ছুটি আরো সপ্তাহ বাড়তে পারে
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা: করোনা পরিস্থিতির মধ্যে চলমান সরকার ঘোষিত ছুটি আরো সপ্তাহ খানেক বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন অনেকেই।করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ রোধে ছুটি শেষ না হতেই এই ছুটি আরো কয়েকদিন বাড়তে পারে বলে অফিসপাড়ায় আলোচনা শুরু হয়েছে।
সরকারের মন্ত্রী এবং সচিবরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজন হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে সেজন্য ২ বা ৩ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় গত ২৩ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে জানান, ২৬ মার্চ থেকে সাপ্তাহিক ছুটিসহ ৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই ছুটির মধ্যে জরুরি সেবা ছাড়া সব বন্ধ থাকবে।
ওইদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২৬ মার্চ সরকারি ছুটি, এর সঙ্গে ২৭-২৮ তারিখ সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। আর ২৯ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে। ৩-৪ এপ্রিল আবার সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। তবে ওষুধের দোকান ও কাঁচাবাজার সব খোলা থাকবে।
ছুটি ঘোষণার দিন পর্যন্ত দেশে করোনা ভাইরাসে ৩৩ জনের সংক্রমণ ও তিনজনের মৃত্যুর মধ্যে সরকারের শীর্ষ পর্যায় হতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল।
এদিকে, সোমবার (৩০ মার্চ) নতুন একজনসহ এ পর্যন্ত দেশে করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৫ জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯ জন। তবে গত দু’দিন দেশে নতুন করে কেউ আক্রান্ত হয়নি।
তবে ৭২ ঘণ্টায় মাত্র একজন রোগী শনাক্ত হলেও সরকারের প্রস্তুতি থেমে নেই জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বাংলানিউজকে বলেন, সব রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।
ছুটির বিষয়ে সরকারের আরেকজন মন্ত্রী এদিন বলেন, ১০ দিনের ছুটি দিয়ে সরকার যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে আর একটু বাড়ালে হয়তো বিপজ্জনক সময়টা কেটে যাবে বলে মনে করছে সরকার। তবে ছুটি বাড়ার সম্ভাবনা আছে।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ছুটি বাড়িয়ে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে এখনই স্পস্ট করে বলা যাচ্ছে না। কারণ একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই এ বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন।
সরকারের একজন সিনিয়র সচিব বলেন, ছুটির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ছুটি বাড়ানো হলে আগামী ২ বা ৩ তারিখের দিকে সিদ্ধন্ত আসতে পারে।
করোনা ভাইরাস হতে রক্ষায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর আগে ১৮ হতে ৩১ মার্চ এবং পরে তা বাড়িয়ে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত নেওয়া হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়িয়ে একেবারে রোজা ও ঈদের ছুটির সঙ্গে যুক্ত করা হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ছুটির মধ্যে ২৬ মার্চ হতে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে সরকার। আর মার্কেটগুলো ২৫ হতে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছের মালিক সমিতির।
করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের আহ্বানের মধ্যে বিভিন্ন দেশে লকডাউন বা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করছে সে দেশগুলোর সরকার। পার্শ্ববর্তী ভারতেও চলছে ২১ দিনের লকডাউন। বাংলাদেশেও করোনা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ছুটি বাড়ানোর মতো সিদ্ধান্তের দিকেই সরকার যেতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।