
সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » গাজায়-ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে উত্তাল সারা দেশ
গাজায়-ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে উত্তাল সারা দেশ
বিবিসি২৪নিউজ,অনলাইন ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা-উপজেলা শহরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নিজেদের অবস্থান থেকে রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ মিছিল, বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন। তারা ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার (৭ এপ্রিল) বিশ্বব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে দেশের রাজধানীসহ জেলায় জেলায় শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ এসব বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এদিন সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আলাদা আলাদা মিছিল এবং প্রতিবাদ হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল ১১টায় রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা। তখন বেশ কয়েকটি মিছিল সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে শুরু হয়ে এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালে গিয়ে শেষ হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য ও অপরাজেয় বাংলার সামনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। এ সময় তাদের হাতে ‘বয়কট ট্রাম্প, সেভ ফিলিস্তিন’, ‘বয়কট ইউএসএ’ লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
গাজায় নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সংহতি সমাবেশ থেকে তিন দফা দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এই সমাবেশ করে শিক্ষক সমিতি।
মোহাম্মদপুরে দুপুরে গাজায় হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল করেছে। এছাড়া বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করে বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ), ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (আইইউবি), আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি) স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এসইউবি) ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।
বায়তুল মোকাররম এলাকায় খেলাফত মজলিস ও জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল
এছাড়া অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মোহাম্মদপুরে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীরা, গ্রিন রোডে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের শিক্ষার্থীরা, আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভারসিটির শিক্ষার্থীরা, বাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা, উত্তরায় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি ও শান্ত মরিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা, বনানীতে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা, পূর্বাচলে গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরাও।
জামায়াত
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যা ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে পুরান ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে আরও যুক্ত হয়েছিলেন আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও পথচারীরা। এছাড়া ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেটে এবং ঢামেকসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার ও টিএসসি চত্বরে বিক্ষোভ করেন।
বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেন। তাদের দাবি— ইসরায়েলের এই হামলা আন্তর্জাতিকভাবে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হওয়া উচিত এবং বিশ্ব নেতাদের উচিত এই বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করা।
রাজধানীর বারিধারায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস এলাকায় মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন একদল জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দূতাবাস ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাদ আসর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত বিক্ষোভ মিছিল করেছে। পাশাপাশি বিকালে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে খেলাফত মজলিস ও জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে কয়েক হাজার মানুষ সমবেত হয়। এতে ইসরায়েলবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন ও প্লেকার্ড নিয়ে অংশগ্রহণ করেন তারা। এছাড়া বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা প্রদর্শন করে নিরীহ ফিলিস্তিনদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়। অনেকে প্রতীকী লাশ বহন করেন।
বিকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় ওই এলাকার চারদিকে বিক্ষোভকারীদের ঢল নামে। সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের হাতে বিভিন্ন ফটোকার্ড ও ব্যানার নিয়ে সমবেত হয় শত শত মানুষ।
ঢাকা ছাড়াও সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। একইসঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করা হয়।