শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | রাজনীতি | শিরোনাম | সাবলিড » ফখরুলের বক্তব্যে নাহিদ-আসিফ-হাসনাতের তীব্র প্রতিক্রিয়া, বিএনপির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার ও বৈষম্যবিরোধীদের টানাপোড়েন বাড়ছে!
ফখরুলের বক্তব্যে নাহিদ-আসিফ-হাসনাতের তীব্র প্রতিক্রিয়া, বিএনপির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার ও বৈষম্যবিরোধীদের টানাপোড়েন বাড়ছে!
বিবিসি২৪নিউজ,অনলাইন ডেস্ক: গত কয়েকমাসে বিএনপির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার ও বৈষম্যবিরোধীদের বিভিন্ন ইস্যুতে টানাপোড়েন দেখা গেলেও এখন নির্বাচন, সরকার ও রাজনৈতিক দল গঠন প্রসঙ্গে রীতিমত মুখোমুখি অবস্থানে দুই পক্ষ।
বুধবার বিবিসি বাংলাকে দেওিয়া সাক্ষাৎকারে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ থাকতে না পারলে নির্বাচন করতে নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে।’ ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করলে সরকার থেকে ‘বেরিয়ে আসা উচিত’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তার বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান সরকারের দুই তরুণ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ। প্রতিক্রিয়া জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও। তারা তিনজনই সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
নাহিদ ইসলাম যা বলছেন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মূলত আরেকটা এক এগারো সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার তথ্য উপদেষ্টা সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড পেজে লিখেছেন, ‘১/১১ এর বন্দোবস্ত থেকেই আওয়ামী ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটেছিল। বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যে সামনে আরেকটা ১/১১ সরকার, সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিকতা এবং গুম-খুন ও জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ার আলামত রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্র এবং অভ্যুত্থানের নেতৃত্বকে মাইনাস করার পরিকল্পনা ৫ই আগস্ট থেকেই শুরু হয়েছে। ৫ আগস্ট যখন ছাত্র-জনতা রাজপথে লড়াই করছে, পুলিশের গুলি অব্যাহত রয়েছ, তখন আমাদের আপসকামী অনেক জাতীয় নেতৃবৃন্দ ক্যান্টনমেন্টে জনগণকে বাদ দিয়ে নতুন সরকার করার পরিকল্পনায় ব্যস্ত ছিলেন (অনেকে ছাত্রদের কথাও বলেছেন সেখানে)।
’
নাহিদ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির পরিবর্তন, সংস্কার, নতুন সংবিধান, জুলাই ঘোষণা সব ইস্যুতেই বিএনপি বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অথচ এগুলা কোনোটাই ছাত্রদের দলীয় কোনো দাবি ছিল না। কিন্তু দেশের স্থিতিশীলতা, বৃহত্তর স্বার্থ এবং জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার জন্য ছাত্ররা বারবার তাদের অবস্থান থেকে সরে এসেছে।’
নাহিদ ইসলাম আরো লিখেছেন, ‘আর এই সরকার জাতীয় সরকার না হলেও সরকারে আন্দোলনের সব পক্ষেরই অংশীদারত্ব রয়েছে এবং সব পক্ষই নানান সুবিধা ভোগ করছে। সরকার গঠনের আগেই ৬ই অগাস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল এবং পুলিশের আগের আইজির নিয়োগ হয়েছিল যারা মূলত বিএনপির লোক।
এরকমভাবে সরকারের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত নানান স্তরে বিএনপিপন্থী লোকজন রয়েছে। নির্বাচনের নিরপেক্ষতার কথা বললে এই বাস্তবতায়ও মাথায় রাখতে হবে।’
আসিফ মাহমুদের স্ট্যাটাস
অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘উপদেষ্টাদের কেউ রাজনীতি করলে সরকার থেকে বের হয়েই করবে।’
বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে তিনি আরো বলেন, ‘একই সাথে রাজনৈতিক দলেরও সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করা অনুচিত। বিভিন্ন সরকারি বা সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগে তদবির বা চাপ প্রয়োগ করা অনুচিত।’
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ অবশ্য তার পোস্টে কারো নাম উল্লেখ করেননি।
হাসনাত আব্দুল্লাহ কী বলেছেন?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ অবশ্য সরাসরি আক্রমণ করেছেন বিএনপিকে।
তার মতে, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ও জুলাই স্পিরিট ধারণকারী ছাত্র-জনতার সম্মিলনে যখন নতুন একটি রাজনৈতিক দলের উত্থান হওয়ার আভাস পেলো ঠিক তখন বিএনপি সেটিকে চিহ্নিত করল তাদের দলীয় স্বার্থের বিপক্ষে হুমকি হিসেবে।’
বৃহস্পতিবার সামাজিক মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘…বিএনপি এ কথা ভুলে গেলো, গণ-অভ্যুত্থানের ফলে গঠিত হওয়া সরকারের ম্যান্ডেট ষাট-সত্তরভাগ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়া রাজনৈতিক দলের চেয়েও বেশি।’
‘নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত’ হলে ‘ঠিক এ কারণেই’ বিএনপি সেটিকে হুমকি হিসেবে দেখেছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশের কাঠামোগত পরিবর্তন করার সময় ও সুযোগ এলো অথচ বিএনপি দেশ পুনর্গঠনের এই সুযোগকে অবমূল্যায়ন করে হাজির হলো ১/১১ সরকারের ফর্মূলার আলাপ নিয়ে। ওদিকে অন্তর্বর্তী সরকার যখন দেশ সংস্কারের কাজে নিয়োজিত হলো তখন বিএনপি এসে বলল, এই সংস্কার করার ম্যান্ডেট বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই।’