![BBC24 News](https://www.bbc24news.com/cloud/archives/fileman/bbc-logo.jpg)
রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | শিরোনাম | সাবলিড » ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপ
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপ
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টানা ৩ বছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধের খুব দ্রুতই অবসান ঘটবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। রোববার নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের শুরুর দিকের পর এই প্রথম মার্কিন ও রুশ দুই প্রেসিডেন্ট শুক্রবার সরাসরি টেলিফোনে কথা বলেছেন।
এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানে নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার বিষয়টি জানান। এ সময় পুতিনের সঙ্গে কতবার আলোচনা করেছেন বলে জানতে চাওয়া হলে ট্রাম্প বলেন, ‘এটা না বলাই ভালো।’ নিউইয়র্ক পোস্টকে তিনি আরও বলেছেন, মানুষের মৃত্যু থেমে যাক, তিনি (পুতিন) এটাই দেখতে চান। তবে ট্রাম্প-পুতিনের টেলিফোন আলোচনার বিষয়ে হোয়াইট হাউজের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি ট্রাম্প। এদিকে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা তাস নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন, ভিন্ন ভিন্ন অনেক ধরনের যোগাযোগ হচ্ছে।
নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনের বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে পেসকভ বলেন, ‘এসব যোগাযোগ বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছু জানি না এবং সম্ভবত কিছু বিষয়ে অবগতও নই। আমি এটিকে নিশ্চিত অথবা অস্বীকার করতে পারছি না।’
আগামী সপ্তাহে একই বিষয়ে আলোচনার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন ট্রাম্প। তবে তাদের সাক্ষাৎ মুখোমুখি হবে নাকি ভিডিও কনফারেন্সে হবে তা স্পষ্ট করেননি তিনি। শুক্রবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি সম্ভবত আগামী সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন। এছাড়া তিনি আবারও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহও প্রকাশ করেছেন।
এদিকে সাহায্যের বিনিময়ে ইউক্রেনের খনিজসম্পদের ভাগ চেয়েছেন ট্রাম্প। তার সেই প্রস্তাবের সূত্র ধরে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে খনিজসম্পদ দিতে রাজি। তবে বিনিময়ে ওয়াশিংটনকে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশনায় রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধেও রাজি।
শুক্রবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি ইউক্রেনের একটি গোপন মানচিত্রের ওপর দৃষ্টিপাত করেন। যেখানে ইউক্রেনের বিরল মৃত্তিকা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজের বিশাল মজুত চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, জেলেনস্কির এই প্রচেষ্টা মূলত ট্রাম্পের ব্যবসায়িক মনোভাবকে আকর্ষণ করার লক্ষ্যে। ট্রাম্পের প্রশাসন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ দ্রুত সমাপ্তির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে আসে অস্ত্র-খনিজ চুক্তি বিনিময়।
জেলেনস্কি দাবি করেন, ইউক্রেনে ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাইটানিয়াম মজুত রয়েছে। এই টাইটানিয়াম বিমান ও মহাকাশ শিল্পে অপরিহার্য। এ ছাড়া পারমাণবিক শক্তি ও অস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহৃত ইউরেনিয়ামেরও বিশাল মজুত আছে। জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেছেন, কিয়েভ তার সম্পদ অন্যকে দিয়ে দেবে এমন কোনো প্রস্তাবনা দেয়নি বরং একটি পারস্পরিক সুবিধাজনক অংশীদারত্বের প্রস্তাব দিচ্ছে যাতে এই সম্পদগুলোকে যৌথভাবে ব্যবহার করা যায়। ইউক্রেনের খনিজ সম্পদগুলোর ২০ শতাংশের কম বর্তমানে রাশিয়ার দখলে রয়েছে। বিরল মৃত্তিকা খনিজগুলো উচ্চ শক্তির চৌম্বক, বৈদ্যুতিক মোটর এবং দৈনন্দিন ব্যবহার্য ইলেকট্রনিকসের উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ। জেলেনস্কি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, মস্কো এই খনিজগুলো তার মিত্র উত্তর কোরিয়া এবং ইরানকে দিতে পারে। তিনি আরও বলেছেন, আমাদের পুতিনকে থামাতে হবে এবং যা আমাদের কাছে আছে তা রক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে মধ্য ইউক্রেনের দিনিপ্রো অঞ্চল খুবই সমৃদ্ধ। এ অঞ্চলকে রক্ষা করতে হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হওয়ার আগেই জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে পশ্চিমা দেশগুলোর কর্মকর্তারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করবেন। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। এই সম্মেলনে ট্রাম্পের বিশেষ দূত কিথ কেলোগও উপস্থিত থাকবেন।
জেলেনস্কি আরও বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে আমার সরাসরি সাক্ষাৎ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তার সঙ্গে বৈঠকের আগে ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। অন্যথায় এটি ইউক্রেন ছাড়া ইউক্রেন সম্পর্কে একটি সংলাপ হয়ে যাবে।