শনিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » জেলার খবর | বিশেষ প্রতিবেদন | শিরোনাম » ব্রাহ্মণবাড়িয়া লকডাউনে লাখো মানুষের জানাজায়,প্রশাসনের দায়িত্ব কতটুকু ছিল?
ব্রাহ্মণবাড়িয়া লকডাউনে লাখো মানুষের জানাজায়,প্রশাসনের দায়িত্ব কতটুকু ছিল?
বিবিসি২৪নিউজ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:বিশ্ব যখন করোনা মহামারিতে আক্রান্ত তখনই ব্রাহ্মণবাড়িয়া লকডাউন উপেক্ষা করে ইসলামী আলোচক হাফেজ মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে জানাজার জনসমুদ্র মাদ্রাসা মাঠ পেরিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে ছড়িয়ে যায়।
একদিকে বিশ্বরোড মোড় হয়ে সরাইলের মোড় পর্যন্ত, অন্যদিকে আশুগঞ্জের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকে জানাজায় আসা মানুষের ঢল। এছাড়া ওই এলাকার বিভিন্ন ভবনের ছাদেও মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়। সেখানে উপস্থিত কিছু পুলিশ সদস্য ছিলেন এক প্রকার নীরব দর্শক।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটু জানাজায় লাখো মানুষ সমাগমের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও ঢাকা থেকে লোকজন আসে। আমরা চিন্তাও করতে পারিনি যে এত লোক হবে। লোকজন আসতে শুরু করার পর আমাদের আর কিছু করার ছিলো না। তবে আগত লোকদের বলার পর তারা সামাজিক দূরত্ব (শারীরিক দূরত্ব) বজায় রেখে দাঁড়ান বলে দাবি করেন ওসি।
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন যুবায়ের আহমেদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
যুবায়ের আহমেদ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির এবং বেড়তলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি একাধিক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। ইসলামী আলোচক হিসেবে খ্যাতি রয়েছে তার বিশ্বজুড়ে।মাওলানা যুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষ অংশ নেয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষকে ১৪ দিন ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
শনিবার রাতে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ মো. মুসা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইউএনও বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপজেলার বেড়তলা গ্রাম, সীতাহরণ, বলিবাড়ি, শান্তিনগর ও বগইর গ্রামে আমরা মাইকিং করে বলে দিয়েছি কেউ যেন ঘর থেকে বের না হয়। আগামী ১৪-১৫ দিন তারা যেন এই কোয়ারেন্টিন মেনে চলে।
তিনি বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যদের নেতৃত্বে যুবসমাজের ব্যক্তিদের দিয়ে আমরা কমিটি গঠন করে দিচ্ছি। তারা যেন নিত্যপ্রয়াজনীয় পণ্যগুলো বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন। তাদের সুরক্ষার জন্য একান্তই হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন বের না হয়। আমরা হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করে সবাইকে বলে দিয়েছি।
তার দাবি যেহেতু অনেক মানুষ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে এখানে (বেড়তলা) ছিল। তাই এই এলাকার মানুষগুলো যেন স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে নিজেদের এড়িয়ে চলতে পারেন সে জন্য আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি। আসলে প্রশাসন কতটুকু দায়িত্ব পালন করেছে এটাই সচেতন মানুষের প্রশ্ন।