
সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | পরিবেশ ও জলবায়ু | শিরোনাম » ট্রাম্পের হুমকির জবাবে কঠোর বার্তা দিলো ইরান
ট্রাম্পের হুমকির জবাবে কঠোর বার্তা দিলো ইরান
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বোমা হামলার হুমকি বাস্তবায়ন করেন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর প্রতিশোধমূলক জবাব পাবে। সোমবার (৩১ মার্চ) তেহরানে পবিত্র রমজান মাসের সমাপ্তি ও ঈদুল ফিতরের নামাজের পর দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে এমন কথা বলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রবিবার ট্রাম্প আবারও হুমকি দিয়ে বলেন, তেহরান যদি ওয়াশিংটনের সঙ্গে নতুন পরমাণু চুক্তিতে সম্মত না হয়, তাহলে ইরানে বোমা হামলা চালানো হবে। তিনি মার্চের শুরুর দিকে ইরানের নেতৃত্বের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন, যেখানে দুই মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
খামেনি বলেন, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের শত্রুতা সবসময় ছিল। তারা আমাদের আক্রমণের হুমকি দিচ্ছে, যা আমরা খুব সম্ভব বলে মনে করি না। তবে যদি তারা কোনও ধরণের দুষ্কর্ম করে, তাহলে অবশ্যই কঠোর প্রতিশোধমূলক জবাব পাবে।
তিনি আরও বলেন, আর যদি তারা অতীতের মতো আমাদের দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চিন্তা করে, তাহলে ইরানের জনগণ নিজেরাই তাদের মোকাবিলা করবে।
ইরানি কর্তৃপক্ষ পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর দোষারোপ করে বলছে যে, তারা ২০২২-২৩ সালে মাহসা আমিনির হিজাব বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার ও মৃত্যুর পর ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ এবং ২০১৯ সালের জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দেশব্যাপী প্রতিবাদকে উসকে দিয়েছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের চিঠির জবাব দিয়েছে ইরান। রবিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান জানান, তেহরান ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় যাবে না। তবে সর্বোচ্চ নেতা খামেনির নির্দেশ অনুযায়ী পরোক্ষ আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাঘাইএক টুইট বার্তায় জানান, একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ‘বোমা হামলার’ হুমকি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার মূলনীতির প্রতি গুরুতর অবমাননা।
তিনি বলেন, হিংসা হিংসার জন্ম দেয়। শান্তি শান্তির পথ দেখায়। যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই পথ বেছে নিতে হবে এবং তার ফলাফল মেনে নিতে হবে।
২০১৭-২১ মেয়াদের প্রথম প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ট্রাম্প ২০১৫ সালের চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। ওই চুক্তির আওতায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর কঠোর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছিল, যার বিনিময়ে তেহরান নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেত।
ট্রাম্প পুনরায় কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এরপর থেকে ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি দ্রুত গতিতে বাড়িয়ে তুলেছে, যা চুক্তির নির্ধারিত সীমা অনেকটাই অতিক্রম করেছে।
পশ্চিমা শক্তিগুলো ইরানকে গোপনে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি পরিচালনার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। তারা বলছে, তেহরান তার ইউরেনিয়ামকে এমন স্তরে সমৃদ্ধ করছে যা বেসামরিক পারমাণবিক শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় সীমার চেয়ে অনেক বেশি।
তবে তেহরান বরাবরই বলেছে যে, তার পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে শান্তিপূর্ণ বেসামরিক শক্তি উৎপাদনের জন্য।