রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » জেলার খবর | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাখো মানুষের জানাজার ঢল থামাতে ব্যর্থ হওয়ায়,ওসি প্রত্যাহার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাখো মানুষের জানাজার ঢল থামাতে ব্যর্থ হওয়ায়,ওসি প্রত্যাহার
বিবিসি২৪নিউজ,ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লকডাউন থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল থামাতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাৎ হোসেন টিটুকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গতকাল (শনিবার) রাতে পুলিশ হেডকোয়ার্টাসের নির্দেশে তাকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযোগ করতে বলা হয়। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারী পুলিশ সুপার মো. আলাউদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল (শনিবার) সকাল ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের বেড়তলায় জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা মাঠে ইসলামী আলোচক ও বেড়তলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। লাখো মানুষের সমাগম ঘটে ওই জানাজায়। মাদ্রাসা মাঠ ছাড়িয়ে মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত চলে যায়।
জানাজায় লাখো জনতার উপস্থিতি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনকে এক রকম প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ওসি মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটু বলেছিলেন, “আমরা চিন্তাও করতে পারিনি যে এত লোকসমাগম হবে। এত মানুষ আসতে শুরু করার পর আমাদের আর কিছু করার ছিলো না।”তবে উপস্থিত লোকজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জানাজায় অংশ নেন বলেও দাবি করেন ওসি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ বলেন, “যেখানে করোনাভাইরাসের ঝুঁকির কারণে একসঙ্গে মসজিদে নামাজ আদায় না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, সেখানে কীভাবে এতো লোক সমাগম হল তা বোধগম্য নয়।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, “সকাল থেকে বেড়তলা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখছিলাম। আমাদের পক্ষ থেকে ওনাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্যে। এ নিয়ে এলাকায় মাইকিংও করা হয়। কিন্তু আমরা শেষ চেষ্টা করেও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারিনি।”
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা খেলাফত মজলিশ শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মঈনুল ইসলাম খন্দকার বলেন, “লাখো জনতার ঢল ঠেকাতে আমরা চেষ্টা করেছিলাম। চেয়েছিলাম জানাজায় যেন লোক সমাগম কম হয়। কিন্তু ওনার প্রতি মানুষের ভালোবাসা এতটাই ছিল, যার কারণে হাজার-হাজার লোকের সমাগম হয়ে যায়।”
এদিকে, সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ই্উএনও) এএস মুসা জানান, সরাইলের ছয়টি গ্রামের বেশিরভাগ লোক অংশগ্রহণ করেছিল বলে আমাদের কাছে খবর আছে। তাই ছয়টি গ্রাম বেড়তলা, বলিবাড়ী, সিতাহরন, শান্তিনগর, মৈশার, টিঘর গ্রাম লকডাউন করা হয়।
শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারী। শনিবার ১০টায় জানাজা শেষে সরাইল উপজেলার বেড়তলায় অবস্থিত জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তাকে দাফন করা হয়।