাজনের জঙ্গলে বসবাসকারী জনজাতিগুলিও করোনায় আক্রান্ত হতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কোনও কোনও জনজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।
এ দিকে চীনের উত্তরপূর্বের জিলিন প্রদেশে নতুন করে করোনার প্রকোপ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সেখানে সাত জনের শরীরে ভাইরাস মিলেছে। যার মধ্যে ছয় জনই স্থানীয় বাসিন্দা। গত কয়েক দিন ধরে চীন বার বার জানাচ্ছিল, নতুন যাদের করোনা শনাক্ত হচ্ছে, তাঁরা সকলেই বাইরে থেকে এসেছেন। কিন্তু জিলিনের ঘটনা ফের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গোটা বিশ্বে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৪৩ লাখ ৪২ হাজার। এর মধ্যে শুধুমাত্র অ্যামেরিকাতেই আক্রান্ত ১৪ লাখ আট হাজার। গোটা বিশ্বে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯২ হাজার জনের। সুস্থ হয়েছেন ১৬ লাখ দুই হাজার জন।