রবিবার, ২৯ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » করোনার ভয়াল থাবায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা
করোনার ভয়াল থাবায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত কয়েক সপ্তাহে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। ইউরোপ জুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় ভবিষ্যতে আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এর ধ্বংসাত্মক প্রভাবের ব্যাপারে ইউরোপের কর্মকর্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেফ কোঁতে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি কোনো ভুল করে বসে তাহলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। এমন সময় তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেন যখন আমেরিকার পর ইতালি হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের দেশ। করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় ইতালি চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে। ইতালির ৯২ হাজারের বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম সদস্য দেশগুলো করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি পৃথক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ পরিস্থিতি আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ইউরোপের জন্য বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে অবাধ ভ্রমণের জন্য প্রচলিত ‘শেঙ্গেন ভিসা’র মৃত্যুর আশঙ্কা করে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সব দেশ যদি পরস্পরকে সহযোগিতা না করে তাহলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল ভিত্তি অর্থাৎ ‘শেঙ্গেন ভিসা’ পদ্ধতির বিলুপ্তি ঘটবে।’
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর কর্মকর্তাদের মধ্যেও বিভেদ সৃষ্টি করেছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইতালি ও স্পেন। এ ক্ষেত্রে সহায়তা না করার কারণে ওই দুই দেশ ইউরোপের অন্যান্য দেশের তীব্র সমালোচনা করেছে। ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশ করোনা প্রতিরোধের জন্য ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় রোগ প্রতিরক্ষা সামগ্রী অন্য কোনো দেশে রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যাতে দেশের অভ্যন্তরে কোনো ঘাটতি দেখা না দেয়। মারাত্মকভাবে করোনায় আক্রান্ত দেশগুলো ব্রিটেন ও ফ্রান্সের এ নীতির তীব্র সমালোচনা করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনার প্রভাবে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যকার দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছে এবং এ বিপর্যয় রোধে এ দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান ইউরোপীয় পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে করোনা প্রতিরোধে একসঙ্গে কাজ করার জন্য ইউরোপের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের সবারই অভিন্ন দায়-দায়িত্ব রয়েছে। কারণ কোনো দেশের একার পক্ষে এ ভাইরাস মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।’
করোনা ভাইরাসের থাবায় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছ ইউরোপের দেশগুলো। করোনার প্রাদুর্ভাবে ইউরোপের কলকারখানাগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি দেশ কোয়ারান্টাইনে চলে যাচ্ছে, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অবাধ চলাচল। ফলে সমগ্র ইউরোপের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ।