শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

BBC24 News
বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » হাজার কোটি টাকার সম্পদ সেই ডিবি হারুনের!
প্রথম পাতা » প্রিয়দেশ | শিরোনাম | সাবলিড » হাজার কোটি টাকার সম্পদ সেই ডিবি হারুনের!
৪১২ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

হাজার কোটি টাকার সম্পদ সেই ডিবি হারুনের!

---বিবিসি২৪নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা : কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া হারুন অর রশিদ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে চাকরি পান। পরে জানা যায়, তার বাবা ছিলেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। ২০০১ সালে তার পদায়ন আটকে দেয় বিএনপি সরকার। ওয়ান-ইলেভেনের সময় চাকরি স্থায়ী হয় তার।

সামনে তৎকালীন চিফ হুইপ বিএনপির নেতা জয়নাল আবদিন ফারুককে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন। সেই থেকে শেখ হাসিনার নেক নজরে, তরতর করে পদোন্নতি আর গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন হয় তার। এই সুযোগে হারুন হয়ে ওঠেন বেপরোয়া।
যেখানেই গেছেন তা নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, পুলিশ সদর দপ্তর কিংবা ডিবি, সব জায়গাতেই বিতর্কে জড়ান এই পুলিশ কর্মকর্তা। ঘুষ, চাঁদাবাজি, ডিবিতে ডেকে নিয়ে টাকা আদায়, জিম্মি করা, আটকে রেখে নির্যাতন, জমি দখল, গুম-খুন, মিথ্যা মামলার হয়রানি- হেন কাজ নেই যা করেননি তিনি।

আর এসব কাজে ব্যবহার করতেন তার অধীন কর্মকর্তাদের। পুলিশের সৎ ও নির্ঝঞ্ঝাট কর্মকর্তারা তার অধীনে কাজ করতে অস্বস্তি বোধ করতেন। এই প্রতিবেদকের কাছে একজন বিসিএস কর্মকর্তা জানান, গাজীপুরে পুলিশ সুপার থাকার সময় হারুন তাকে সেখানে নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি হারুনের খাসিলত জানতেন বলে তা এড়িয়ে যান।

তাই বলে হারুনের পেছনে লাইন ছোটও ছিল না। তাদের দিয়েই ঘুষ, চাঁদাবাজি, জিম্মি, জমি দখল সব অপকর্ম করাতেন আর ব্যাগ ভরতেন টাকায়। এভাবে গত ১২ বছরে গড়ে তোলেন হাজার কোটি টাকার সম্পদের পাহাড়। রাজধানী ঢাকাতে করেন দুই ডজন বাড়ি।

অথচ সর্বশেষ ডিআইজি পদমর্যাদার এই ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনারের (ডিবি) সরকারি স্কেল অনুযায়ী বেতন ছিল সাকল্যে ৮০ হাজার টাকার মতো।

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুর ও কিশোরগঞ্জ এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও তার সম্পদ রয়েছে। এসবের মূল্য হাজার কোটি টাকার বেশি।

এক উত্তরাতেই আছে তার দুই ডজনের বেশি বাড়ি ও ফ্ল্যাট। এসব দেখাশোনার জন্য উত্তরাতে আছে অফিস। সেখান সব সয়-সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করেন কথিত মামা জাহাঙ্গীর আলম। তার নামেও অনেক সম্পদ গড়েছেন হারুন।

হারুনের বিষয়ে একটা কথা প্রচলিত ছিল, কোনো কারণে সরকারের পরিবর্তন হলে বড় হিসাব চুকাতে হবে এই বরখাস্ত ডিআইজিকে। তাই আগাম ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন তিনি। ভি-১ ভিসার আওতায় সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব আছে হারুনের। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিউ হাইড পার্ক এলাকায় বাড়িও কিনে রেখেছেন।

উত্তরার সবখানে হারুনের বাড়িঘর

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এক উত্তরাতেই ডজনের বেশি বাড়ি আছে হারুনের। তার অধিকাংশ জোরজবরদস্তি আর মালিককে ‘বেকায়দায়’ ফেলে দখল করা বলে অভিযোগ আছে। তার উত্তরার বাড়িগুলোর মধ্যে ৩ নম্বর সেক্টরেই আছে ছয়টি বাড়ি ও মার্কেট।

নিজে সপরিবারে থাকেন তার ৩ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর রোডের বাড়িতে। এই আটতলা বাড়ির চতুর্থ তলায় তাদের বাস। একই রোডে হারুনের ছয়তলা একটি বাড়ি ব্যবহৃত হয় গেস্ট হাউস হিসেবে।

৩ নম্বর সেক্টরের ৭ নম্বর রোডের ৫ নম্বর হোল্ডিংয়ের ১০ কাঠা প্লটে দশতলা মার্কেট করেন শ্বশুরের নামে। ৯ নম্বর রোডের ১ নম্বর হোল্ডিংয়ে ৭ কাঠার বাণিজ্যিক প্লট এবং ১৫ নম্বর রোডের ২৩ নম্বর হোল্ডিংয়ে রয়েছে তার ১৪ তলা বাণিজ্যিক ভবন।

একই সেক্টরের ৯ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর প্লটটি হারুন ৩২ কোটি টাকায় বিক্রি করেন বলে তথ্য আছে। আর রবীন্দ্র সরণিতে ৭ কাঠার ৪১ নম্বর প্লটটি মাসিক ১৪ লাখ টাকায় ভাড়া দেন বরে জানা যায়।

৫ নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর রোডে ২৯ ও ৩০ নম্বর হোল্ডিংয়ের ১০ কাঠার দুটি প্লট রয়েছে তার। এর একটিতে টিনশেড ঘর এবং অন্যটিতে গুদাম।

