মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » আইন-আদালত | শিরোনাম | সাবলিড » পিএইচডি দিতে আইন মানা হচ্ছে কিনা জানতে চায়- হাইকোর্ট
পিএইচডি দিতে আইন মানা হচ্ছে কিনা জানতে চায়- হাইকোর্ট
বিবিসি২৪নিউজ,আদালত প্রতিনিধি: দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইন-বিধি মেনে পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি দিচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।এছাড়া শিক্ষক, গবেষকদের পিএইচডিতে জালিয়াতি বন্ধ করার জন্য গবেষণা প্রস্তাব চূড়ান্ত করার আগে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে তা যাচাই বা নীরিক্ষার পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে হাই কোর্ট।
পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রির ক্ষেত্রে নকল, জালিয়াতি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইউজিসি চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।গত ২১ জানুয়ারি প্রথম আলো অনলাইনে ‘ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করে।
পরে গত ২৮ জুনয়ারি উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় অভিযোগ ওঠা ওই ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।আবুল কালাম লুৎফুল কবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ছিলেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সভার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। শিক্ষক আবুল কালাম লুৎফুর কবীরকে অব্যাহতির পাশাপাশি অভিযোগটি তদন্তে একটি কমিটিও করা হয়।ওই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ৬০ দিনের দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মো. মনিরুজ্জামান লিঙ্কন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।রিটকারী আইনজীবী মনিরুজ্জামান বলেন, “আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশেষ করে উচ্চতর শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষক-গবেষকরা যে পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি নেন, এ বিষয়ে আমরা বিভিন্ন সময় জেনেছি এ ডিগ্রি নেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষক-গবেষকরা জালিয়াতি বা বিভিন্ন অনৈতিক পথ অবলম্বন করছেন। বিষয়টি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ছিল। এর মধ্যে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি খবর ছাপা হয় প্রথম আলোতে।
“তখন বিষয়টি নজরে এনে পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি অর্জনে জালিয়াতি রোধের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করি। আজ আদালত রুল জারির পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন।এ আইনজীবী বলেন, “আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনেও যদি অবৈধ পথ বেছে নিতে হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা কোথায় আছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আদালত বলেছেন, প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত একটি বিশ্ববিদ্যালয় এখন র্যাংকিংয়ে ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পাওয়া যায় না। এটা খুবই দুঃখজনক।
গত ২১ জানুয়ারি প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলা হয়, ‘৯৮ শতাংশ হুবহু নকল পিএইচডি থিসিসের মাধ্যমে ২০১৫ সালে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর।২০১২ সালে রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী-গবেষকের জমা দেওয়া একটি ‘স্টুডেন্ট পেপারস’-এর সঙ্গে লুৎফুল কবীরের নিবন্ধের ৯৮ শতাংশ হুবহু মিল রয়েছে। এটিসহ মোট ১৭টি জার্নাল, আর্টিকেল ও গবেষণাপত্রের সঙ্গে নিবন্ধটির বিভিন্ন অংশের উল্লেখযোগ্য মিল পাওয়া গেছে, যেগুলোর সবই লুৎফুল কবীরের অভিসন্দর্ভের (থিসিসে) আগে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত ২২ জানুয়ারি হাই কোর্টে রিট করেছিলেন আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন।আবেদনে পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভের অনুমোদনের আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র (এনওসি) নেওয়ার বিধান করার নির্দেশনাও চাওয়া হয় রিটে।