বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » আর্ন্তজাতিক | এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য | শিরোনাম | সাবলিড » গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরাতে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতি নিতে বললেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরাতে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতি নিতে বললেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
বিবিসি২৪নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বৃহস্পতিবার বলেছেন, বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি যাতে স্থল, জল ও আকাশপথে গাজা ভূখণ্ড ত্যাগ করতে পারে তার নকশা প্রস্তুত করতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প গাজার বাসিন্দাদের এই ভূখণ্ড ত্যাগ করতে বলেছেন। কাটজ ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে “সাহসী পরিকল্পনা” বলে অভিহিত করে স্বাগত জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, হামাস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি স্থল ও বিমান হামলায় গাজা ভূখণ্ড বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা ভূখণ্ডের মালিকানা নিতে ইচ্ছুক; ২০ লক্ষ ফিলিস্তিনিকে অন্য দেশে চলে যেতে বাধ্য করা হবে। তারপর ভূমধ্যসাগর বরাবর ভুখণ্ডকে “রিভেরা অফ দ্য মিডল ইস্টে” রূপান্তরিত করবে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা ট্রাম্পের এই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
নেতানিয়াহু বুধবার বিকালে ফক্স নিউজকে বলেন, গাজা পুনর্নির্মাণকালে ফিলিস্তিনিরা এই স্থান ত্যাগ করে পরে ফিরে আসতে পারে।
নেতানিয়াহু বলেন, “এটা দারুণ ভাবনা। আমার মনে হয়, এই ভাবনাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাস্তবায়িত করা উচিত কারণ এটা সকলের জন্য আলাদা একটা ভবিষ্যতের জন্ম দেবে।”
ট্রাম্পের প্রস্তাব নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে; জাতিসংঘও সরব হয়েছে। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফানি দুজারিক বুধবার সংবাদদাতাদের বলেন, বলপূর্বক যে কোনও রকম বাস্তুচ্যুতি “জাতি নিধনের সমতুল্য।”
জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্ক-ওয়ালটার স্টেইনমার বুধবার বলেন, ট্রাম্পের প্রস্তাব “কিছু মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ, এমনকি ভয় সৃষ্টি করছে” এবং এটি “আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়।”
২২ সদস্যের আরব লিগ বলেছে, ট্রাম্পের পরিকল্পনা “অস্থিরতা তৈরির একটা উপায়” এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনাকে অগ্রসর করতে এটি সাহায্য করবে না।
কয়েক দশকব্যাপী ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাত রুখতে যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান সূত্রকে সমর্থন করেছে এবং এ নিয়ে সমঝোতাও করেছে।
ট্রাম্পের প্রস্তাবের পর অস্ট্রেলিয়া, চীন, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, রাশিয়া, সৌদি আরব ও স্পেন বলেছে, তারা এখনও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান সূত্রকেই সমর্থন করে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘকে “ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের অবিচ্ছেদ্য অধিকারকে রক্ষা” করতে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ট্রাম্প যা করতে চাইছেন তা হবে “আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বুধবার বলেছেন, ইসরায়েল-অধিকৃত গাজা থেকে মানুষকে বিতাড়ন করা অবৈধ।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।