
বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | ইউরোপ | শিরোনাম | সাবলিড » রাশিয়ার ভয়ঙ্কর আগ্রাসী থাবায় থেকে বাঁচতে, আত্মরক্ষায় দিশেহারা ইউরোপ
রাশিয়ার ভয়ঙ্কর আগ্রাসী থাবায় থেকে বাঁচতে, আত্মরক্ষায় দিশেহারা ইউরোপ
বিবিসি২৪নিউজ,ইইউ প্রতিনিধি: যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন সম্পর্ক ভেঙে টুকরো হয়ে গেছে। ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বাকবিতণ্ডার পরই আরও চির ধরে বন্ধুত্বে। দুই দেশের প্রকাশ্য ভাঙনে উদ্বিগ্ন পুরো বিশ্ব। বিশেষ করে ইউরোপীয় জোট। যে কোনো সময় পড়তে পারে রাশিয়ার ভয়ঙ্কর আগ্রাসী থাবায়। এই ভয়েই এখন আত্মরক্ষায় দিশেহারা পুরো ইউরোপ। নিজেদের বাঁচাতে একের পর এক বৈঠক করছে তারা। বাড়াচ্ছে প্রতিরক্ষা বাজেটও। তবে বিপদ আছে জেনেও ইউক্রেনকেও একা ছাড়েনি তারা। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে বাঁচাতেও চলছে নানা পরিকল্পনা। ইউক্রেনকে সহায়তায় ও নিজেদের প্রতিরক্ষা বাড়াতে বৃহস্পতিবার একত্রিত হয়েছেন ২৭ দেশের নেতারা। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিল ভবনে অনুষ্ঠিত দু’দিনের সম্মেলনে নিরাপত্তার পাশাপাশি জ্বালানি, প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক নীতির বিষগুলো নিয়েও আলোচনা করবেন তারা। বিবিসি
সম্মলনে পৌঁছানোর সময় ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন বলেছেন, বিশ্ব ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন এসেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপও এগিয়ে আসছে। রাশিয়ার হুমকি আসার আগেই তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ইউরোপের আত্মরক্ষার জন্য পুরোপুরি সক্ষম হওয়া উচিত। এর আগে, নিরাপত্তার জন্য সদস্য দেশগুলোকে প্রতিরক্ষা ব্যয় ৩.৫ শতাংশ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউরোপকে পাঁচ বছরের মধ্যে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে হবে বলেও জানিয়েছে জোটটি। ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেটেরি অর্পো শীর্ষ সম্মেলনে পৌঁছানোর আগে ইইউকে ইউক্রেনকে সামরিক ও রাজনৈতিকভাবে সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার হেলসিঙ্কিতে জেলেনস্কিকে স্বাগত জানানোর সময় অর্পো আরও বলেছেন, ‘ইউক্রেন সত্যিই ইইউর সদস্য হতে চায়। তারা আমাদের একজন হতে চায় এবং সেই কারণেই আমাদের তাদের সাহায্য করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের সদস্যপদ লাভের জন্য তাদের সমর্থন করতে হবে।’
বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ান আগ্রাসনের মুখে প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি এবং অস্ত্র উৎপাদন বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ফ্রান্স রাফালে যুদ্ধবিমান বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের দেশ এবং নিজেদের রক্ষা করতে হবে, আমরা যুদ্ধ এড়াতে চাই। তবে আমাদের আত্মরক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আগামী মাস এবং বছরগুলোতে কী ঘটবে তা কেউ বলতে পারব না। আমি যা চাই তা প্রস্তুত থাকা।’
এদিকে ইউরোপের সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করতে ৫০০ বিলিয়ন ইউরো প্রতিরক্ষা বাজেটের অনুমোদন দিয়েছে জার্মানি। জাতীয় ও ইউরোপীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জার্মানির এ পদক্ষেপের প্রশংসা জানিয়েছেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার এটিকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে অভিহিত করেছেন। খ্রিস্টান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের নেতা ফ্রেডরিখ মার্জ বলেছেন, ইউরোপের বিরুদ্ধে পুতিনের আগ্রাসন ঠেকাতে এই বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ কমিশনার আন্দ্রিয়াস কুবিলিয়াস ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যম বাবেলকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে আমরা জানি, রাশিয়া আগামী পাঁচ বছরে ইইউ এবং ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলাতে আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হতে পারে। তাই আমাদেরও প্রস্তুত হতে হবে।’
এদিকে বৃহস্পতিবার মস্কোয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ অভিযোগ করেন, ব্রাসেলস এবং অন্যান্য ইউরোপীয় রাজধানী থেকে আসা সংকেতগুলোর বেশিরভাগই সামরিক শক্তি বৃদ্ধির পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পর্কিত। তিনি বলেছেন, ‘ইউরোপ এতটাই সামরিকীকরণে এগিয়ে গেছে যে, তারা যুদ্ধ পক্ষ হয়ে উঠেছে’। তিনি আরও বলেছেন, ‘এটি রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপায় খোঁজার মনোভাবের সম্পূর্ণ বিপরীত।’