
সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | ইউরোপ | প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » রোহিঙ্গাদের সহায়তায় দরকার সাড়ে ৯৩ কোটি ডলার: জাতিসংঘ
রোহিঙ্গাদের সহায়তায় দরকার সাড়ে ৯৩ কোটি ডলার: জাতিসংঘ
বিবিসি২৪নিউজ,ইইউ প্রতিনিধি: মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং কক্সবাজারের স্থানীয়দের মানবিক সহায়তায় ৯৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের অর্থায়ন প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
রোহিঙ্গাদের জন্য যৌথ সাড়াদান কর্মসূচির (জেআরপি) অধীনে হবে এই অর্থায়ন। সোমবার জেনিভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৫-২৬ সালের জেআরপি ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মিলে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা-ইউএনএইচসিআর এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জেআরপি বাস্তবায়ন করে।
আইওএমের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয়দের সহায়তা ২০২৫ সালে সাড়ে ৯৩ কোটি ডলার অর্থায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতন ও গণহত্যার মুখে ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইন (আরাকান) রাজ্য থেকে স্রোতের মত বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। যেখানে আগে থেকেই ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও চার লাখ।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ওই বছরের শেষ দিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয় মিয়ানমারের অং সান সু চি সরকার। ওই বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে সইও করে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে দুই দফায় প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারেনি রোহিঙ্গারা, ভেস্তে যায় আলোচনা।
এরপর আসে কোভিড মহামারী, রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগেও ঢিল পড়ে। বিশ্বজুড়ে সেই সংকটের মধ্যেই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সু চির সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন সামরিক জান্তা জেনারেল মিন অং হ্লাইং। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আসে নতুন বাধা।
এখন মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের কারণে প্রত্যাবাসনের আলোচনা আপাতত বন্ধ, উল্টো রাখাইনে যুদ্ধের কারণে গত বছর নতুন করে অনুপ্রবেশ করেছে লাখখানেক রোহিঙ্গা।
জেআরপি ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর এবারই প্রথম একসঙ্গে দুই বছরের জেআরপি ঘোষণা করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার এই জেআরপিতে যোগ দিয়েছে ১১৩টি অংশীদার সংস্থা ও দেশ।
জেনিভায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ও অগ্রাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত খলিলুর রহমান এবং ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডিকে নিয়ে দাতাদের উদ্দেশে জেআরপি উপস্থাপন করেন আইওএম মহাপরিচালক এমি পোপ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আট বছরে এসে রোহিঙ্গা সংকট এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে সেভাবে নেই; যদিও সহায়তা বেশ জরুরি।
“শরণার্থী শিবিরে থাকা জনগোষ্ঠীর ৫০ শতাংশের বেশি নারী ও শিশু। যারা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ও নির্যাতনের ঝুঁকিতে রয়েছেন। অন্যদিকে প্রতি তিনজনে একজন রোহিঙ্গার বয়স ১০ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষা, পর্যাপ্ত দক্ষতা গড়ে তোলা এবং আত্মনির্ভরশীলতার সুযোগ না থাকায় তাদের ভবিষ্যৎ থমকে আছে।”
বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে আইওএম বলেছে, সহায়তা কার্যক্রমে ঘাটতির কারণে খাদ্য সহায়তা, জ্বালানি এবং মৌলিক আশ্রয়ের জন্য সহায়তার পরিমাণ সঙ্কুচিত করতে হয়েছে। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করায় রোহিঙ্গারা সাগরপথে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার মত ঝুঁকিপূর্ণ নানা কাজ বেছে নিতে পারে।