বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » নির্বাচন | প্রিয়দেশ | রাজনীতি | শিরোনাম | সাবলিড » জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ফেব্রুয়ারি-মার্চে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে: বিএনপি
জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ফেব্রুয়ারি-মার্চে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে: বিএনপি
বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা: বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো চলতি বছরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন চায়। তাদের মতে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে এটাই ‘যৌক্তিক সময়’। এ লক্ষ্য অর্জনে ফেব্রুয়ারি-মার্চ নাগাদ বিএনপি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে পারে। তবে তারা সরকারের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে চায় না। বিএনপির আশা, জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে ‘যৌক্তিক সময়ে’ নির্বাচন আয়োজন করবে।
বিএনপির মতে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে তিন-চার মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। ২০২৫ সালের আগেই নির্বাচন হলে তাদের আপত্তি নেই। তবে তারা অভিযোগ করেছে, দেশে ‘পতিত ফ্যাসিবাদের’ নানা ষড়যন্ত্র চলছে, যা অস্থিরতা বাড়াচ্ছে। দ্রব্যমূল্য, অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলা এবং প্রশাসনে স্থিতিশীলতা না আসায় পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে তারা মনে করে। বিএনপি ও তাদের মিত্রদের মতে, দেশকে স্থিতিশীল করতে নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই। সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপেই নির্বাচনকেন্দ্রিক সংকটের সমাধান সম্ভব। দেরি হলে সংকট আরও গভীর হবে।
জানা গেছে, ২০২৫ সালে নির্বাচন আদায়ে সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচিতে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। রোডম্যাপের দাবিতে সোচ্চার দলটি অন্তর্বর্তী সরকারকে সরানোর পথে না গিয়ে ধারাবাহিক সভা-সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। ফেব্রুয়ারি-মার্চে দেশজুড়ে বড় সমাবেশের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রস্তুতি ও জনমত তুলে ধরার ভাবনা রয়েছে তাদের। এর পাশাপাশি, দলটি ৩১ দফা রূপরেখার নতুন ব্র্যান্ডিং ও বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার পর জেলাভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন করছে, যেখানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হচ্ছেন। এই কর্মসূচি শেষে নির্বাচন ইস্যুতে সরাসরি ফোকাস করবে বিএনপি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগে আপত্তি নেই বিএনপির। তারা মনে করে, দল গঠন করে জনগণের কাছে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে এটি যদি আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসনের প্ল্যাটফর্ম বা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠে, বিএনপির তাতে আপত্তি রয়েছে। ছাত্রদের কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্দেহ থাকলেও বিএনপি তাদের সঙ্গে বা সরকারের সঙ্গে কোনো বিরোধে জড়াতে চায় না। বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা বিএনপির লক্ষ্য নয়।
শত নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করেও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সরকারকে বিদায় করতে পারাকে ২০২৪-এর বড় অর্জন হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলটির নেতাদের মতে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নতুন বছরে জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা বড় চ্যালেঞ্জ। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে চায় বিএনপি। তারা ধৈর্য ধরে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে দেশকে কাঙ্ক্ষিত নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন বছরে বিএনপির প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নতুন বছরে জনগণের প্রত্যাশা, দেশে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত হবে, গণতন্ত্র জনগণের কাছে ফিরে যাবে, জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার ও ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরে পাবে, দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বিগত ১৪ বছর ধরে যে অন্যায়-অত্যাচার-নির্যাতন, দুর্নীতি হয়েছে, তার থেকে দেশ মুক্তি পাবে।
তিনি আরও বলেন, সামনে অনেক ইস্যু আছে, সেগুলো মোকাবিলা করা অবশ্যই এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। দুর্নীতি, ঘুষ-বাণিজ্য, চাঁদাবাজি এবং প্রশাসনে যে পক্ষপাতিত্ব, এগুলো থেকে মুক্ত হওয়া দেশের জন্য অবশ্যই চ্যালেঞ্জের। তারপরও এটা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আমরা চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন চাই, এটা যৌক্তিক সময়। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) আন্তরিক হলে এটা সম্ভব।