১০ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের ৩৯ নম্বর হোল্ডিংয়ে ৫ কাঠার একটি প্লট রয়েছে হারুনের। একই সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলায় হারুনের ‘ভূমি অফিস’। এখানে তার সব সম্পত্তির কাগজপত্র সংরক্ষিত থাকে।
১১ নম্বর সেক্টরের উত্তরা স্মৃতি কেবল টিভি লিমিটেডের পাশে ৫ কাঠার একটি প্লট রয়েছে হারুনের। সেটি ভাড়া দেয়া হয় ‘স্টার কার সিলেকশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে।

১২ নম্বর সেক্টরের সোনারগাঁও জনপথ রোডের ২১ নম্বরে আছে ছয়তলা বাড়ি। এটি বন্ধক রেখে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নেন হারুন।

১৩ নম্বর সেক্টরেেআছে হারুনের তিনটি প্লট। শাহ মখদুম এভিনিউয়ে ১২ নম্বর প্লটটিতে তাজ ফুডকোর্টসহ কয়েকটি দোকান ভাড়া দেওয়া হয়। একই সেক্টরের সোনারগাঁও জনপথ রোডের ৭৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের প্লটটি ভাড়া দেওয়া। আর ৩ নম্বর রোডের ৪৯ নম্বর প্লটে হারুনের ছয়তলা ভবন রয়েছে।

হারুনের ১৪ নম্বর সেক্টরে আছে দুটি প্লট। ২০ নম্বর রোডের ১৭ ও ১৯ নম্বর প্লট ভাড়া দেওয়া আছে চারটি কোম্পানির শোরুম হিসেবে।

ফ্ল্যাট

১৩ নম্বর সেক্টর, জমজম টাওয়ারের পাশে, উত্তরা তৃতীয় পর্ব ও পূর্বাচলে কয়েক ডজন ফ্ল্যাট রয়েছে হারুনের- এমন সংবাদও জানা যাচ্ছে।

বনানী ও গাজীপুর

অভিযোগ আছে, বনানী কবরস্থানের পাশে ২০ কাঠার একটি প্লট দখল করে সেটি একটি কোম্পানির কাছে ৭০ কোটি টাকায় বিক্রি করেন হারুন।

টঙ্গীর সাতাইশ মৌজায় ৮ বিঘা জমিতে কোনো অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ করছেন জেএইচ-জিওটেক্স লিমিটেড’নামের একটি প্রতিষ্ঠান। টঙ্গীর গুশুলিয়া মৌজায় ছায়াকুঞ্জ-৫ আবাসিক প্রকল্পের ভেতরে ১২ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসিক হোটেল।

এই গাজীপুরে তার দায়িত্বকালে অসংখ্য মানুষকে হয়রানির অভিযোগ আছে হারুনের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন গ্রুপ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হয়ে জমি দখলে তিনি ভূমিকা রাখেন- এমন অভিযোগ আছে অনেক। এর মাধ্যমে কামান কোটি কোটি টাকা।

৩০ একরের প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট

কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে শত কোটি টাকার আলোচিত প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের মালিক হারুন অর রশীদ। তার ভাই ডাক্তার শাহরিয়ার এটি পরিচালনা করেন। ৩০ একর জমির ওপর গড়ে তোলা বিলাসবহুল এই রিসোর্ট নির্মাণে অনেক মানুষের জমি দখলের অভিযোগ আছে হারুনের বিরুদ্ধে।

গাজীপুরে সবুজ পাতা রিসোর্ট এবং গ্রিন টেক নামে দুটি বিলাসবহুল রিসোর্টের শেয়ার রয়েছে হারুনের। আমেরিকান ডেইরি নামে একটি কোম্পানির এমডি হারুনের স্ত্রী, যেখানে মূলত হারুন বিনিয়োগ করেছেন।

মানি এক্সচেঞ্জের আড়ালে টাকা পাচার!

বিদেশে অর্থ পাচারের সুবিধার জন্য হারুন গড়ে তোলেন নিজস্ব মানি এক্সচেঞ্জ। পুরানা পল্টনের আজাদ প্রোডাক্টসের গলিতে এর ঢাকার অফিস। এর শাখা আছে দুবাইয়ে। এই মানি এক্সচেঞ্জের আড়ালে হারুন টাকা পাচার করতেন, এমন অভিযোগ আসছে সংবাদমাধ্যমে। একজন পুলিশ কর্মকর্তার দুই ভাইকে দিয়ে ঢাকা ও দুবাইয়ের অফিস চালান হারুন।

পুলিশের সবচেয়ে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অন্যতম এই হারুন। তার বিরুদ্ধে সমাজের নানা শ্রেণির বিশেষ করে ধনিক মানুষকে নানাভাবে ফাঁদে ফেলে টাকা আদায়ের এন্তার গল্প শোনা যায়। একজন সরকারি চাকুরে হিসেবে তার এই অন্যায় ও বেপরোয়া আচরণে কখনো কখনো সরকার ও পুলিশকেও বিব্রত করেছে। আবার সরকারের অন্যায় সুবিধাও বেশি বেশি পেয়েছেন ডিএমপি ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদ।



আর্কাইভ

গণহত্যায় শহিদ পরিবার পাবে ৫ লাখ, আহতরা ১ লাখ টাকা
ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য দেওয়ার আহ্বান জাতিসংঘের
ত্রাণ তহবিলে টাকা ব্যাংকে কেন?
সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
ঢাকায় আসছে জাতিসংঘের তদন্তদল
ময়মনসিংহের সীমান্ত থেকে সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত আটক
দেশ পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকা ও ওয়াশিংটন অর্থনৈতিক সহযোগিতা থাকবে: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদল
সরকারের সঙ্গে ২০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের