শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » শিরোনাম | সাবলিড | স্বাস্থ্যকথা » করোনাভাইরাস থেকে ঝুঁকিমুক্ত নয় বাংলাদেশ
করোনাভাইরাস থেকে ঝুঁকিমুক্ত নয় বাংলাদেশ
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক:চীনসহ কয়েকটি দেশে সংক্রমিত করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি থেকে মুক্ত নয় বাংলাদেশ। কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বাংলাদেশ থেকে চীনে আসা-যাওয়া করছে। এছাড়া অন যেসব দেশে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে, সেই দেশগুলোর সঙ্গেও বাংলাদেশের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।
ফলে এখনও কেউ আক্রান্ত না হলেও বাংলাদেশ এ ভাইরাস থেকে ঝুঁকিমুক্ত নয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়। এ বিষয়ে জরুরি সহায়তার জন্য চারটি হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে- ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫।
অধিদফতরের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) সেমিনার কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি)।
সংবাদ সম্মেলনে সিডিসির পরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, কিছু ভাইরাস মানুষ ছাড়া অন্যান্য পশু-পাখির মধ্যে সংক্রমিত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এটি ওরকমই একটি ভাইরাস। এর উপস্থিতি প্রথম দেখা যায় গত বছরের ৮ ডিসেম্বর।
এ ভাইরাসে এ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক লোক আক্রান্ত হয়েছে এবং ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরীক্ষা করে দেখেছে, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তাদের সবাই অন্য কোনো শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন।
অধ্যাপক সানিয়া বলেন, যেহেতু চীনের সঙ্গে আমাদের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে এবং বিপুল সংখ্যক ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের ভ্রমণ করতে যায়, তাই এ ক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকি রয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এ ভাইরাসের ঝুঁকি খুবই সামান্য। এছাড়া এর সংক্রমণকে জরুরি অবস্থা
হিসেবে ঘোষণা করা হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসেছে সংস্থাটি। ইতিমধ্যে রোগটি চীনসহ থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, হংকং ও আমেরিকায় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে অধ্যাপক সানিয়া বলেন, প্রথমে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসকষ্টের সঙ্গে কাশি, নিউমোনিয়া এবং সর্বশেষে কিডনি ফেইলিওরের মাধ্যমে মৃত্যুবরণ করে।
আইইডিসিআর’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেবরিনা ফ্লোরা বলেন, আমরা আগে থেকেই অবহিত ছিলাম। তাই ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়েছে।
শাহজালাল বিমানবন্দরসহ দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন ও স্বাস্থ্য ডেস্কে সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরসহ দেশের সাতটি প্রবেশপথে করোনা ভাইরাস স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালু হয়েছে। নতুন এ ভাইরাস সম্পর্কে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রতিরোধের জন্য রোগ প্রতিরোধ সংক্রান্ত প্রচার কার্যক্রম নেয়া হয়েছে।
এ ভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য রেফারেল হাসপাতাল হিসেবে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং সেখানে আইসোলেশন ওয়ার্ডও করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত রোগপ্রতিরোধী পোশাক মজুদ রাখা হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরে কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ড প্রস্তুত রয়েছে। বিমানবন্দরের ভেতরে আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত শনাক্তকরণের জন্য ক্রুদের মাধ্যমে চীন ও আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে হেলথ ডিক্লারেশন ফর্ম ও প্যাসেঞ্জার লোকেটর ফরম দেয়া হচ্ছে।