বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম | সাবলিড » করোনাভাইরাসের প্রধান সংক্রমণকারীরা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
করোনাভাইরাসের প্রধান সংক্রমণকারীরা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক:যখনই কোনো মহামারী ছড়ায়, তখনি দেখা যায় তার একটি প্রধান অনুষঙ্গ হলো বিচ্ছিন্নভাবে আক্রান্ত কিছু ব্যক্তি তাদের মধ্যে থাকা জীবাণুর সংক্রমণ ঘটান জনগোষ্ঠীর বড় অংশের মধ্যে।এজন্য তাদের দায়ী করা যাবেনা তবে রোগটি কীভাবে ছড়ায় সে প্রেক্ষাপটে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
খবর পাওয়া যাচ্ছে যে এ ধরণের প্রধান সংক্রমণকারীদের দ্বারাই করোনাভাইরাস এমন মহামারী আকারে পৌঁছেছে চীনের উহানকে কেন্দ্র করে।
সুপার স্প্রেডার বা প্রধান সংক্রমণকারী মানে কী
এটা একটি ধোঁয়াশে টার্ম যার নির্দিষ্ট কোনো বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা নেই।
কিন্তু এটা হলো এমন একটি অবস্থা যখন একজন আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে অনেকে সংক্রমিত হন।
দেখা যাচ্ছে গড়ে একজন আক্রান্ত ব্যক্তি আর অন্তত দুই বা তিনজনের মধ্যে করোনাভাইরাসের জীবাণু ছড়িয়েছে।
কিন্তু এটি সাধারণ হিসেব কারণ কোনো কোনো আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে একজনও আক্রান্ত হয়নি আবার কারো কাছ থেকে একাধিক মানুষ সংক্রমিত হয়েছে।
কতটা বড় হয়ে উঠতে পারে এ ধরণের ঘটনা
ব্যাপক- এবং মহামারীতে তাদের প্রভাব হতে পারে বিশাল।
২০১৫ সালে মধ্যপ্রাচ্যে মার্সের ক্ষেত্রে একজন মাত্র রোগী ৮২জনকে সংক্রমিত করেছিলো।
আবার পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলার ক্ষেত্রে তিন শতাংশ লোকের কাছ থেকেই জীবাণু আক্রান্ত হয়েছিলো আক্রান্তদের ৬১ভাগ।
কেন কিছু লোক বেশি ছড়ায়
কিছু লোক অনেক বেশি লোকের সাহচর্যে থাকেন - সেটা হতে পারে চাকরির কারণে বা যেখানে তিনি বাস করেন সেই কারণেও হতে পারে।
এর মানে হলো এদের কেউ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার দ্বারাই বেশি মানুষ আক্রান্ত হতে পারে।
“বাচ্চারা ভালো থাকে কারণ তাদের স্কুল বন্ধ করে দেয়াটা একটা কার্যকর পদক্ষেপ হয়,” বলছিলেন লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন এর ড: জন এডমুন্ডস।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মার্ক উলহাউজ বলছেন পেশাদার যৌনকর্মীদের মাধ্যমে এইডস ছড়িয়েছিলো।
সার্সের ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি গুরুতরভাবে সংক্রমিত ছিলো এবং তারা বিপুল সংখ্যক স্বাস্থ্য কর্মীর সংস্পর্শে এসেছিলো। ৎ
তারা কীভাবে প্রাদুর্ভাবে পরিবর্তন আনতে পারে
ড: এডমুন্ডস এর মতে প্রাদুর্ভাবের শুরুতে এটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
করোনাভাইরাসের মতো নতুন সংক্রমণগুলো এসেছে প্রাণী থেকে।
যখন এটা প্রথম কোনো ব্যক্তির মধ্যে সংক্রমিত হয় তখন রোগটা ছড়ানোর আগে শেষও হয়ে যেতে পারতো।
কিন্তু এটি যদি ছড়ানোর পথ পেয়ে যায় তাহলেই এটি মহামারীতে পরিণত হতে পারে।
এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাওয়ার উপায়ও এটিই।
আর প্রথম সংক্রমণের শিকার যারা তেমন কয়েকজন প্রধান সংক্রমণ কারীতে পরিণত হলে তখন তা নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়, বলছেন ড: ম্যাকডারমট।
সুপার স্প্রেডিং থাকলে করোনাভাইরাস বন্ধ হবে কীভাবে
এভাবে প্রধান সংক্রমনকারীদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ানোটা অবাক করার মতো কোনো ব্যাপার নয়।
এ মূহুর্তে যারা চিহ্নিত হয়েছে তাদের নিয়েই কাজ চলছে বা যাদের মধ্যে দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে তাদের নিয়ে।
“এর কারণ হলো আপনি প্রধান সংক্রমণকারী বা সুপার স্প্রেডারদের কোনোভাবে এড়িয়ে যেতে পারেননা,”বলছিলেন প্রফেসর উলহাউজ।
প্রধান সংক্রমণকারী বা সুপার স্প্রেডাররা দায়ী?
ঐতিহাসিকভাবে সবক্ষেত্রেই তাদের দিকে আঙ্গুল তাক করা হয়।
টাইফয়েড ম্যারি নামে পরিচিত আইরিশি কুক ম্যারি ম্যালন টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন, যদিও তার কোন লক্ষ্মণ ছিলোনা।
তাকে জোর করে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিলো।
অথচ বাস্তবতা হলো তার কোনো দোষ ছিলোনা।
ড: ম্যাকডরমট বলছেন যারা শুরুতে আক্রান্ত হন তারা নিজে কোনো দোষ না করেই আক্রান্ত হন।
“তাদের দরকার যত্ন আর ভালোবাসা।”