বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » সম্পাদকীয় | সর্বশেষ সংবাদ » করোনাভাইরাস স্থানীয়ভাবে ছড়ানোর আগেই সতর্ক থাকতে হবে!
করোনাভাইরাস স্থানীয়ভাবে ছড়ানোর আগেই সতর্ক থাকতে হবে!
এম ডি জালাল: বাংলাদেশে করোনাভাইরাস স্থানীয়ভাবে ছড়াতে শুরু করেছে,করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যেহেতু সারা পৃথিবীতেই নতুন, সেহেতু এ রোগ মোকাবেলার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা বা উদাহরণ আমাদের সামনে নেই।জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) সর্বশেষ আজ পর্যন্ত দেশে মোট ১৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানা গেছে।
করোনায় আক্রান্ত যে দু’জনের তথ্য দিয়েছিল তাদের মধ্যে একজন ইতালি, অন্যজন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছিল।প্রথম যে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল, তাদের দু’জন ছিলেন ইতালি ফেরত। এরপর দ্বিতীয় দফায় ইতালি ও জার্মানি ফেরত দু’জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। কিন্তু পরে তাদেরই একজনের মাধ্যমে তার পরিবারের তিন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এতে বোঝা যাচ্ছে, অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও স্থানীয়ভাবে ছড়াতে শুরু করেছে নতুন করোনাভাইরাস। এটি একটি সতর্কসংকেত অবশ্যই।এ পরিস্থিতিতে দেশে করোনা সতর্কতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা। কারণ আমাদের দেশ জনবহুল। ফলে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা এমনিতেই বেশি। করোনার সংক্রমণ রোধে যে ধরনের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন, তা অনেকেরই অজানা। এ ব্যাপারে জনগণের যে সচেতনতা থাকা দরকার, অধিকাংশ মানুষের তা নেই।
বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এ ব্যাপারে কমই জানে। এ অবস্থায় এখানে যে কোনো সংক্রামক রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটি পিরামিড তৈরি করে, অর্থাৎ সংক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে এটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়।
সেহেতু এটি জ্যামিতিক হারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় দেশব্যাপী বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। প্রথমত, কোনো স্থানে খুব বেশি মানুষের সমাগম যেন না হয়, সেদিকে স্থানীয় প্রশাসনকে লক্ষ রাখতে হবে। কোনো এলাকায় সংক্রমণের হার বেশি হলে সেই এলাকাকে কঠোর নজরদারির আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রেও বিশেষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে।
প্রয়োজনে বেশি সংক্রমিত এলাকাগুলো লকডাউন করার কথা ভাবতে হবে। যারা হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবেন, তাদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া উচিত নয়।
আমরা মনে করি, মানুষ সচেতন ও সতর্ক থাকলে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। বরং মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হলেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেহেতু রোগটি প্রাণঘাতী হয়ে দেখা দিয়েছে, সেহেতু এ ব্যাপারে আমাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে অবশ্যই। তবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হলে এ নিয়ে জনমনে উৎকণ্ঠার কোনো কারণ ঘটবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস।
করোনা কী কী পদক্ষেপ নিলে এ ভাইরাসের সংক্রমণ বা তা ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যায়, তা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিশ্চয়ই জানেন।রোগটির বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিতে পারেন। এবিষয়ক জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম দেশব্যাপী চালানো উচিত বলে আমরা মনে করি।