মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » পরিবেশ ও জলবায়ু » চীনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কী জানা গেছে?
চীনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কী জানা গেছে?
বিবিসি২৪নিউজ,মনির হোসেন:চীনে নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত শনি ও রবিবারে তিন গুন বেড়ে গেছে। ভাইরাসটি এখন উহান থেকে অন্যান্য বড় বড় শহরেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।এক কোটিরও বেশি মানুষের শহর উহানে নতুন করে ১৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। রাজধানী বেইজিং-এ আক্রান্ত হয়েছে আরো দুজন এবং শেনঝেনে এখনও পর্যন্ত একজন আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।এনিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০০ জনে। এর মধ্যে তিনজন মারাও গেছেন।কিন্তু যুক্তরাজ্যে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা সরকারি হিসেবের চাইতেও অনেক বেশি। তাদের ধারণা প্রায় ১,৭০০ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।ভাইরাসটির নাম করোনাভাইরাস।
লোকজন এই ভাইরাসে এমন এক সময়ে আক্রান্ত হচ্ছে যখন চীনে নতুন বছরে উদযাপনের জন্যে লাখ লাখ মানুষ ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।বছরের এই সময়ে তারা এক সপ্তাহের মতো ছুটি কাটায় যখন তারা নিজেদের গ্রামের বাড়িতে পরিবারের কাছে বেড়াতে যায়। একারণে এই ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।চীনে স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষ বলছে, এই ভাইরাসটি প্রতিরোধ-যোগ্য এবং একে নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব।
কর্মকর্তারা বলছেন, যারাই উহান শহর ছেড়ে অন্যান্য শহরে যাবে তাদের প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা হবে।
কখন থেকে শুরু
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গত ডিসেম্বর মাসে উহানে প্রথম এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করেছিলেন।তারা বলছেন, এটি করোনাভাইরাসের একটি প্রজাতি।এই ভাইরাসের ফলে লোকজন নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়েছে। তবে ভাইরাসের এই ধরনটি সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত কিছু জানা যায় নি।ধারণা করা হয় যে একটি বাজার থেকে এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে কিন্তু এটি ঠিক কিভাবে ছড়িয়ে পড়ছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা এখনও সেটা নিশ্চিত করতে পারেন নি।
চীনের বাইরে আরো তিনটি দেশেও এই ভাইরাসটি পাওয়া গেছে। দেশগুলো হচ্ছে- দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড এবং জাপান।নতুন এই ভাইরাসের প্রকোপ সার্স ভাইরাসের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। সার্স ভাইরাসও এক ধরনের করোনাভাইরাস।২০০০ সহস্রাব্দের শুরুর দিকে সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৭৭৪ জন নিহত হয়ে যাচ্ছে। মূলত এশিয়ারই বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছিল।নতুন ভাইরাসটির জেনেটিক কোড বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এর সাথে সার্স ভাইরাসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
আমরা কী জানি
ধারণা করা হচ্ছে এটি করোনাভাইরাসের একটি নতুন প্রজাতি। এর আগে মানবদেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি।
করোনাভাইরাসের মধ্যে রয়েছে অনেক ধরনের ভাইরাস। এসবের মধ্যে ৬টি সম্পর্কে জানা গেছে যা মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়েছে। এই প্রজাতিটি নিশ্চিত করা হলে এখনও পর্যন্ত জানা করোনাভাইরাসের সংখ্যা হবে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, পশু থেকেই এই ভাইরাসের উৎপত্তি। সম্ভবত তারাই এর প্রাথমিক উৎস। কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষ থেকেও মানুষে ছড়াতে পারে।এই ভাইরাসে সংক্রমণের কিছু উপসর্গ হচ্ছে, শ্বাসকষ্ট-জনিত সমস্যা, জ্বর, কাশি।
লোকজনকে জীবন্ত পশুর অনিরাপদ সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সর্দি কাশিতে ভুগছে এমন লোকজনের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে না যাওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।